রূপগঞ্জ প্রতিনিধি:
রূপগঞ্জে নৌ-পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি বহু অপকর্মের মূল হোতা ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী আকবর বাদশা (৩৫) র্যাব-১১ ও নৌ-পুলিশের হাতে গ্রেফতার। গতকাল রোববার দুপুরে ধৃত সন্ত্রাসী আকবর বাদশাকে তারাব পৌরসভার বাঁশপট্টি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে র্যাব সন্ত্রাসী বাদশাকে নৌ-পুলিশের কাছে হস্থান্তর করে। র্যাবের মিডিয়া অফিসার লে: কমান্ডার মাহমুদুল হাসান জানান, গ্রেফতারকৃত সন্ত্রাসী আকবর বাদশা তারাব পৌরসভার বাঁশপট্টি এলাকার আব্দুল বারেক মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে, সে এলাকায় ভূমিদস্যুতা, মাদক ব্যবসা ও জুয়াড়িদের সরদার হিসেবে পরিচিত। নৌ-পুলিশের উপর হামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডেমরা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মো: মিন্টু মোল্লা। মামলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের গত ২৭’ফেব্রুয়ারী বিকেলে ডেমরা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রহমত উল্লাহ নেতৃত্বে নৌ-পুলিশের একটি দল শীতলক্ষ্যা নদীতে চোরাই তেলবাহী ট্রলার ও নৌকাসহ বিভিন্ন নৌযানে অভিযান পারিচালনা করছিলেন। এমন সময় খবর পায় যে, সুলতানা কামাল সেতুর পূর্বপাশে বাঁশপট্টি থেকে আনুমানিক দুইশগজ দক্ষিণে নদীর তীরে জুয়া খেলার আসর বসেছে। খবরের সত্যতা নিশ্চিত হয়ে নৌ-পুলিশ ওই জুয়াড় আসরে হানা দেয়। তখন নৌ-পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জুয়াড়িরা পালিয়ে যায়। এসময় উপ-পরিদর্শক মো. আফিজুর রহমান জুয়া খেলার আলামত জব্দ করার সময় জুয়াড়িরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে নৌ-পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা নৌ-পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রহমত উল্লাহকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধাঁরালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে আহত ইন্সপেক্টর রহমত উল্লাহকে উদ্ধার করে ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ হামলার ঘটনায় ডেমরা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে সন্ত্রাসী ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়াড়িদের সরদার আকবর বাদশাকে প্রধান আসামী করে ৯’জনকে এজহারনামীয় আসামী করে ও ৩০ /৪০’জনকে অজ্ঞাত আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর- ৪৮। মামলার অন্য আসামিরা হলো- মো. আলামিন (৩২), সোহেল (৩০), আজমত আলি (২৫), মো. আব্দুল মালেক (৩৫), আব্দুর রহিম (৩৫), মিজানুর রহমান (২৪), জাকির হোসেন (৪০) ও ইয়াছিন (৩৮)। মামলার পর থেকেই সন্ত্রাসী আকবর বাদশা পলাতক ছিল। গতকাল রোবার গোপন সংবাদের ভিক্তিতে র্যাব-১১ ও নৌ-পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী বাদশাকে গ্রেফতার করে। ডেমরা নৌ-পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. মিন্টু মোল্লা জানান, সন্ত্রাসী আকবর বাদশা একজন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী এলাকায় তার একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। এ বাহিনী মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করছে বীরদর্পে। তাছাড়া সন্ত্রাসী আকবর বাদশার নেতৃত্বে সুলতানা কামাল সেতুর দক্ষিণ পাশে বাঁশপট্টি এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে দীর্ঘদিন ধরে জুয়ার আসার চলে আসছে। এ আসরে দৈনিক লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হয়। এলাকার সকল অপকর্মই পরিচালিত হচ্ছে সন্ত্রাসী আকবর বাদশার নেতৃত্বে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ত্রাসী আকবর বাদশা গত বছর তারাব পৌরসভার ৮’নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে। তার প্রতীক ছিল ডালিম। নির্বাচনের পর থেকেই সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। গড়ে তুলে সন্ত্রাসী বাহিনী। এ বাহিনীর অন্যায় অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। কিন্তু সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেহ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী আকবর বাদশা গ্রেফতারের খবরে এলাকায় স্বস্থি ফিরে এসেছে। এলাকাবাসী তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।