মো. আবু রায়হান চৌধুরী:
কুমিল্লার হোমনায় চাঁদা না দেওয়ায় নির্মাণাধীন মসজিদের বালি ভরাটের কাজে বাঁধা দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামীলীগ নামধারী বিএনপির মুখোশ পড়া কিছু নব্য ও হাইব্রিড আওয়ামীলীগারদের বিরুদ্ধে। জানাগেছে সোমবার উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের ঝগড়ারচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন – ঝগড়ারচর গ্রামের মোল্লা বাড়ির হুমায়ুন মোল্লার পুত্র ইব্রাহিম (৩৩), মৃত মালু মোল্লার পুত্র মো. করিম মোল্লা (৪৮), মৃত নুরু মোল্লার পুত্র বাচ্চু মোল্লা (৫১), মৃত আফসার উদ্দিন মোল্লার পুত্র হুমায়ুন মোল্লা (৫১), করিম মোল্লার পুত্র এনামুল (২৪), বাচ্চু মোল্লার পুত্র শাহ আলম (১৯), মৃত কুদ্দুস মিয়ার পুত্র হেলাল মিয়া (৪৮), মৃত বিন কাশেম এর পুত্র আল আমিন (২৫) ও হেলাল মিয়ার শাওন মিয়া (১৮) সহ আর অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনের চাঁদাবাজ চক্র। থানা পুলিশ এর কাছ থেকে জানাযায়, হোমনা থানাধীন ঝগড়ারচর গ্রামের মোরশেদ মিয়া নামের এক ব্যক্তি থানায় এসে তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে ও তার পৈত্রিক সম্পত্তি হতে দানকৃত জায়গায় নির্মাণাধীন মসজিদের বালি ভরাটের কাজে চাঁদা না দেওয়ায় কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে একটি লেখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সে অভিযোগের ভিত্তিতে পরে হোমনা থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে পুনরায় চালু করা হয় মসজিদের বালি ভরাটের কাজ। ভুক্তভোগি সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ এর অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, দীর্ঘ্য দিন ধরে চাদাবাজ চক্রটি এলাকায় তাদের প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার করতে সমাজে বিভিন্ন প্রকার অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। গ্রামে যে কোনো কাজ করতে হলে তাদের কে মোটা অংকের চাঁদা দিতে হয়। আর চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ করে দেয় এই চক্রের সদস্যরা। এমনকি যারা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে প্রতিবাদ করতে যাবে উল্টো তাদের উপর চলে অমানবিক নির্যাতন। গ্রামের সাধারন মানুষ তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। শুধু তাই নয় এই চক্রের সদস্যরা এলাকায় রীতিমত ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। এমন কোনো অপরাধ নেই যে তাদের দ্বারা সংগঠিত হয় নি। মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন প্রকার অপরাধমুলক কর্মকান্ড চলে তাদের হাতের ইশারায়। ভুক্তভোগি সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, আমি সমাজের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। রাজধানীর ঢাকায় আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেই সুবাধে গ্রামের বাড়িতে আমার তেমন আসা হয় না। তবে আমার মরহুম পিতার রেখে যাওয়া জায়গা সম্পত্তি ও আত্মীয়-স্বজনদের ভাল মন্দের খোজ খবর নেওয়ার জন্য মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসতে হয়। অ পরদিকে এই চাঁদাবাজ চক্রটি বহু পূর্ব থেকে আমার কাছ থেকে চাঁদা নিতে বিভিন্ন ভাবে পায়তারা করে আসছে। আমার যে কোনো উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে তারা বাধা প্রদান করতে থাকে। আমাদের পরিবারের উদ্যোগে ও অর্থায়নে গ্রামের এবং আশেপাশের লোকজনের নামাজ পড়ার জন্য আমাদের নিজস্ব জায়গায় বায়তুল আমান নুরুন্নাহার জামে মসজিদ নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করিতেছি। এবং সে মসজিদের পিলার স্থাপনের পর মাটি ভরাট করার জন্য নৌকা হইতে ড্রেজার দিয়ে বালি উত্তোলন করার জন্য পাইপ স্থাপন করতে গেলে আসামীগন আমার লোকজনকে বাঁধা প্রদান করেন এবং ১লক্ষ টাকা চাঁদাদাবী করেন। এসময় চাঁদা না দেওয়া হলে মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি ধমিিক দিয়ে জোরপূর্বক ড্রেজার বন্ধ করে দেন অভিযুক্তরা। শুধু তাই নয় ইতোপূর্বে আমার একটি লেচু বাগান হতে কয়েক লক্ষাধিক টাকার লেচু চুরি করে নিয়ে যায় এই চক্র। বর্তমানে আমি তাদের ভয়ে নিজের জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকায় তাদের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ এবং তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি। এব্যাপারে ইউপি সদস্য মাতু মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মসজিদের মাটি ভরাট করার কাজে লোকজনকে বাঁধা প্রদান করে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চাঁদা চাওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটে নি। ইতোপূর্বে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জায়গার মালিক মোরশেদ মিয়ার লেচু বাগান হতে লেচু চুরির অপরাধে আর্থিক জরিমানা দিতে হয়েছিল সেই শত্রুতার জের ধরেই মসজিদের মাটি ভরাট করার কাজে লোকজনকে বাঁধা প্রদান করেন। এবিষয়ে হোমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, মসজিদের মাটি ভরাট করার কাজে লোকজনকে বাঁধা প্রদান করে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হলে একটি লেখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে তাৎক্ষণি ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পুনরায় মাটি ভরাটের কাজ চালু করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করতে চেষ্ঠা অব্যাহত রয়েছে।