অনলাইন ডেস্ক:
জরিপ ও প্রতিবেদনের হিসাব অনুযায়ী প্রাথমিক পর্যায়ে দেশে সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেলেও বছরের মাঝামাঝি থেকে বিয়ের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
কোভিড-১৯ এর কারণে থমকে গেছে গোটা বিশ্ব। পরিবর্তন ঘটেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়। কিন্তু তারপরও থেমে নেই বিয়ে। করোনার এমন ভয়াল পরিস্থিতিতে আমরা প্রায়শই নিত্য নতুন বিয়ের সংবাদ পাই। তবে এটাই স্বাভাবিক। করোনার এই সময়টায় কেন থমকে রইবে শানাই? তবে স্বাস্থ্যবিধিকে তোয়াক্কা না করাটাই হয়েছে ক্ষতির কারণ।
বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যার মাধ্যমে দুই পরিবারের লোকজন একত্রিত হয়। কিন্তু করোনা মহামারির মত সময়ও আটকে নেই বিয়ের মত সামাজিক অনুষ্ঠান। গাঁটছড়া বাঁধতে ব্যস্ত অনেকে। অথচ এই করোনা থেকে মুক্তির জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং বিভিন্ন পত্রিকায় অনেক তারকাদের বিয়ের সংবাদও মিলেছে। প্রায়শই মেলেনি স্বাস্থ্যবিধির বালাই। কোভিড ১৯ এর শুরুতে যে বিয়েগুলো আটকে ছিল পরে সেই বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো হয়েছে বেশ রমরমা।
করোনার কারণে সকল ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করার ফলে বেশিরভাগ মানুষ ছিল ছুটিতে। এই ছুটির সময়টায় তারা আয়োজন করে বিয়ের। করোনা মহামারিতে সব ধরনের জমায়েত এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্ক পরিধান। এদিকে বর-কনেকে নকশা করা মাস্ক পরিধান করতে দেখা গেছে। যা বেশ প্রশংসনীয়।
জরিপ ও প্রতিবেদনের হিসাব অনুযায়ী প্রাথমিক পর্যায়ে দেশে সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেলেও বছরের মাঝামাঝি থেকে বিয়ের সংখ্যা বাড়তে থাকে। আবার এই করোনার সময়টাতে অনেকেই স্বল্প খরচে সেরে নিয়েছেন পবিত্র কাজটি। এতে সামাজিকভাবে হেয় না হয়েই সেরে ফেলতে পারছেন বিয়ের কাজটা।
এমনকি করোনার এই সময়টাতে ভিডিও কনফারেন্সেও হচ্ছে বিয়ে। সকল ধরনের রীতি মেনে ভিডিও কনফারেন্সে বিয়ের অনেক দৃষ্টান্ত মিলেছে। এতে খরচ কম হয় বিধায় দুই পরিবারই খুশি। আবার অনেকে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিয়ে করছেন।
করোনা কালেই গত আগস্টে প্রেমিকা মিহিকা বাজাজের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন ‘বাহুবলী’-র বল্লালদেব খ্যাত দক্ষিণী অভিনেতা রানা দাগ্গুবতি। দুই পরিবার একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি সম্পূর্ণ হয়। তারপর ফের শিরোনামে আসলেন সানা খান। গুজরাটের এক মুফতি আলেমকে বিয়ে করেন এই অভিনেত্রী। ভারতের ই-টাইমস টিভিতে তাদের বিয়ের একটি ভিডিও প্রকাশ হয়েছিল। সেখানে এই দম্পতিকে খুব হাস্যজ্জ্বলভাবে দেখা গিয়েছে। এছাড়াও দেশে অভিনেত্রী শমী কায়সার, নুসরাত ফারিহা; সংগীত শিল্পী অর্ণব, কর্নিয়া বিয়ের কাজটা সেরেছেন।
ধনী পরিবারের বিয়েতেই লক্ষণীয় কনভেনশন সেন্টারে বিপুল সংখ্যক অতিথি ও আত্মীয়-স্বজনকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিয়ের সম্পূর্ণ করছেন। অনেকের মতে, করোনার কারণে তারিখ পেছানো হলে এই বিয়ে কবে নাগাদ হতে পারে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। এইজন্যই এই পরিস্থিতিতেই বিয়ে।
উপরের ঘটনাগুলোতে দেখা গিয়েছে অভিনেতা – অভিনেত্রী থেকে শুরু করে প্রায় সকলে করোনার মধ্যেও নিজেদের বিয়ের কাজ সেরে ফেলেছেন। এতে কোন অন্যায় নেই। তবে জীবনের সুন্দর একটি অধ্যায়ের শুরুতে সকলকে বিপদে ফেলা হচ্ছে কি না এ নিয়ে ভাবা জরুরি।
বিয়ে নিয়ে বিভিন্ন জনের ভিন্ন ভিন্ন পরিকল্পনা থাকলেও কোভিড-১৯ এর কারণে এসব বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্য বিধি মেনে সকল ধরনের আয়োজন করছে বর-কনের পরিবার। এরই মধ্যে চলে এসেছে শীত। শীতে করোনার প্রকোপ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু তারপরও অনেকে বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন। বিয়ে হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে মনে রাখা জরুরি এই সুন্দর উপলক্ষটা যেনো পরিবার এবং দেশের জন্য ক্ষতি ডেকে না আনে।
[অনন্যা]