মো. আবু রায়হান চৌধুরী:
কুমিল্লার হোমনায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে এক দিনমজুর রাজমিস্ত্রিকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করেছে দূর্বৃত্তরা। নিজের আহত স্বামীকে বাচাতে গিয়ে উল্টো দূর্বৃত্তদের শ্লীলতাহানীর শিকার হয়েছেন ওই রাজমিস্ত্রির স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৭ শে এপ্রিল মঙ্গলবার রাত্র আনুমানিক ৮ ঘটিকার দিকে উপজেলার অনন্তপুর গ্রামে। ঘটনার পর থেকে আসামীরা পলাতক রয়েছে বলে জানাগেছে। আহতের নাম নুর আলম (৪২) পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। সে হোমনা উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের জুরু মিয়ার পুত্র। এ ঘটনায় আহতের ছোট ভাই মামুন মিয়া (৩২) বাদী হয়ে ৩০ এপ্রিল একই গ্রামের মৃত. মমতাজ উদ্দিন সরকার এর পুত্র আবু তাহের (৪৮), কুদ্দুস মিয়ার পুত্র রিয়াদ সরকার (২৫), মন্টু মিয়া সিকদার এর পুত্র নুরুল হক (৩০), ফুল মিয়া সিকদার এর পুত্র মো. শামিম সিকদার (৩০), মো. কামরুল সিকদার (২০), জুলহাস মিয়ার পুত্র মো. দুলাল মিয়া,আক্তার হোসেন সিকদার এর পুত্র মেহেদি হাসান (২৫), মোখলেছ সরকার এর পুত্র বাবু সরকার (২০), মৃত. মমতাজ উদ্দিন সরকার এর পুত্র কুদ্দুস সরকার (৫২), মনির সরকার (৪৫) সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। যাহার নং – ৯/৪০, তারিখ- ৩০/০৪/২০২১ইং অভিযোগ ও আহত নুর আলম এর পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে, তাদের সাথে বহু দিন ধরে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ চলে আসছে। সেই শত্রুতার জের ধরেই ঘটনার দিন রাত্র আনুমানিক ৮ ঘটিকার দিকে আবু তাহের (৪৮) ও রিয়াদ সরকার (২৫) এর নেতৃত্বে দেশিয় অস্ত্র দা – রামদা, লোহার রড,ছুরি,লাঠি-সোটা ইত্যাদি নিয়ে অনন্তপুর গ্রামের শাহ আলম মিয়ার চা দোকানের সামনে একা পেয়ে নুর আলমকে হত্যার উদ্দেশ্যে অর্তকিতভাবে আক্রমণ চালায় ও এলোপাথারি ভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করেন। এবং তাদের ছুরিকাঘাতে ডান হাতের তর্জনী আঙ্গুল কেটে হাত হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ডান পা ও বাম পা ভেঙ্গে ফেলে। এসময় তার সাথে থাকা ২৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৫হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এবং তাকে বাঁচাতে তার ছোট ভাই ও তার স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা চালায় এবং শ্লীলতাহানী করে। তাদের শোর চিৎকার ও চেচামেচি শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায়। পরে নুর আলম কে ঘটনাস্থল হতে উদ্ধার করে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার আশংঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে অতিদ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। আহত নুর আলম এর ভাই মামুন মিয়া জানান, ঘটনার দিন রাত্রে নুর আলম অনন্তপুর গ্রামের শাহ আলম মিয়ার চা দোকানের সামনে বসে ছিলেন। এসময় আবু তাহের,রিয়াদ সরকার, নুরুল হক,মো. শামিম সিকদার, মো. কামরুল সিকদার,মো. দুলাল মিয়া,মেহেদি হাসান, বাবু সরকার (২০), কুদ্দুস সরকার, মনির সরকারসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮/১০ অতর্কিতভাবে প্রথমে নুর আলম এর উপর ও পরে তাকে বাঁচাতে তার ছোট ভাই ও তার স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা চালায় এবং মহিলার শ্লীলতাহানী করে। তখন নুর আলমকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার আশংঙ্কাজনক তাকে অতিদ্রুত ঢাকা রেফার করেন। এলাকাবাসী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের আইনের মাধ্যমে দৃষ্টামূলক শাস্তিÍ দাবী করেন। তারা বলেন যে নুর আলম মিয়ার সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা জাতির জনক লজ্জাজনক,কংলঙ্কময় ও ঘৃণিত একটি ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা যেন আর কোথাও না ঘটে সে জন্য জড়িত ব্যক্তিদের অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের মাধ্যমে নজির বিহীন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক। হোমনা থানার চৌকশ অফিসার ও অপরাধীদের আতংঙ্ক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। অতিদ্রুত গ্রেফতার করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারবো বলে আমি আশাবাদী। গ্রেফতার চেষ্টা অভিযান অব্যাহত রয়েছে।