খাজা মেহেদী শিকদার :
ঢাকা ৫ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুল ইসলাম মনু বলেছেন, আজ আপনাদের মাঝে আমার পরিচয় দিতে চাই। আপনারা আমার পরিচয় জানেন, তার পরেও আমি আমার পরিচয় দিবো।
তিনি বলেন, আমার পরিচয় হয়তো বা নতুন প্রজন্ম অনেকেই জানেন না। আমি মনিরুল ইসলাম মনু, আপনাদের যাত্রাবাড়ী এলাকার সন্তান। কাজী পরিবারে আমার জন্ম হয়েছে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। দেশকে স্বাধীন করার জন্য বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছি।
মনু আরো বলেন, আমরা পাঁচ ভাই-বোন দুজন আমার বড় দুজন আমার ছোট। আমি আমার পিতার আদর্শ নিয়ে বড় হয়েছি। আমার পিতা মারা যাওয়ার আগে সব সময় বলতেন জীবনে কারো কোন ক্ষতি করবে না। তিনি মৃত্যুর আগে আমাদের ভাইবোনদের উপদেশ দিয়ে গিয়েছিলেন, সততা, স্বচ্ছতা, উদারতা, মানবতা, বাবার দেওয়া এই উপদেশ মেনে আমার পথ চলা।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) যাত্রাবাড়ী এলাকায় আশেকে রাসুল পরিষদের উদ্যোগে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার নানান বিষয়ে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী মনিরুল ইসলাম মনু এ কথা বলেন।
আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন আশেকে রাসুল পরিষদের সভাপতি আলহাজ্ব তুহিনুর রহমান নুরু হাজী। প্রথম পর্যায়ে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন আশেকে রাসুল পরিষদের নেতা হাফেজ রমিজ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে যাত্রাবাড়ী ডেমরা ঢাকা ৫ আসনের প্রতিটা এলাকার জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা তাদের শুভেচ্ছা বক্তব্য নৌকার পক্ষে ভোট চান।
দ্বিতীয় পর্যায় অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন তার ভাগিনা শফিকুর রহমান জিয়া জাতীয় পার্টি দক্ষিণের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও যাত্রাবাড়ী থানা জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, যাত্রাবাড়ী এলাকায় বসবাসরত অবস্থায় আমি কখনো কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়নি। আমার যদি বড় ধরনের অপরাধ থাকে আপনারা বলুন আমি এ পদ থেকে সরে দাঁড়াবো। আমি কখনো কারো কাছ থেকে অবৈধ টাকা পয়সা ধরি নাই। আমি স্বচ্ছ রাজনীতিতে বিশ্বাসী।
মনিরুল ইসলাম বলেন, আপনারা জানেন মোল্লা ভাই মারা যাওয়ার পর নিবাচন কমিশন উপ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। সেই নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের সন্তান আপনাদের ভাই, কিন্তু এ আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে আমার এলাকায় এক ভাসমান বহিরাগত মানুষকে এমপি প্রার্থী করা হয়েছে।
এ সময় সালাউদ্দিনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তিনি একটা খারাপ মানুষ তিনি আমাদের এলাকায় ইমাম সাহেবকে নিজের হাতে মেরেছেন। মানুষকে পানির বাবদ অস্ত্র দিয়ে গুলি করেছে। এই মানুষটিকে কেউ চায় না। অথচ বিএনপি তাকে এমপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। তিনি ১০ থেকে ২০ মিনিট গণসংযোগ চালিয়ে মাঠ ছেড়ে দেন। মাঠে না থেকে তিনি ঘরে বসে এমপি হতে চাই। অথচ মিডিয়ার ভাইদের কাছে নিজের মনগড়া কথা বলে বেড়াচ্ছে। আমরা না কি তার গণসংযোগে বাধা দিচ্ছি।
তিনি বলেন, আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ ইভিএমের মাধ্যমে এ নির্বাচন হবে। আপনারা সবাই ভোটকেন্দ্রে যাবেন। দৌড়ানি সালাউদ্দিনকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করবেন, ভোটের মাধ্যমে পাল্টা জবাব দিবেন।
বিএনপি’র প্রার্থীর কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমি যাত্রাবাড়ী-ডেমরা কৃতিসন্তান আমি নির্বাচিত হলে এলাকায় সরকারের উন্নয়নের জোয়ার অব্যাহত থাকবে। আর সালাউদ্দিন নির্বাচিত হলে সব কাজকর্ম তিনি শ্যামপুরে নিয়ে যাবেন এ এলাকা লুটেপুটে খাবে। কোন উন্নয়ন কর্মকান্ড পেলে, সে যাত্রাবাড়ী এলাকায় কোনো উন্নয়ন করবে না।
মনু বলেন, তাছাড়া আপনারা জানেন নে স্কুল শিক্ষককে ধরে লাঞ্ছিত করে, তার কাছে অনেক মানুষ লাঞ্চনার শিকার হয়েছে। এলাকার মুরুব্বি মানে না। আমি যেহেতু অত্র এলাকার কৃতি সন্তান, তাই আমি নির্বাচিত হলে আপনাদের পাশে থেকে সবসময়ই সেবা করে যাবে। আশা করি আপনারা সেই সুযোগটুকু দিবেন।
এ আলোচনা সভায় সময় উপস্থিত ছিলেন, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক হারুনর রশিদ মুন্না, ৪৮ নং কাউন্সিলর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মুখপাত্র আলহাজ্ব আবুল বাশার অনু, আশেকে রাসুল পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ৫১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান হাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোসলে উদ্দিন জসিম সরদার, ডেমরা আশেকে রাসুল পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডেমরা থানা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠা আহবায়ক আব্দুল আলিম খান, গোলাম রাব্বানী রতনসহ প্রমুখ আশেকে রাসুল পরিষদের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, সাবেক জর্জ বজলুর রহমান, অ্যাডভোকেট শাহানা, আসাদ স্যার যুবলীগ নেতা, ডেমরা থানা জাতীয় পার্টির সভানেত্রী, নাহিদা, ৬৩ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ন আহবায়ক নাহিদ প্রমুখ।