আজ থেকে ৩০ বছর ধরে কৃষি অধিদপ্তরের বিএস কোয়াটারগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে থাকতে দেখা গেছে। দিনের পর দিন পরে থাকার কারণে ঝাউ জঙ্গলে ভরে গেছে কোয়াটারের ভিতর এবং মাঠগুলো। সন্ধ্যার পরে স্থানীয় এবং দুর থেকে আসা উঠতি বয়েসের যুবকদের আড্ডাখানায় পরিনত হয়েছে কোয়াটারগুলো বলেন, ছাপড়হাটী ইউনিয়নের মরুয়াদহ গ্রামের গোলজার রহমান। তিনি বলেন, যুবকেরা নিরিবিলি এই পরিত্যক্ত কোয়াটারে বসে মোবাইল আড্ডাসহ ধুমপান করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। প্রতিবাদ করার কেউ নাই। যার কারণে সামাজিক পরিবেশ মারাত্বকভাবে দুষিত হচ্ছে। গোটা উপজেলায় যে সব বিএস কোয়াটার পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে সেগুলো সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানান তিনি।
একই কথা বলেন, উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যার পরে এলাকার যুবকরা পরিত্যক্ত বিএস কোয়াটারের ভিতরে বা মাঠে আড্ডা জমান। সেই সাথে মোবাইলে আসর বসিয়ে নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছেন। আশু এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি তার।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশ স্বাধীনের পর কৃষকদের পরামর্শ প্রদান এবং বীজ সংরক্ষণের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের জন্য বিএস কোয়াটার নির্মাণ করা হয়। উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টি ইউনিয়নের বিএস কোয়াটারগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। শুধুমাত্র দহবন্দ ইউনিয়নের বিএস কোয়াটারে একজন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা বসবাস করছেন। বাকীগুলো ব্যবহারের অযোগ্য।
উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেহেদী মোস্তফা মাসুম বলেন, তাঁর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বিএস কোয়াটারটি বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এর আগে স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান কোয়াটারটি ব্যবহার করে আসছিল। এখন এটি স্থানীয় যুবকদের আড্ডা খানায় পরিনত হয়েছে। কোয়াটারগুলো সংরক্ষণ করা একান্ত প্রয়োজন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে ভবনে মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের জন্য একটি করে রুম বরাদ্দ রয়েছে। উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাগণ ওই অফিসে বসে দাপ্তরিক কার্যক্রম করেন এবং কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
সুনিদিষ্ট অভিযোগ পেলে মাদক সেবনকারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেন, থানার ওসি মো. আব্দুল হাকিম আজাদ। তিনি বলেন, মাদক সেবনকারিগণ সমাজের ভাল মানুষের মধ্যে পরে না। তারা যেই হোক না কেন, অবশ্যই তাদের ব্যাপারে পুলিশের অবস্থান অত্যন্ত শক্ত।
সরকারি সম্পদ রক্ষণাবেক্ষনের জন্য সরকারি নিয়ম নীতি রয়েছে। যদি কোন দপ্তর সরকারি সম্পদ উদ্ধার করতে না পারে তাহল ভুমি অফিসে অবগত করালে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার ভুমি মো. মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, সরকারি পরিত্যক্ত ভবনে অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচলিত হলে সুনিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রাশিদুল কবির বলেন, দীর্ঘদিন সংস্কার, মেরামত ও সংরক্ষণের অভাবে বিএস কোয়াটারগুলো বর্তমানে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে মাঠ পর্যায়ের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকদের সেবা প্রদানের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। ব্যবহার এবং সংরক্ষণ না করলে যেটি হয়, বিএস কোয়াটারগুলোর ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা পেলে পরিত্যক্ত কোয়ারগুলোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. নাজির হোসেন বলেন, এ সংক্রান্ত কোন তথ্য তাঁর জানা ছিল না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে আলোচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।