নিজস্ব প্রতিবেদক।।
আসন্ন বাজেটে কৃষিখাতে বিশেষ বরাদ্দসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছে জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্ত আন্দোলন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২ জুন) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা ও সমন্বয়ক মো. মহসীন ভুইয়া এ দাবি জানান।
তারা বলেন, সরকার প্রতিবছর বলে বাজেটে বেসরকারি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। কৃষিখাত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি খাত। অথচ প্রতিবছর বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ কমানো হয়। এ খাতের টাকা নিয়ে অন্য খাতে ব্যয় করা হয়। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের অর্ধেকের বেশি মধ্যস্বত্বভোগীর পকেটে চলে যাচ্ছে। কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে কৃষিখাতে বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ, বিদ্যুৎসহ সব কৃষি উপকরণের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সার, বীজ, কীটনাশকে ভেজাল দিয়ে মুনাফা লুটছে। কৃষক লাভ তো দূরের কথা, ফসলের উৎপাদন খরচও তুলতে পারছে না। ফলে জমি হারিয়ে ভূমিহীন ও মাঝারি কৃষক গরিব কৃষকে পরিণত হচ্ছে। খরা, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হয়ে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে কৃষককে রক্ষা করতে হবে।
বিবৃতিতে তারা (১) সার, বীজ, কীটনাশক, বিদ্যুৎ, সেচসহ কৃষি উপকরণের দাম কমাতে হবে। (২) উৎপাদন খরচের সঙ্গে ৫০ শতাংশ যুক্ত করে কৃষি ফসলের লাভজনক দাম নিশ্চিত করতে হবে। (৩) ধান, ভুট্টা, আলুসহ সকল কৃষি ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত, সরকারি উদ্যোগে ক্রয় কেন্দ্র খোলা, ইউনিয়নে খাদ্য গুদাম, জেলায় হিমাগার নির্মাণ করতে হবে। (৪) সহজ শর্তে সুদমুক্ত কৃষিঋণ প্রদান ও ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণে সুদ মওকুফ করতে হবে একই সাথে কৃষকদের কৃষি ঋণ মওকুফ, সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার, বিনাসুদে সহজ শর্তে ঋণ দান, এনজিও মহাজনি ঋণের অমানবিক শোষণ জুলুম আইন করে নিষিদ্ধ, কিস্তির হয়রানি বন্ধ করতে হবে। (৫) ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক ভাতা, কর্মসৃজন প্রকল্পসহ সামাজিক নিরাপত্তার গ্রামীণ প্রকল্পে ঘুষ, দুর্নীতি, দলীয়করণ বন্ধ করে প্রকল্প বরাদ্দ ও উপকারভোগীদের সংখ্যা বাড়াতে হবে। (৬) বন্ধ পাটকল, চিনিকল চালু করা এবং কৃষিভিত্তিক নতুন শিল্প-কারখানা নির্মাণ করতে হবে। (৭) সব শ্রমজীবী, স্বল্প আয়ের মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এই ৭ দফা দাবী উত্থাপন করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা ও ভোক্তার স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে বাজেটে কৃষিখাতে বরাদ্দ বাড়ানো উচিত। পাশাপাশি খাদ্যশস্য, সবজি সংরক্ষণ উপযোগী হিমাগার ও খাদ্য গুদাম নির্মাণের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রেখে কৃষকের প্রত্যাশা সরকার পূরণ করবে, এটাই সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্খা।