৩০ জুলাই বিশ্ব মানব পাচার বিরোধী দিবস। ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক প্রস্তাবের মাধ্যমে প্রতি বছর ৩০ জুলাই বিশ্ব মানব পাচার বিরোধী দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে পালন করার সিদ্ধান্ত হয়। পাচারের শিকার ব্যক্তিদের অধিকারগুলো প্রচার ও সুরক্ষা এই দিবসের লক্ষ্য। তারপরও প্রতিবছর মানব পাচারের হার কমছে না। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমকালে মোট ১০৬ জন পুরুষ, ৩২ জন নারী ও ১২ জন শিশু আটক হয়। মোট ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয় ৭৭টি এবং একজন পাচারকারীও ধরা পরে। এটা শুধু কয়েক মাসের সীমান্ত অতিক্রমকালে আটকের হিসাব, এছাড়া আরও হাজার হাজার নারী-পুরুষকে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। প্রতি বছরই মানব পাচার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের দেশের জনশক্তি রপ্তানি বাজারে প্রভাব ফেলবে। আন্তর্জাতিক কনভেনশনের মতে মানব পাচার মানুষের অধিকার লঙ্ঘন করে। দেশে সরকারি-বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনের অভাব নেই, অভাব শুধু সঠিক কার্যক্রমের। প্রতিবছর কত মানুষ পাচার হয় তার সঠিক কোনো রেকর্ড নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংগঠন এবং সংবাদ মাধ্যম থেকে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তারই হিসাব রাখা হয়। মানব পাচার একটি আধুনিক বা নব্য দাসত্বের লক্ষণ। গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, মানব পাচার নামক আধুনিক দাসত্বের শিকার বিশ্বের আনুমানিক ৪ কোটির বেশি মানুষ। অভিবাসন প্রক্রিয়ায় অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মানুষ নিজেদের জীবনযাপনকে সচ্ছল করতে পারবে এই বিশ্বাসে ছুটছে উন্নত দেশগুলোতে। স্বপ্ন দেখা মানুষগুলোর সরলতার সুযোগকে কাজে লাগায় পাচারকারীরা। এ মানুষগুলো পাচারের শিকার হওয়ার পাশাপাশি আরো কিছু অপরাধের শিকার হয়। যেমন -প্রতারণা, জোরপূর্বক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, জোরপূর্বক যৌন কাজে বাধ্য, শ্রমদাস, মুক্তিপণ হিসেবে অর্থ আদায়, মাদক পাচারে ব্যবহার, দেহের অঙ্গ স্থানান্তর করে বিক্রি, বিপদজনক খেলাতে ব্যবহার এমনকি অর্থ না পেলে মেরেও ফেলা হয় অনেককে। অনেকগুলো অপরাধ একসাথে সংগঠিত হওয়ায় মানব পাচারকে জঘন্যতম অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
মানব পাচার বর্তমানে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করলেও এটি দীর্ঘদিন যাবত ঘটে চলেছে। ইতিহাস ঘাটলে মানব পাচারের অনেক মর্মান্তিক ঘটনা জানা যায়। ২০১৫ সালে বিশ্ব গণমাধ্যমে বিশেষ শিরোনাম ছিল থাইল্যান্ডের জঙ্গলে বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গাদের গণকবর পাওয়ার ঘটনাটি। থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের জঙ্গলে গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। সেখান থেকে বাংলাদেশী ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অভিবাসীদের ৮টি কঙ্কালসহ ২ জনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও আরো শতাধিক কবর পাওয়া যায় যেখানে এক বা একাধিক কঙ্কাল ছিল। মালয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী শঙ্খলা প্রদেশের সাদাও এলাকার জঙ্গলের গণকবর থেকে মোট ৮ জনের কঙ্কাল ও দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। ২০১৫ সালের ২৭ মে সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার ৭ উপজেলার প্রায় ৩৫০ জন কিশোর ও যুবককে ভালো অর্থ উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে দালালরা অবৈধ পথে ট্রলারে করে মালয়েশিয়া পাঠায়। কিন্তু কিছু দিন পর দালাল চক্র মোবাইলে তাদের পরিবারের কাছে যুবকদের করুণ আকুতি শোনায়। প্রিয় সন্তানের জীবন রক্ষায় বসতভিটা বিক্রি করে দিতে দ্বিধাবোধ করেননি তারা, অনেকে আবার বিভিন্ন সমিতি থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে সমস্ত টাকা তুলে দিয়েছেন দালালদের হাতে। যদিও তাদের অনেকেরই খোঁজ মেলেনি এখনো। টাকা দিতে না পারায় কয়েকজনকে হত্যা করে সাগরে ফেলে দিয়েছে বলে পরিবারকে জানানো হয়। নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় তারা নিজেদের দুর্ভাগ্য ডেকে এনেছেন। ২০১৯ সালের ৯ মে ভূমধ্যসাগর হয়ে নিজেদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ৮০ জন পুরুষ নৌপথে যাত্রা শুরু করে ইউরোপের উদ্দেশ্যে। তাদের এই স্বপ্ন পূরণের যাত্রা মরণযাত্রাতে পরিণত হয়। নৌকা উল্টে অধিকাংশ যাত্রী মারা যেতে থাকে, এদের মধ্যে ৩৯ জন বাংলাদেশী। তাদের মাঝে ভাগ্যক্রমে কিছু যাত্রী বেঁচে ফেরে। পুরুষের থেকে তুলনামূলক বেশি হারে নারী ও শিশু পাচারের শিকার হয়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও ওয়ার্ক ফ্রি ফাউন্ডেশনের ২০১৭ সালের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, পাচার হওয়া ভিক্টিমদের ৭১ শতাংশ নারী ও মেয়ে শিশু এবং ২৯ শতাংশ পুরুষ ও ছেলে শিশু। অনেকে নিজ দেশে আবার অনেকে বিদেশে পাচার হচ্ছে। আর এদের শেষ ঠিকানা হচ্ছে যেকোনো যৌনপল্লীতে। সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা দিয়ে এদের বিক্রি করা হয় পতিতালয়ের প্রধানের কাছে। একবার এখানে প্রবেশ করলে মুক্তি পাওয়া মুশকিল। অনেকে মুক্তি পেলেও সমাজ তাদের আর স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেয় না। পরে তাদের ফিরে যেতে হয় আগের ঠিকানাতে। জাতিসংঘের ২০১৮ সালের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে পাচার হওয়া মানুষদের মাঝে ৩৪ শতাংশ নিজ দেশে এবং ৩৭ শতাংশ আন্তঃসীমান্তে পাচার হচ্ছে। সেইভ দ্য চিলড্রেনের ২০১৪ সালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী গত ৫ বছরে ৫ লাখ বাংলাদেশী নারী বিদেশে পাচার হয় যাদের গন্তব্য ভারত, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। বিবিসির একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয় পাচার হওয়া এক নারীর পাচারকারী হয়ে ওঠার ঘটনা। এছাড়া আরো হাজার হাজার ঘটনা প্রতিনিয়ত সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ২০১৪ সালের রিপোর্ট মতে পাচারকারীরা বছরে ১৫১ বিলিয়ন ডলার আয় করে যার ৯৯ বিলিয়ন আসে যৌন পেশায় বাধ্য করার মাধ্যমে। মোট কথা নারী পাচার আসলে একটি ব্যবসা।
মানব পাচারের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায়, এই জঘন্যতম অপরাধটি কোনো একক ব্যক্তির পক্ষে করা সম্ভব নয়। এই অপরাধের পেছনে থাকে বিশাল এক চক্র। যে যে দেশে মানব পাচার হয় সেই দেশের দালালদের মধ্যে থাকে যোগসূত্র। দলবদ্ধ পরিকল্পনার মাধ্যমে এই অপরাধটি সংঘটিত হয়। একটি তদন্তে উঠে আসে, মানব পাচার হয় মৌসুম হিসাব করে। পাচারকারীরা একটি মৌসুম নির্বাচন করে সেই অনুযায়ী পাচার করে মানুষকে। তারা হেমন্ত ও শীতকালকে পাচারের মৌসুম হিসাবে ধরে, কারণ এই সময় সমুদ্র কিছুটা শান্ত থাকে, তাই তারা ছোট ছোট নৌকা করে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে মানব পাচার করে। ২০১৮ সালের রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপে স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখতে হলে টিকিটের সাথে প্রথমবারের মতো ফ্যান আইডি ব্যবহার করে ফিফা। এই ফ্যান আইডি দিয়ে রাশিয়াতে ভিসা ছাড়া প্রবেশ করা যেত। এই আইডি খেলা শুরু হওয়ার ১০ দিন আগে থেকে শেষ হওয়ার ১০ দিন পর পর্যন্ত কার্যকর ছিল। আর এই সুযোগকে কাজে লাগাতে সক্রিয় হয়ে ওঠে পাচারকারী দল এবং একজোট হয়ে স্বার্থ হাসিল করে বাংলাদেশ, রাশিয়া আর ইউরোপের দালালেরা। ৩৮৪০ জন বাংলাদেশি নাগরিক এই ফ্যান আইডির জন্য আবেদন করে। দালালেরা রাশিয়া থেকে ইউরোপে প্রবেশদ্বার হিসেবে কালিনিনগ্রাদকে বেছে নিয়েছিল। দালালদের এক চক্র তাদের ঢাকা থেকে দুবাই বা তুরস্কে নেয়, তারপর বিমানে করে লিবিয়া হয়ে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করে। তিন থেকে চারটি পাচারকারী চক্র সক্রিয় থাকে একাজে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার তথ্য মতে অবৈধ ভাবে ইউরোপে প্রবেশের শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার ২০১৭ সালের জরিপে দেখা গেছে, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে যাওয়ার চেষ্টায় বাংলাদেশ রয়েছে প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে। খুব সম্প্রতি লিবিয়াতে ২৬ জনকে অপহরণ করে, তারপর লিবিয়ার মানবপাচারকারী একজনকে হত্যার প্রতিশোধে তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে অপহরণকারীরা। এ সকল তথ্য অনুসারে অনুমান করা যায় যে, মানব পাচার কোনোভাবেই কমছে না বরং দিন দিন ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে।
মানব পাচারের দিক থেকে আন্তজার্তিক সংস্থার তালিকাতে কেন বাংলাদেশ শীর্ষে? আমরা যদি এর কারণ খুঁজি তাহলে সর্বপ্রথম যে কারণটি আসবে তা হলো বেকারত্ব। দেশের বিপুল পরিমাণ বেকার ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ধারণা, বিদেশে গেলে তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরবে। পারিবারিক সচ্ছলতা আসবে এই বিশ্বাস নিয়ে অবৈধ পথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে পাড়ি দেয় তারা। তাদের এই বিশ্বাসকে পুজি করে স্বার্থ হাসিল করে পাচারকারীরা। নারীদের ক্ষেত্রেও একইভাবে বিভিন্ন এলাকার তালাকপ্রাপ্ত, অল্প বয়স্ক বিধবা, কাজের সন্ধান করছে এমন নারীদের টার্গেট করে। অনেক সময় অপহরণ বা প্রেমের ফাঁদে ফেলে পাচার করে দেশে-বিদেশে। আবার সীমান্তবর্তী এলাকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাফিলতির জন্যও মানব পাচার হয়। সংবাদ মাধ্যমে মানব পাচার রোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলেন, সুমদ্রে টহল দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত বোট-ট্রলার নেই। কিছুক্ষেত্রে স্থানীয়দের থেকে ভাড়া করে অভিযান চালানো হয়। ৩৬ জন কোস্ট গার্ড দুইটি বোট দিয়ে টহল দেয়, যা টেকনাফের মতো বিশাল জায়গায় জন্য খুবই নগন্য। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সূত্র মতে কক্সবাজার ও টেকনাফের ৮০টি পয়েন্ট দিয়ে মানব পাচার হয়। বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতার জন্য জন্য মানব পাচার কমানো যাচ্ছে না। মানব পাচারকারী চক্রের সাথে পুলিশ, সীমান্ত রক্ষীবাহিনী, প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের নেতাসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার হাত আছে বলে মনে করা হয়। ২০১২ সালের মানব পাচার দমন ও প্রতিরোধ আইনের সঠিক প্রণয়নের মাধ্যমে মানব পাচার কমানো সম্ভব। মানব পাচারের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে দেশের ৮টি বিভাগে ট্রাইবুনাল গঠন করতে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। সুপ্রিম কোটের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী (৩০ জুন ২০২০) সারা দেশে বিচারাধীন মামলা রয়েছে ৪ হাজার ৬০১টি যার মধ্যে সর্বোচ্চ ঢাকা বিভাগে ২ হাজার ৬৪টি এবং সর্বনিম্ন রংপুরে ৫৮টি। এছাড়া রাজশাহীতে ২৩৫টি, চট্টগ্রামে ৬৭৯টি, খুলনায় ৮৩৩টি, বরিশালে ৩৮৫টি, সিলেটে ২২৬টি এবং ময়মনসিংহে ১২১টি। আশা করা যায় আট বিভাগে ট্রাইবুনাল গঠনের মধ্যমে এই দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।
আমাদের দেশে মূলত একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটলে তারপর থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ঐ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলে আলোচনা, সমালোচনা, নীতিনির্ধারকদের টকশো এবং সুশীলদের পরামর্শ। কিন্তু কিছুদিন পরে আরো একটি ঘটনার চাপে ঢাকা পড়ে যায় পূর্ববর্তী ঘটনা। আর এভাবেই অপরাধীরা আইনের থেকে পার পেয়ে যায়। মানব পাচার দমন ও প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারে বিলম্ব না করে দ্রুত শাস্তি দেওয়া উচিত। বিচার বিভাগের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাচারকারীদের আটক করতে অভিনব কৌশল অবলম্বন করতে হবে। আমি মনে করি, মানব পাচারের আরো একটি কারণ হলো অসচেতনতা। পাচার হওয়া ভিক্টিম যারা ফিরে আসে তাদের নিয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রাম বা ভিক্টিমদের বক্তব্য, তাদের দুর্দশার কথাগুলো প্রত্যন্ত অঞ্চলের সহজ সরল মানুষের মাঝে তুলে ধরার মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করা যেতে পারে। যে এলাকা থেকে মানব পাচার বেশি হচ্ছে সেই এলাকা চিহ্নিত করে সচেতন করা। বেকারত্ব কমাতে যুবক ও মহিলাদের কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধি করে নিজ দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। জনশক্তি রপ্তানিতে সরকারি কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে উন্নত দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক বাড়ানো। এছাড়া উপকূল ও সীমান্ত এলাকাতে পর্যাপ্ত কোস্ট গার্ড ও সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর সংখ্যা বাড়াতে হবে। তাদের প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করতে হবে। সমুদ্রসীমা সুরক্ষার জন্য আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন দরকার বলে আমি মনে করি। সমুদ্র পথে টহল বাড়াতে হবে। টেকনাফসহ সীমান্ত এলাকাগুলিতে ওয়াচ-টাওয়ার করে মানুষদের সার্বক্ষণিক চলাচল পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে। মানব পাচারের এই চক্র ভেঙে দিতে রিসিভিং কান্ট্রির অনেক ভূমিকা পালন করতে হবে। এই বিষয়ে সরকারের আরো বেশি সচেতন হওয়া এবং সুনজর দেওয়া উচিত। এছাড়া জল, স্থল ও আকাশ পথে নজরদারি বাড়াতে হবে। ২১ শতক, সভ্য এক ধরণীতে দাস প্রথা বড়ই বেমানান। মানব পাচার জঘন্যতম একটি ব্যবসা। এটি নির্মূলের মাধ্যমে আমরা আধুনিক দাস প্রথা থেকে মুক্তি পেতে পারি।