নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
দেশে অক্সিজেনের মূল্য নিয়ে প্রতারণা চলছে। এই প্রতরনা রোধে দ্রুত মূল্য পুননির্ধারণ ও প্রতরানার সাথে জড়িতদের আইনোর আওতায় আনতে হবে। অক্সিজেন নিয়ে কোন রকম সিন্ডিকেট যাতে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে না পারে তার জন্য সরকারকে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গ্যাস প্রডিউসার এন্ড ইম্পোর্টার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ কর্তৃক বৈশ্বিক করোনা মহামারির এই সময়ে গ্যাসের মুল্য বৃদ্ধি কার্যকর করার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এ দাবী জানান।
সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ আতাউল্লাহ খানের সভাপতিত্বে মানবন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বআলহাজ্ব ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ, বাংলাদেশ ন্যাপ এর মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বাংলাদেশ মুটো ফোন গ্রাহক সমিতির চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ড. শরীফ সাকি, সহ সভাপতি মির্জা শরীফুল আলম, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আল হাজ্ব মোঃ চাঁন মিয়া, শারমিন পারভীন লিজা, সংগঠনের সমন্বয়কারী, মোস্তফা আল ইহজাজ, আইরিন অধিকারী, চলচিত্র পরিচালক সায়মন তারিক, এ্যাড: কাজী সুফিয়া জামান, মোঃ আবদুল হাই সবুজ, সহ আরও নেতৃবৃন্দ সহ সমাবেশে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য অক্সিজেন খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়। কিন্তু দেশে সেই অক্সিজেনের মূল্য নিয়ে অরাজকতা চলছে। তারা (সরকার) নিজেদের যা ইচ্ছা, তাই করছে। করোনার জন্য ভ্যান্টিলেটরের চেয়ে বেশি প্রয়োজন অক্সিজেন। অক্সিজেনের পর্যাপ্ত সাপ্লাই আছে কিনা দেখার কেউ নেই। সকলেই জানে করোনা রোগীরা অক্সিজেনের জন্যই মূলত হাসপাতালে ভর্তি হয়। অনেকগুলো সেন্টার (হাসপাতাল/ক্লিনিক) অক্সিজেনের এত বেশি দাম নিচ্ছে, যা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।
তিনি বলেন, ১ হাজার লিটার অক্সিজেনের জন্য আসলে খরচ হবে মাত্র ৭০ টাকা। অথচ অক্সিজেনের জন্য লাখ টাকার বিলও দেখেছে দেশবাসী। এজন্য সরকারের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো এসবের মূল্য স্থির না করে দিতে হবে। তা না হলে জনগণকে প্রতারণার শিকার হওয়া থেকে রক্ষা করা যাবে না।
তিনি আরো বলেন, করোনা রোগিদের জন্যতো অক্সিজেন তো ফ্রি হওয়া উচিত। এটা বাতাস থেকে হয়। অক্সিজেন গঠন করার জন্য এটাকে ধরে নিয়ে একটু পিউরিফাই (বিশুদ্ধ) করে নিয়ে তারপরে ব্যবহার করা হয়। এটার মূল্য স্থির না করে দিলে প্রতারণা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গ্যাস প্রডিউসার এন্ড ইম্পোর্টার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ কর্তৃক ১৩ আগস্ট ২০২০ হঠাৎ করে খুচরা ব্যবসায়ীদের মুল্য বৃদ্ধির নোটিশ দিয়ে ১৬ আগস্ট থেকে ২০ টাকার কিউবিক মিটার অক্সিজেন এর মুল্য ২৭ টাকা নির্ধারন করে যাহা অযৌক্তিক ও করোনাকালে অমানবিকও বটে । কার্বনডাই অক্সাইড এর মুল্য ২৫ টাকা কেজি থেকে ৩০ টাকা নির্ধারন করা হয়। আর্গন গ্যাসের মুল্য ১৩০ টাকা হতে বাড়িয়ে ২০০ টাকা নির্ধারন করা হয়। এসিটিলিন গ্যাস এর মূল্য ৪৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা করা হয় ।
তারা বলেন, বর্তমানে লক্ষাধীক করোনা রোগী ও সাধারন ভোক্তা সহ ৪৮০ জন ছোট বড় খুচরা ব্যবসয়ী ও প্রায় ১ লক্ষাধীক শিল্প কল-কারখানার মালিক ও ১০ লক্ষাধীক শ্রমিক গ্যাস প্রডিউসার এন্ড ইম্পোর্টার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কাছে এক প্রকার জিম্মি হয়ে আছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বৈশ্বিক এই মহামারীর মধ্যে সারা পৃথিবীর মানুষ যেখানে তার জীবন ও জীবিকার জন্য শংকিত। প্রতিটি দেশের সরকার তার নাগরিকদের জীবিকা ও জীবনরক্ষার জন্য নানান পরিকল্পনা প্রনোদনা দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে। সেখানে এই অসময়ে এমন কি যৌক্তিক বৈশ্বিক কারন ছিল দেশে অক্সিজেন, এসিটিলিন, আরগন, কার্বনডাই অক্সাইড গ্যাসের দাম বৃদ্ধির? মাননীয় বাণিজ্য মন্ত্রী, মাননীয শিল্প মন্ত্রী সহ যথাযত কতৃপক্ষ সাধারন ভোক্তার কাছে কি জবাব দিবেন?
করোনা কালীন সময়ে শ্রমিকদের বেতন কমানো হচ্ছে। শহর ছেড়ে মানুষ গ্রামে চলে যাচ্ছে। বিভিন্ন কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মানুষ অসহায় জীবন-যাপন করছে এমন সময় হঠাৎ করে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা যুক্তিযুক্ত নয়। দেশে বিদ্যুৎ এর দাম বৃদ্ধি হয়নি, জালানি তেলের দাম বৃদ্ধি ও হয়নি, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামাল এর মুল্য বৃদ্ধিও হয়নি, হয়নিা সরকারি ট্যাক্স বৃদ্ধি? তা হলে প্রশ্ন উঠেছে এই সিদ্ধান্ত কি সরকারকে বেকায়দায় ফেলানো জন্য ? না অসহযোগিতার জন্য?
এমতাবস্থায় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন এর দাবি জাতীয় এই দুর্যোগের সময় জাতীয় স্বার্থে আপনাদের “মূল্য বৃদ্ধির” এই সিদ্ধান্ত পূর্নবিবেচনা পূর্বক প্রত্যাহার করার জন্য দাবী জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ রবিবার,মহামান্য রাস্ট্রপতির কার্যালয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রনালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করার কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়।