শেরপুর প্রতিনিধিঃ
শেরপুরের ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের দিঘিরপাড় ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক রফিকুল ইসলামের ভাই নুরনবি তার দলবল নিয়ে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে প্রবেশ করে মাদ্রাসার হিসাব সহকারী শহিদুল ইসলামের উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে দিঘিরপাড় ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় ঘটনাটি ঘটে।
আহত শহিদুল ইসলাম কে মাদ্রাসার শিক্ষক ও স্থানীয়রা ঝিনাইগাতী সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।
নির্যাতিত শহিদুল ইসলাম (৩৫) বলেন, ঘটনার দিন সকালে মাদ্রাসার কিছু শিক্ষার্থী তাকে বলে কয়েকটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক নেই। তখন বিষয়টি নিয়ে আরবি প্রভাষক রফিকুল ইসলামের সাথে আলোচনা করতে গেলে আরবি প্রভাষক রফিকুল ইসলাম রাগান্বিত হয়ে বলেন, এই বিষয়ে তুমি বলার কে। তখন দুইজনের মাঝে কথা কাটাকাটি হলে আরবি প্রভাষক রফিকুল ইসলাম বাইরে গিয়ে তার ভাই নুরনবি সহ প্রায় ২০-২৫ জন লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক অফিস কক্ষে প্রবেশ করে আমাকে অতর্কিত ভাবে হামলা করে বেধড়ক ভাবে অফিসের কেচি,স্টেপালার,স্টিলের স্কেল,বেত এমনকি কিল ঘুষি লাথি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের মাইরের আঘাতে আমার মাথা ফেটে যায় এবং আমি বেহুশ হয়ে পরি। তখন তারা আলিমে ভর্তির আদায় কৃত ও অফিসের অন্যান্য টাকা সহ প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা লুটপাট করে।
এছাড়াও আমাকে ফাঁসানোর জন্য মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মার্কশিট ও ভর্তি কৃত কিছু কাগজ পত্র তারা লুটপাট করে নিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন শ্রেণি কক্ষের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা দৌড়ে আসলে হামলা কারীরা অফিস থেকে চলে যায়।
তারপর আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে আমার মাথায় চারটি সেলাই দেন এবং আমি হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় রয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আরবি প্রভাষক রফিকুল ইসলাম সহ যারা আমাকে হামলা করে আহত ও লুটপাট করেছেন তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠ বিচার চাই।
আরবি প্রভাষক রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, হিসাব সহকারী শহিদুল ইসলাম নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপবৃত্তি, ভর্তি বা অন্যান্য বিষয় নিয়ে মাঝে মধ্যেই ঝামেলাই লিপ্ত হয়। ঘটনার দিন সকালে আমাদের মাদ্রাসার একজন শিক্ষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে তখন আমি এর প্রতিবাদ করলে শহিদুল ইসলাম আমাকে তার পায়ের জুতা দিয়ে মারতে আসেন এবং আমাকে এলাকার লোকজন দিয়ে মারধর করবে বলে ভয় দেখান।
তখন শহিদুল ইসলাম উচ্চকণ্ঠে কথা বললে, বাইরে থেকে আমার ভাতিজা এই মাদ্রাসারী ছাত্র দৌড়ে আসে এবং শহিদুলের সাথে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কা ধাক্কি শুরু করে। তখন শহিদুল ইসলাম আলমারির সঙ্গে ধাক্কা খায় এবং পড়ে গিয়ে তার মাথা ফেটে যায়। ঘটনার সময় কোনো প্রকার লুটপাট হয়নি এবং সেখানে দুই জন ছাড়া আর কেউ ছিলনা।
আরবি প্রভাষক রবিউল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আসলেই দুঃখজনক। এটা আমি কখনোই আশা করিনি।
এই বিষয়ে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওবায়দুল ইসলামের সাথে কথা বললে, তিনি বলেন তখন আমি মাদ্রাসার কাজে বাইরে ছিলাম। ঘটনার কথা জানতে পেরে আমি সঙ্গে সঙ্গে মাদ্রাসায় যাই এবং শহিদুল ইসলামকে নিয়ে হাসপাতালে আসি। ঘটনাটি কি এ সম্পর্কে আমি বিস্তারিত জানিনা, তারপরও এ বিষয়টি সাথে সাথেই মাদ্রাসার সভাপতি কে জানাই। শহিদুল ইসলাম সুস্থ হলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সমাধান করব ইনশাআল্লাহ।
শহিদুল ইসলামের স্ত্রী হালিমা খাতুন (২৭) ঘটনার দিন দুপুরে বাদী হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী থানার এস আই হাসিবুল হাসানের সঙ্গে কথা বললে, তিনি বলেন বিষয়টি দ্রুত গতিতে তদন্ত করে আসামিদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Tags: দিঘিরপাড়