নিজস্ব প্রতিবেদক◊◊
নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো: মাইন উদ্দিন রাষ্ট্রীয় সম্পদ দুর্নীতি করে শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নামে-বে’নামে অবৈধ সম্পদ থাকাতে ‘দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রধান কার্যালয় ঢাকার, একটি তদন্ত টিম সম্পদের খোঁজে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, মাইন উদ্দিন নারায়ণগঞ্জ জেলা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে কার্যকাল ০৫/০১/২০২০ থেকে ২৫/০৩/২০২১ সাল পর্যন্ত বছর জুড়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় দুর্নীতির আখঁড়া গড়ে হাতিয়ে নেন কয়েক কোটি টাকা। এভাবে অবৈধ অর্থের প্রভাবে ঊর্ধ্বতন মহলে ঘুষ দিয়ে বর্তমানে পদোন্নতি পেয়ে সিলেট বিভাগীয় প্রধান আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে আছেন তিনি। উল্লেখ্য গত ৩১ মার্চ ২০২১ তারিখ তিনি সিলেটের নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেন মাইন।
দুর্নীতির অভিযোগ থাকার পরও কিভাবে পদোন্নতি পেয়েছেন সেটা নিয়েও অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। বর্তমানে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত মাইন উদ্দিনের বিরুদ্ধে আয় বহির্ভুত বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
একটি প্রাথমিক সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত মাইন উদ্দিনের রাজধানীর মিরপুর সহ ঢাকার বাহিরেও একাধিক বাড়ি ও ফ্লাট রয়েছে।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের একটি টিম নিবিড়ভাবে তার সম্পদের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে নামে-বে’নামে অবৈধ সম্পদ, অফিস ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকে মাইন উদ্দিনের কী পরিমাণ আয় বহির্ভূত সম্পদ ও টাকা রয়েছে সেসব তথ্য চেয়েও দুদক থেকে সংশ্লিষ্ট দফতরে গত ২৭/১২/২০২২ তারিখে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এমন ঘটনার বিষয়টি টের পেয়ে মাইন উদ্দিন বিভিন্ন মহলে সহযোগীতা পাওয়ার জন্য তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাইন উদ্দিনের বিরুদ্ধে গত বছরের ডিসেম্বরে আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি অভিযোগ আসে। দাফতরিক অনুমোদনের পর তাঁর আয় বহির্ভুত সম্পদের তথ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। তারপরে রাজধানীর প্রধান কার্যালয়ের (তদন্ত-২) অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তবে মাইন উদ্দিনের আয় বহির্ভুত সম্পদের তথ্য পেতে দুদক কর্মকর্তারা তাঁর বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন আয়ের প্রাথমিক তথ্য ইতোমধ্যেই সংগ্রহ করেছে।
এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জের কয়েকজন নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক জানান, মাইন উদ্দিন এই জেলায় থাকাকালীন সময় দূর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ লোপাট করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এমন দুর্নীতিবাজরা আবার পদন্নোতি পেয়ে কিভাবে সিলেট বিভাগীয় প্রধান হন এ বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আমাদের অনুসন্ধান টিমের কাছে ক্ষোভও প্রকাশ করেন।
এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিসে গিয়ে সরেজমিনে তার অধীনস্থ সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায়, অভিযুক্ত মাইন উদ্দিন বিভিন্ন উপায়ে অনেক সম্পদের মালিক বনে গেছেন। তবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)’কে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে কিনা। বিষয়টি তাঁরা অবগত নয় বলেও জানান।
এবিষয়ে সাংবাদিকরা মুঠোফোনে তাঁর দুর্নীতির বিষয়টি জানতে চাইলে, তিনি অসুস্থতার কথা বলে ফোনটি রেখে দেন। পরে মাইন উদ্দিনকে একাধিকবার চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায় নাই।
[পরবর্তী অনুসন্ধানে আরও বিস্তারিত তুলে ধরা হবে]