নিজস্ব প্রতিবেদক:
ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, উন্মত্ততার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মন্তব্য করেছে কিছু উন্মত্ত মানুষ, সম্মিলিত হয়ে একজন মানুষকে দোষী সাব্যস্ত করে সমবেত ভাবে হত্যা করে পুড়িয়ে ফেললো এটা কোন সভ্য সমাজে মেনে নেয়া যায় না। এভাবে গণপিটুনিতে যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগই প্রমানিত নয়।
শনিবার (৩১ অক্টোবর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, সমাজের কিছু দুষ্টু মানুষ সাধারণ মানুষকে ক্ষেপিয়ে দিয়ে এ ধরনের হত্যাকান্ড ঘটিয়ে থাকে। জনতাকে এমন উন্মত্ত যারা করে তাদের বিচার হয় না, ফলে তারা সমাজে বহাল তবিয়তে রয়ে যায়। তাদেরকেই বিচারের আওতায় আনা উচিত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গণপিটুনির শিকার হন দুর্বল, অসহায় মানুষ। তাদের মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীন, নারী, শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধীই বেশি। লালমনিরহাটের হত্যাকান্ডের শিকার কিছুটা হতাশ ও মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণীর উম্মত্ত সমাজে অস্থিরতা জিইয়ে রাখতে চায় নিজেদের ফায়দার জন্য। ধর্মকে সামনে রেখে যারা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন করে তারা সুযোগ নিতে চায় পরিস্থিতির। গুজব, কুসংস্কারের কারণেই অনেকেই বুঝতের পারেনা যে কি করছে তারা।
ন্যাপ নেতৃদ্বয় বলেন, গুজব ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করে ও সেই আতঙ্ক থেকেই গণপিটুনির ঘটনাগুলি ঘটে। ছেলেধরা গুজবে বহু মানুষের প্রাণ গিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কারণেও গণপিটুনির শিকার হয়েছেন অনেকে। সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া ও পিটিয়ে হত্যা করা এক ভয়ংকর অপরাধ। ধর্ম রক্ষার জন্য গণপিটুনি ঘটলে বিচারের পথও রুদ্ধ হয়ে যায়।
তারা বলেন, একজন মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নেওয়ার অধিকার কাউকে দেয়নি রাষ্ট্র, তারা যত বড় আর ক্ষমতাধরই হোন না কেন। হত্যা হত্যাই, ফৌজদারি অপরাধ। এক জন মারলেও হত্যা, দশ জন মিলে মারলেও হত্যা। এই ফৌজদারি অপরাধকে হাল্কা করে দেখার অবকাশ নেই যত স্পর্শকাতরই হোক না কেন।
নেতৃদ্বয় বলেন, এই সকল নৃশংস আচরণ আর বরদাশত করা যায় না। সংক্রামক হওয়ার আগেই ঠেকাতে হবে এই ব্যাধি, অন্যথায় এই ব্যাধি ক্যান্সারে রুপান্তরিত হলে সমাজ-রাষ্ট্র সব ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যাবে। আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কোন ব্যক্তির নেই, কোন গোষ্ঠীরও নেই। নির্লিপ্ত হয়ে বসে থাকার দিন শেষ। গণপিটুনির বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ যেমন প্রয়োজন, তেমনি দরকার গুজবের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরি করা এবং গণপিটুনিতে অংশগ্রহণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।