নরসিংদী প্রতিনিধি:
নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের ঘোড়াদিয়া এলাকায় রোববার গভীর রাতে একটি পরিবারে ১৩ মাস বয়সী এক শিশু ছেলেসহ স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেছে স্বামী। এমন অভিযোগে স্থানীয় লোকজন স্বামী ফখরুল মিয়াকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। নিহতরা হলেন- রেশমী আক্তার (২৬) এবং তার ১৩ মাস বয়সী শিশু ছেলে সালমান সাফায়াত। রেশমী নরসিংদী পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকার পারভেজ মিয়ার মেয়ে। জানা গেছে, প্রায় বছর দুয়েক আগে পারিবারিকভাবে পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকার পারভেজ মিয়ার মেয়ে রেশমীর সঙ্গে ঘোড়াদিয়া সঙ্গীতা এলাকার মো: সাইফুল্লার ছেলে ফখরুল মিয়ার সংগে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন রেশমীর উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালাতেন। এরই মধ্যে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সবশেষ গত রোববার রাত ২টার দিকে রেশমী ও তার শিশুকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। তবে এলাকাবাসী বলছেন, তাদের মধ্যে স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহ নিয়ে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হতো। আর এরই জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ফখরুলের বাবা সাইফুল্লাহ বলেন, রবিবার রাত ১২টায় ফখরুল বাহির থেকে বাসায় আসে। পরে রাত ২টায় ফখরুলের বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনতে পাই। কিছুক্ষণ পরে আমরা রুমে গিয়ে রেশমী ও তার ছেলে সালমানকে বিছানায় গলাকাটা অবস্থায় দেখতে পাই। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ফখরুল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে তার বড় ভাই ধাওয়া দিয়ে তাকে ধরে বাড়িতে নিয়ে আসে এবং পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। নিহতের বাবা পারভেজ মিয়া বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েটাকে মানসিক ও শারীরিক ভারে নির্যাতন করতো। আমরা কষ্ট পাবো ভেবে আমার মেয়ে আমাদেরকে কিছুই বলত না। তিনি আরও জানান, ফখরুল মাদকাসক্ত ছিল। কিন্তু আমরা জানতাম না। এসব তথ্য আমাদের কাছ থেকে গোপন রেখে বিয়ে করেছিল। এখন আমি আমার মেয়ে ও নাতি হত্যার বিচার চাই। নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সওগাতুল আলম বলেন, নিহত রেশমীর পরকীয়া সম্পর্ক ছিল এমন বিষয় নিয়ে তার স্বামী তাকে সন্দেহ করতো। এরই জের ধরে স্বামী ফকরুল মিয়া তার স্ত্রী ও সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করে।