শেরপুরে নিখোঁজের ৭দিন পর মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় সুমন মিয়া (১৭) নামে এক কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে সদর থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে জেলা শহরের সজবরখিলা এলাকার একটি বাড়ির উঠান থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
এঘটনায় সুমনের প্রেমিকা আন্নি আক্তার (১৯) ও তাঁর আরেক প্রেমিক রবিন (১৯) সহ তিনজন’কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নিহত সুমন শেরপুর জেলা শহরের কসবা বারাকপাড়া নিমতলা এলাকার কৃষক মো. নজরুল ইসলামের ছেলে এবং সে শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। আর আন্নি আক্তার শহরের বাগরাকসা কাজীবাড়ী পুকুরপাড় এলাকার শিক্ষক মো. আজিম উদ্দিনের মেয়ে। অন্যদিকে রবিন শহরের সজবরখিলা এলাকার মো. ফোরকান পুলিশের ছেলে। এ ঘটনায় আন্নির বাবা মো. আজিম উদ্দিনকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুমন মিয়া ও আন্নি আক্তার শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে একই সঙ্গে পড়াশোনা করত। সেই সুবাদে আন্নি আক্তার ও সুমনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তবে আন্নি পরবর্তীতে রবিন নামে আরেক ছেলের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আন্নি সুমনকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এদিকে গত ৪ নভেম্বর সোমবার বিয়ের কথা বলে সুমনকে ডেকে আনে আন্নি আক্তার। এরপর থেকে সুমনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সুমনের নিখোঁজের ঘটনায় থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি এবং পরে আন্নি ও তার বাবা আজিম উদ্দিন মাস্টারসহ কয়েকজনকে আসামি করে অপহরণ মামলা দায়ের করেন সুমনের বাবা নজরুল ইসলাম।
এদিকে পুলিশ ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি অভিযান চালিয়ে প্রথমে আন্নি ও তার বাবাকে গ্রেফতার করলেও সুমনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সোমবার রাতে ময়মনসিংহ থেকে প্রেমিক রবিনকে গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে সুমনকে মেরে শহরের সজবরখিলা এলাকায় তার বাড়ির উঠানে লাশ মাটিচাপা দিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে। পরে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পুলিশ তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে তার দেখানো জায়গায় মাটি খুঁড়ে সুমনের লাশ উদ্ধার করে।
এব্যাপারে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, পুরো ঘটনাটি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করেছে। মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে সুমনের সর্বশেষ অবস্থান ময়মনসিংহে পাওয়া গিয়েছিল। তারই সূত্র ধরে ময়মনসিংহ থেকে রবিনকে গ্রেফতারের পর তার দেখানোমতে মাটিচাপা অবস্থায় সুমনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রেমঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ইতিমধ্যে মূল তিনজন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। তদন্তে আরও কেউ জড়িত থাকার বিষয় উঠে এলে তাদেরও দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।