এমএ আলীম সরকার♦♦
বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির আহ্বায়ক এম এ আলীম সরকার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী আমাদের মুক্তিবাহিনী ও তাঁর সহযোগী ভারতীয় বাহিনীর যুক্ত কমান্ডের নিকট আত্মসমর্পণ করে। বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠান নানা রকম অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করে। বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি চায় এই দিনে অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তর এর গণঅভ্যুত্থান ইত্যাদির তাৎপর্যময় আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় চেতনা বিকশিত ও শক্তিশালী হোক। ১৯৭০ সালের জাতীয় সংসদ এবং প্রাদেশিক সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর পরিচালনায় আওয়ামী লীগ বিরাট সাফল্য অর্জন করে। আওয়ামী লীগের এই সাফল্য দেখে ক্ষমতাসীন সেনা শাসক ইয়াহিয়া খান ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো নানাভাবে জাতীয় সংসদ অধিবেশন ডাকার বিরোধিতা করতে থাকে। পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিবিদেরা ধারণা করেন যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসতে পারলে পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদের বিরোধী বাঙালি জাতীয়তাবাদী শক্তি পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান, সামরিক বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের জেনারেলরা এবং পশ্চিম পাকিস্তানের প্রায় সকল নেতা জাতীয় সংসদের অধিবেশনের বিরোধিতা করতে থাকেন। অবস্থার চাপে ইয়াহিয়া খান জাতীয় সংসদের অধিবেশন আহ্বান করেন। ভুট্টো তখন বলেন, এই অধিবেশন বসলে জাতীয় সংসদ পরিণত হবে কসাইখানায়। সেই অবস্থায় ইয়াহিয়া খান জাতীয় সংসদের অধিবেশন স্থগিত রাখেন। ঘোষিত তারিখে জাতীয় সংসদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। সেই উত্তপ্ত পরিবেশে শেখ মুজিবের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য ঢাকায় আসেন। তার আগে রাজনীতির অবস্থা বর্ণনা করলে আমাদের করণীয় সম্পর্কে আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত ৭ই মার্চের জনসভায় বক্তৃতা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মাত্র ১৮ মিনিটের এই বক্তৃতায় তিনি তখনকার রাজনীতির জন্য প্রয়োজনীয় বক্তব্য দেশ ও বাঙালী জাতির জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা বলিষ্ঠ কণ্ঠে সুন্দরভাবে ব্যক্ত করেন। এরপর ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে ঢাকায় আসেন। আরো দুই তিনজন জেনারেল ও পিপলস পার্টির সভাপতি ভুট্টো আসেন। সে অবস্থায় শেখ মুজিব, তাজউদ্দীন আহমদ প্রমুখের সঙ্গে ইয়াহিয়া খান, ভুট্টো ও তার সহযোগীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে ছয় দফার ভিত্তিতে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনার বক্তব্য লিখিতভাবে জানিয়ে দেয়া হয় । এর ভিত্তিতে কোন বক্তব্য না দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন নেতৃবৃন্দ ২৫ শে মার্চ দিবাগত সন্ধ্যায় বিশেষ বিমানে ইসলামাবাদে চলে যান। আওয়ামী লীগের নেতারা এবং অন্যান্য দলের নেতারাও জেনে যান যে ঢাকায় সামরিক অভিযান চালানো হবে। যাতে অনেক মানুষের প্রাণ যাবে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ২৫ শে মার্চ দিবাগত কালোরাতে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরিহ ঘুমন্ত বাঙালী জাতির উপর ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞ চালায়। এই সামরিক অভিযানের ঐ অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করার জন্য, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি নিজ ভবনে থেকে যান এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে ইসলামাবাদে নিয়ে যান।
তখন তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম ভারতে গিয়ে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে পরামর্শ করে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাজউদ্দিনের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধাকালীন সরকার গঠন ও মুক্তিবাহিনী গঠন অত্যন্ত কঠিন কাজ ছিল। সেই কঠিন কাজটি তাজউদ্দীন আহমদ সম্ভবপর করেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সরকার তাজউদ্দীন সরকারকে সমর্থন দেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কাজে যথাসম্ভব সহায়তা দেন। বাংলাদেশের মুক্তি বাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীকে যুক্ত করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল অরোরার নেতৃত্বে জয়েন্ট কমান্ড গঠন করা হয়। জয়েন্ট কমান্ডের নেতৃত্বে এবং তাজউদ্দীন আহমদের সরকারি কার্যক্রমের মধ্যে যে অবস্থা সৃষ্টি হয় তাতে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী মনোবল হারিয়ে ফেলে এবং আত্মসমর্পণে রাজি হয়। বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি এইসব ঘটনাবলীকে সামনে রেখে মহান বিজয় দিবস উদযাপন ও মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগামী প্রজন্মকে দেশ ও জাতির কল্যাণে গড়ে তোলার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে । বাংলাদেশ আজ গভীর রাজনৈতিক সংকটে আছে। এই সংকট থেকে উদ্ধার লাভের জন্য নতুন প্রতিজ্ঞা নিয়ে সামনে চলার সংকল্প গ্রহণ করা হোক। মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। সমৃদ্ধ ও শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশসহ বিশ্বমানবতার কল্যাণে বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির অগ্রযাত্রায় দেশবাসীকে শামীল হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানাই।
তখন তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম ভারতে গিয়ে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে পরামর্শ করে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাজউদ্দিনের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধাকালীন সরকার গঠন ও মুক্তিবাহিনী গঠন অত্যন্ত কঠিন কাজ ছিল। সেই কঠিন কাজটি তাজউদ্দীন আহমদ সম্ভবপর করেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সরকার তাজউদ্দীন সরকারকে সমর্থন দেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কাজে যথাসম্ভব সহায়তা দেন। বাংলাদেশের মুক্তি বাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীকে যুক্ত করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল অরোরার নেতৃত্বে জয়েন্ট কমান্ড গঠন করা হয়। জয়েন্ট কমান্ডের নেতৃত্বে এবং তাজউদ্দীন আহমদের সরকারি কার্যক্রমের মধ্যে যে অবস্থা সৃষ্টি হয় তাতে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী মনোবল হারিয়ে ফেলে এবং আত্মসমর্পণে রাজি হয়। বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি এইসব ঘটনাবলীকে সামনে রেখে মহান বিজয় দিবস উদযাপন ও মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগামী প্রজন্মকে দেশ ও জাতির কল্যাণে গড়ে তোলার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে । বাংলাদেশ আজ গভীর রাজনৈতিক সংকটে আছে। এই সংকট থেকে উদ্ধার লাভের জন্য নতুন প্রতিজ্ঞা নিয়ে সামনে চলার সংকল্প গ্রহণ করা হোক। মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। সমৃদ্ধ ও শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশসহ বিশ্বমানবতার কল্যাণে বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির অগ্রযাত্রায় দেশবাসীকে শামীল হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানাই।
Tags: যথাযোগ্য