সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
বিধি না মেনে এবং অপরিকল্পিতভাবে গ্রাম-গঞ্জে বসতবাড়ি নির্মাণ করার কারণে বাড়ির উঠান না থাকায় সড়কগুলোতে শুকানো হচ্ছে ধান এবং খড়। বিভিন্ন মৌসুমে কাঁচা পাকা সড়কগুলো ব্যবহার করে কাটা মাড়াই ও ফসল শুকানোর কাজ করায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারি এবং যানবাহন সমুহ। এ কারণে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটখাট সড়ক দূর্ঘটনা এবং বাকবিতন্ডা। চলতি ইরি-বোরো মৌসুমের শুরুতেই উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কাঁচা পাকা সড়কগুলো এখন ধান এবং খড়ের দখলে চলে গেছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কোন নিয়ম নীতি না মেনে কৃষক-কৃষাণীরা সড়কগুলো বাড়ির উঠান হিসেবে ব্যবহার করছেন। এতে করে প্রতিদিন ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা এবং পথচারির সাথে যানবাহন চালকদের বাকবিতন্ডা।
উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের কৃষক বাবু মিয়ার বলেন, বাড়ির উঠান না থাকায় সড়কগুলোতে ধান মাড়াই, ধান ও খড় শুকানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে । এটি অন্যায় স্বীকার করে তিনি বলেন, সড়কে ধান ও খড় শুকানোর কারণে পথচারি এবং যানবাহন চালকগণ অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। পাশাপাশি ধান ও খড় শুকানোর কারণে ছোট খাট সড়ক দূর্ঘটনা ঘটছে। তার দাবি অন্যায় হলেও উপজেলার বেশির ভাগ কৃষক-কৃষাণী এ কাজ করছেন।
দক্ষিণ ধুমাইটারি গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, সড়কে ধান ও খড় শুকানোর জন্য একই বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বসত বাড়ির উঠান না থাকায় প্রতিটি পরিরারের মধ্যে এ সমস্যা চলমান।
পৌর শহরের ব্যাটারি চালিত মিশুক অটো চালক মোনারুল ইসলাম বলেন, যে কোন মৌসুমের সময় বিশেষ করে গ্রাম-গঞ্জের ভিতরের সড়কগুলোতে মিশুক, অটো, ভ্যান, রিক্সা ও মোটরসাইকেল চলাচল অত্যন্ত কষ্টকর। ধান ও খড়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালানোর সময় ব্রেক করলেই দূর্ঘটনা নিশ্চিত। হর্ণ বাজানোর পরও সাইট না দেয়ায় কৃষক-কষানীগণের সাথে বাকবিতন্ডা লেগেই চলছে।
মোটরসাইকেল চালক ও স্কুল শিক্ষক জাহেদুল ইসলাম বলেন, যদিও এটি অন্যায় তারপরও দীর্ঘদিন হতে এ অবস্থা চলে আসছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে সড়কের একপাশে কাজ করলে সকলের জন্য ভাল হয়। কিন্তু কৃষক-কৃষাণীরা সেটা না করে গোটা সড়ক ব্যবহার করে ধান খড় শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। সে কারণে প্রতিদিন ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। সড়কে ধান ও খড় পরিচর্যার কারণে পথচারিগণের চোখে এবং নাকে ধুলাবালি পড়ে নানাবিধ সমস্যায় সৃষ্টি হচ্ছে।
বেলকা ইউনিয়নের রুবেল মিয়া বলেন, সড়ক ব্যবহার করে ধান ও খড় শুকানোর কারণে হাটা-চলা অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ধানও খড়ের ধুলাবালি পথচারিগণের নানাবিধ ক্ষতির কারনে হয়ে দাড়িছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীগণ চরম ঝুকি নিয়ে চলাচল করছেন।
দহবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজাউল ইসলাম সরকার জানান, জনপ্রতিনিধি হিসেবে এ ব্যাপারে কিছু বলার নেই। তবে কৃষক-কৃষাণী ভাই বোনদের নিকট এটাই আবেদন সব বিষয় বিবেচনা করে কাজ করতে হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রাশিদুল কবির জানান, বেশিরভাগ কৃষকের বাড়ির উঠান নেই। সে কারণে বিশেষ করে ইরি-বোর মৌসুমে সড়কগুলো বেশি ব্যবহার করেন কৃষক-কৃষাণীগণ। এ ব্যাপারে সকলকে সর্তক ও আন্তরিক হতে হবে। এটি অন্যায়, বলার অপেক্ষা রাখে না।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম জানান, এভাবে আসলে কখনো ভাবা হয়নি। তবে সড়ক ব্যবহার করে ধান ও খড় শুকানো মারাত্বক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। আশু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Tags: সড়ক