মো.মানিক মিয়া,লৌহজং:
পদ্মা নদীতে নাব্য সংকটের কারণে এক সপ্তাহ ধরে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে বিআইডব্লিউটিএ এবং সেতু কর্তৃপক্ষ ৮টি খনন যন্ত্র দিয়ে কাজ করেও ফেরি চলাচলের পথ সচল করতে পারেনি। তবে আগামী শুক্রবার থেকে ফেরি চলাচল শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগ।
ঘাট ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পদ্মা নদীতে নাব্য সংকট ও তীব্র স্রোতের কারণে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়। গত ২৯ আগস্ট এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। সে দিন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে ঘাট কর্তৃপক্ষ। গত ৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার তীব্র নাব্য সংকটে মাঝ পদ্মায় দুটি ফেরি আটকে যায়। এরপর থেকে দুর্ঘটনা এড়াতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ দিকে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে খনন করেও চ্যানেল সচল করতে পারেনি বিআইডব্লিউটিএ ও সেতু কর্তৃপক্ষ। এর ফলে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট এখন সুনসান। ঘাটে যেসব যানবাহন ছিল সেগুলো ফিরে গেছে। ১৬টি ফেরির মধ্যে পাটুরিয়া ঘাটে তিনটি ফেরি পাঠানো হয়েছে। ১৩টি ফেরি এখনও শিমুলিয়া ও কাঁঠালবাড়ি ঘাটে অলস পড়ে আছে।
শিমুলিয়া ঘাটের ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) মো. হিলাল উদ্দিন “চ্যানেল ২৩”কে বলেন, ঘাটে এখন আর কোনো যানবাহন পারাপারের জন্য আসে না। যে সব যানবাহন ছিল, সেগুলোও অধিকাংশ চলে গেছে। বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৪২টি ট্রাক ও তিনটি ছোট গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় আছে। তবে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল স্বাভাবিক আছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাফায়াত আহমেদ বলেন, ঘাটের এমন অচলাবস্থা এর আগে কখনও ছিল না। ঘাটে এখন সুনসান- নীরবতা। তিনি জানান, বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএ এবং সেতু কর্তৃপক্ষ তাদের নিজ নিজ স্থান থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএর নির্দেশনা পেলেই ফেরি চালানো শুরু হবে। তবে কবে নাগাদ চলতে পারবে এটা খনন কাজে যারা আছেন, তারাই ভালো বলতে পারবেন।
চ্যানেল খননের বিষয়ে জানতে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের অতিরিক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান গতকাল বুধবার বিকেলে জানান, তাদের লক্ষ্য ছিল- ১৫০ ফুট চওড়া ও ১ কিলোমিটার দীর্ঘ অংশ খনন করা। ৭টি খনন যন্ত্র ব্যবহার করে গত রোববার সে কাজ সম্পন্ন করেছেন। সেতু কর্তৃপক্ষ তাদের অংশের ৫০০ মিটার খনন করে দেওয়ার কথা ছিল। প্রচণ্ড স্রোত, স্রোতের সাথে ময়লা আবর্জনার স্তূপ ভেসে আসা এবং মেশিন স্বল্পতার কারণে সেতু কর্তৃপক্ষ খনন কাজ শেষ করতে পারেনি। বিআইডব্লিউটিএ তাদের তিনটি মেশিন দিয়ে সেতু কর্তৃপক্ষকে খননে সহযোগিতা করছে। এই কর্মকর্তা আশা প্রকাশ করেন- আগামীকাল শুক্রবার থেকে এ নৌপথে আবারও ফেরি চলাচল শুরু হতে পারে। #