ফেনী (সোনাগাজী) প্রতিনিধি♦
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। সংঘর্ষে সহকারী পুলিশ সুপার (সোনাগাজী সার্কেল) মাশকুর রহমানসহ ৫ পুলিশ ও বিএনপির অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকাল ৪টার দিকে সোনাগাজীর চর চান্দিয়া ইউনিয়নের ওলামাবাজার সড়কের ভৈরব রাস্তার মাথায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বিএনপি নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার বিকাল ৩টার দিকে সোনাগাজীর জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা বিএনপি। সেখানে অবস্থান নিয়ে একই সময়ে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা শুরু করে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জিরো পয়েন্ট ছেড়ে ওলামাবাজার সড়কের ভৈরব রাস্তার মাথায় সমাবেশ শুরু করে বিএনপি। জিরো পয়েন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভৈরব রাস্তার মাথায় জড়ো হন বিএনপি নেতাকর্মীরা। সেখানে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন তারা। বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সড়ক থেকে সরে যেতে বিএনপি নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানায়। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এর ফাঁকে সমাবেশের পেছন থেকে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পুলিশের।
একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। সংঘর্ষ চলাকালে পাঁচ পুলিশ ও বিএনপির অনেক নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় দু’জনকে আটক করে পুলিশ।
এ বিষয়ে সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.খালেদ হোসেন বলেন, ‘টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। সেইসঙ্গে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তাদের সড়ক থেকে সরে যেতে বললে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মাশকুর রহমান, থানা পুলিশের উপপরিদর্শক আরিফুল ইসলাম দোলনসহ পাঁচ পুলিশ আহত হন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বিএনপির দুই নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় মামলা করবে পুলিশ।’
তবে পুলিশের ওপর হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিকালে জিরো পয়েন্টে কর্মসূচির আয়োজন করেছি আমরা। কিন্তু সেখানে সভা শুরু করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। পরে ভৈরব রাস্তার মাথায় সমাবেশ শুরু করি আমরা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। সমাবেশ শুরুর কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে সমাবেশে বাধা দেয়। সেইসঙ্গে লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে সংঘর্ষ বাধে। আমাদের পাঁচ নেতাকর্মী আহত হন। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা চালিয়ে এখন উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে পুলিশ। অথচ আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’
জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির কর্মসূচিতে আমরা বাধা দিইনি। আমাদের পূর্ব ঘোষিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা জিরো পয়েন্টে করেছি। পরে শুনেছি, ভৈরব রাস্তার মাথায় পুলিশের ওপর হামলা করেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। আসলে সোনাগাজীকে আবারও অশান্ত করার চেষ্টা করছে বিএনপি। এজন্য শুরু থেকেই আমরা তাদের প্রতিরোধ করবো বলে আসছি।’