ঠুনকো অ—ব্যবস্থাপনায় বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার চট্টগ্রাম এবং স্টেশন ম্যানেজারকে সাময়িক বরখাস্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি রেলপথ মন্ত্রীকে ছোট নয় বড় অব্যবস্থাপনা বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ (৮ ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামান মনির।
মনিরুজ্জামান মনির বলেন, গত শনিবার রেলমন্ত্রীর নুরুল ইসলাম সুজন চট্টগ্রাম রেল স্টেশন পরিদর্শনকালে অব্যবস্থাপনার দায়ে রেলওয়ে (পূর্ব) বিভাগীয় কর্ম ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) তারেক মোহাম্মদ সামছ তুষার ও চট্টগ্রাম স্টেশন ম্যানেজার রতন কান্তি দেবাশীষকে সাময়িক বহিস্কারের মৌখিক নির্দেশ দেন। যদিও উক্ত অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী করা হলেও প্রকৃত অর্থে তারা দায়ী নন বলে জানা গেছে। দুই কর্মকর্তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশকে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের ‘রাগের মাথায় ভুল সিদ্ধান্ত’ বলে মনে করেন রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি।
তিনি বলেন, অপরিষ্কারের জন্য দায়ী হবে ডিএমও, ডিআরএম নয়। পার্কিং অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী সিসিএম, ষ্টেশন ম্যানেজার নয়। অথচ সাময়িক বরখাস্ত করা হলো ডিআরএম ও স্টেশন ম্যানেজারকে। চট্টগ্রাম নতুন স্টেশনের পরিস্কারের দায়িত্বে রয়েছেন সিসিলন কোম্পানির সুপারভাইজার আঃ মান্নান। পরিস্কারের ব্যবস্থার জন্য সিসিলন কোম্পানির ১৮/২০ জন জনবল থাকার কথা থাকলেও কাজ করেন ৬/৭ জন। প্রতি মাসে পরিস্কারের কাজে নিয়োজিত জনবল দিয়ে সঠিক ভাবে পরিস্কারের কাজ না করে অনেকে টাকা আত্মসাৎ করেন, অদৃশ্য দাপটে পার্কিং এর পাশে কোলিং কর্নার, হোটেল ও লোকজন থাকার জন্য আবাসিক ভাড়া ঘর বানিয়ে প্রতি মাসে সেখান থেকে লক্ষাধিক টাকা আয় করেন।
তিনি আরো বলেন, বিদেশ থেকে বগি আমদানির পরিমাণ বাড়াতে ভালো বগিকে নষ্ট হিসাবে বিক্রির জন্য পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হচ্ছে। ২০ থেকে ২৫ টাকা বাজার দরের সালফিউরিক অ্যাসিড ২০০০ টাকা লিটার দরে কিনছেন। ইঞ্জিন মেরামতের যন্ত্রপাতিসহ রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগে কেনাকাটায় কোটি কোটি টাকার অনিয়ম হচ্ছে। দীর্ঘ ২ বছরেও বুকিং সহকারীদের পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পরও পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। ১৭১ জন গার্ড প্রশিক্ষণ শেষেও নিয়োগ পাচ্ছেন না। ২০১৭—১৯ সালের রেলওয়ের বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগের অনিষ্পন্ন নিয়োগগুলো সম্পন্ন হচ্ছে না। নিয়োগ বিধিমালা ২০২০ সংশোধনে কমিটি গঠন করেছেন আবার জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। রেলওয়ে আবাসিক এলাকাগুলো এতটাই নোংরা যে মনে হচ্ছে রেলওয়ের শ্রমিক—কর্মচারীরা মানুষ নয়। রেলওয়ে হাসপাতাল গুলো নিজেই রোগীতে পরিণত হয়েছে। রেলওয়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙ্গে পড়েছে। আরও অনেক বড় বড় অনিয়ম—দূর্নীতি হচ্ছে। তাদের কাউকে সাময়িক বরখাস্ত করা না হলেও ঠুনকো অব্যবস্থাপনার কারণ দেখিয়ে চট্টগ্রাম ডিআরএম ও স্টেশন ম্যানেজারকে সাময়িক বরখাস্ত সত্যিই দুঃখজনক। ছোট ছোট অ—ব্যবস্থাপনায় কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করছেন কিন্তু বড় বড় অব্যবস্থাপনায় নিশ্চুপ কেন? মাননীয় রেলমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, রাগের মাথায় কাউকে বরখাস্ত না করে রেলওয়ের বড় বড় অব্যবস্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন ।