আমিরুল ইসলাম কবিরঃ
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ঘর না পেয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের খালি জায়গায় মানবেতর জীবন যাপন করছে অসহায় মান্নান ও রাবেয়া দম্পত্তি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর না পেয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্থানে পরিত্যক্ত জায়গায় টিনের ছাপড়া ঘর তুলে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে প্রখর তাপদাহে ও ঝড় বৃষ্টিতে মানবেতর জীবন-যাপন করছে আব্দুল মান্নান ও রাবেয়া দম্পতি।
চলমান তাপদাহে দিনের বেলায় সেই ঘরে বসবাস করা তো দূরের কথা ৫ মিনিট থাকলে শরীরে ঘাম ঝড়ে কাপড় ভিজে যায়। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে ঘরের শোবার বিছানাপত্র ভিজে যায়। এমন ভোগান্তিতে তাপদাহের কারণে শিশু দুটি নানা রোগে শোকে ভুগছে ৷ এরপরেও অসহায় পরিবারটি আশ্রয়ণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় মান্নান-রাবেয়া দম্পতি নিরুপায় হয়ে উক্ত স্থানে বসবাস করছেন। বেশী তাপদাহ হলে রাবেয়া সন্তানদের নিয়ে কোন গাছের ছায়া ও অন্যের বারান্দায় আশ্রয় নেয়। এভাবেই রোদ ঝড়ে সন্তানদের নিয়ে লড়াই করে রাবেয়া বেগম। অথচ প্রকল্প এলাকায় একাধিক ঘর খালি পড়ে আছে।
ইতোমধ্যে পলাশবাড়ী উপজেলাকে ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করেছে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন।
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ২নং হোসেনপুর ইউনিয়নের বাহিরডাঙ্গা গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্থানে রঙ্গীন টিনের সারি সারি ঘরের পাশে এভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে এ পরিবারটি। আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় ভূমিহীন মান্নানের পরিবার বেশ কিছুদিন হলো এমন মানবেতর জীবন যাপনের দৃশ্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের সংশ্লিষ্টদের নজরে আসার পরও তারা দেখেও না দেখার ভান করে রয়েছেন বলে জানায় স্থানীয়রা ও প্রকল্প এলাকার অন্যান্য সুবিধাভোগীরা জানান। যেনো তাদের নেই কোনো কিছুই করার।
মান্নান ও রাবেয়া দম্পতি জানায়,(কাম) কামলা দিলে পেটে ভাত যায়,কাম না করলে বউ ছৌল নিয়া না খেয়ে থাকান নাগে। ঘরের জন্য অফিসের বাবুদের কাছে ধর্ণা দিম ক্যামনে। হামরা তো গরীব মানুষ,হামার ঘরে হাতা মাতা কেউ নাই,কেটা হামার স্থায়ী থাকপার (আশ্রয়ণ) জাগা করে দিবি। তোমরা যদি এনা সদয় হয়া হামার পরিবারের পাশে খাঁড়া হন (দাঁড়ান) তাহলে হয়তো হামরা স্থায়ী আশ্রয় পামো। তোমরা সাংবাদিক ভাইয়েরা এনা ভালো করে নেকেন (লেখেন) যাতে হামরা (আমরা) একনা (একটা) ঘর পাই।
স্থানীয়রা জানায়,লক্ষীপুর কয়ারপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল বাছেদ এর ছেলে আব্দুল মান্নান ও স্ত্রী রাবেয়া বেগমসহ দুটি সন্তান নিয়ে ছোট একটা ছাপড়া ঘরে রোদ বৃষ্টিতে ভিজে পুড়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অন্ততঃ শিশু দুটির মুখের দিকে চেয়ে তাদের স্থায়ী আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
এব্যাপারে ভুক্তভোগীরা সহ সচেতন অভিজ্ঞমহল ও এলাকাবাসী,স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন,জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্টদের ও বিত্তশালীদের সদয় সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।