শেখ সাখাওয়াত হোসেন,পাবনা।।
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় পানি সংকটের কারণে পাট জাগ দিতে পারছে না কৃষক। অনেক স্থানে জমিতেই পাট রোদে পুড়ে লালচে হয়ে যাচ্ছে। অনেক কৃষক পাট কেটে অপরিষ্কার পানিতে জাগ দিচ্ছেন। এতে পাটের আঁশের রং কালচে হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মার্চের শেষে পাটের বীজ বপন করা হয়। পাট কাটা শুরু হয় জুনের শেষে। সাধারণত জুন মাসের শেষের দিকে খাল, বিল ও নালা বৃষ্টির পানিতে ভরে যায়। কিন্তু এবার বৃষ্টিপাত কম।
খাল, বিল ও নদ-নদীতে পানি কম। এ কারণে পাট জাগ দিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পাট জাগ দিতে প্রায় চার–পাঁচ হাত গভীর পানির প্রয়োজন হয়। পাট জাগ দিতে নসিমন বা ভ্যানে করে নিয়ে যেতে হচ্ছে কয়েক কিলোমিটার দূরে। এতে সময় ও খরচ বেশি হচ্ছে।
শনিবার (১৩ আগস্ট) সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার দাশুড়িয়া, মুলাডুলি, লক্ষ্মীকুণ্ডা, সাহাপুর ইউনিয়নে খাল, বিল, ডোবা এবং জলাশয়ের কিছু কিছু অংশে হাঁটুপানি রয়েছে। তবে যেটুকু পানি আছে তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ট নয়। গত কয়েক দিনের তীব্র রোদে জন্য পানি শুকিয়ে গেছে। পাট কেটে সড়কের ওপর স্তূপ করে রাখা হয়েছে। পাটের গোড়ার দিকে আধা হাত পরিমাণ কালচে রং ধরেছে।
উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের কালামপুর পূর্ব পাড়া গ্রামের কৃষক সেলিম সরকার (৪০) বলেন, তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। চার বিঘা জমির পাট কেটেছেন ১০-১৫ দিন আগে। অপেক্ষায় ছিলেন বৃষ্টির জন্য। বৃষ্টি না হওয়ায় পরে বাধ্য হয়ে জমির পাট কেটে ফেলছেন। দেরিতে পাট কাটায় পাতা পুড়ে গেছে। আঁশের রং কালচে হয়ে যাবে। এতে পাটের ভালো দাম পাওয়া যাবে না।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার বলেন, ঈশ্বরদী উপজেলায় চলতি অর্থবছরে পাটের আবাদ হয়েছে ৩৮০ হেক্টর জমিতে। ‘পাট জাগ দেওয়া নিয়ে উপজেলার কৃষকরা বিপদে আছেন। বৃষ্টি নেই, নিচু জমিতেও পানি নেই। জমিতে পাট মরে যাচ্ছে। পাট নিয়ে লোকসানের মুখে রয়েছেন কৃষকরা। উপজেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ শতাংশ পাট কাটা হয়েছে। আরও ৫০ শতাংশ পাট কাটার পক্রিয়া চলছে।’
পাট অধিদপ্তরের পাবনা কার্যালয়ের মূখ্য পরিদর্শক হাজ্জাজুর রশীদ বলেন, ‘পাট সহজে পচানোর জন্য ‘রিবন রেটিং পদ্ধতি’ চালু করা হয়েছিল। এ পদ্ধতিকে পাট কাটার পর ছাল আলাদা করে পচিয়ে নেওয়া হয়। এতে পানি কম লাগে। তবে কৃষক এ পদ্ধতি গ্রহণ করছে