আমিরুল ইসলাম কবিরঃ
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ভূমি হস্তান্তর কর (১%) বরাদ্দের জমা দেয়া সেই সাড়ে ১৮ লাখ টাকা আবারও ব্যাংক থেকে উত্তোলনের ঘটনা ঘটেছে। ৩নং দামোদরপুর ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগসাজসে টাকা জমার পরদিনেই পুুনরায় সমুদয় টাকা তুলে নেয়ায় অভিযোগে এবার ইউপি সচিব নুরজামান মিয়াকে শোকজ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এরআগে একই অভিযোগে চেয়ারম্যান এজেডএম সাজেদুল ইসলাম স্বাধীন শোকজ জবাবে বিষয়টি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। স্বাধীন সাদুল্লাপুর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদেও আছেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের গাইবান্ধার উপ পরিচালক (উপ-সচিব) মোছা. রোখছানা বেগম স্বাক্ষরিত (গত ১৯ অক্টোবর) এই কারণ দর্শানো নোটিশে তাকে সাত কার্য দিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত সচিব নুরজামান মিয়ার মুঠফোনে কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সূত্রে জানা যায়,ভূমি হস্তান্তর কর (১%) বাবদ সাড়ে ১৮ লাখ টাকা সরাসরি উত্তোলনের কথা স্বীকার করে শোকজের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ অক্টোবর লিখিত জবাব দেন ইউপি চেয়ারম্যান স্বাধীন। তবে গৃহীত প্রকল্পের তালিকা এবং বাস্তবায়ন সংক্রান্ত কোন প্রমাণাদি সংযুক্ত করা হয়নি শোকজ জবাবে। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ব্যাংক ষ্টেটমেন্ট পর্যালোচনায় ৩ অক্টোবর ওই সাড়ে ১৮ লাখ টাকা জমার পরদিন অথাৎ ৪ অক্টোবর দুটি চেকে পুনরায় ব্যাংক থেকে উত্তোলনের তথ্য পাওয়া যায়। এ থেকে প্রতিয়মান হয় যে,প্রকল্প বাস্তবায়ন না করেই চেয়ারম্যান ও সচিব উভয়ের যোগসাজসে সমুদয় টাকা উত্তোলন করেছে। ইউনিয়ন পরিষদ সচিব হিসেবে এই অর্থ ব্যয়করণ প্রযোজ্য নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ পূর্বক চেক প্রস্তুতের ব্যত্যয় ঘটেছে মর্মেও প্রতীয়মান হয়। এমন ব্যত্যয় ঘটানোর দায়ে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার ব্যাখা চেয়ে সচিবকে শোকজ নোটিশ করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এদিকে,গোপনে সাড়ে ১৮ লাখ টাকা তুলে আত্মসাত চেষ্টার ঘটনা ফাঁসের পর চেয়ারম্যান স্বাধীনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে ইউপি সদস্য ও দলের নেতাকর্মীরা। এরমধ্যে মুরাদ,নুরুন্নবী,খোরশেদ,রশিদুল ও নারী সদস্য মিনারা বেগম অভিযোগ করেন,চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই স্বাধীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছেন। সদস্যদের মতামত ছাড়াই তিনি একক সিন্ধান্তে অধিকাংশ প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে এলজিএসপিসহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে পরিষদ কার্যালয় দখল করে বছরের পর বছর ধরে পরিবার নিয়ে বসবাসের অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া অল্প সময়ে বাড়ি-গাড়ি, জমি ক্রয় ও ব্যাংক-বীমার জমা অর্থ ও সম্পদের মালিক হওয়ায় তাকে নিয়ে নানা গুঞ্জণ এখন স্থানীয়দের কানেমুখে। তার অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্ত করার পাশাপাশি সম্পদ অর্জনের উৎস খতিয়ে দেখতে দুদকসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট দাবি জানান এলাকাবাসী।