নিজস্ব প্রতিবেদক◊◊
বাংলাদেশ জাতীয় ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এম নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, হিন্দু ট্রাস্টের মাধ্যমে প্রশাসক নিয়োগ দিন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যদি হস্তক্ষেপ করেন, তাহলে তরান্বিত হবে।
তিনি আরো বলেন, আমি যখন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ছিলাম তখন ঢাকায় একটি মন্দির দখলমুক্ত করেছিলাম। অনেক মন্দির সংস্কার করেছিলাম। আমার পাশে তখন রাষ্ট্র ছিল। রাষ্ট্র যদি পাশে থাকে সেখানে কেউ অনিয়ম করতে পারে না।
আমি যতটুকু জানি আমাদের ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে যেমন মসজিদের উন্নয়ন সাধন হয়। তেমনি হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে হিন্দুদের কল্যাণ সাধিত হয়। ঢাকেশ্বরী মন্দির হিন্দু সম্প্রদায়ের জাতীয় প্রতিক। সেই মন্দির নিয়ে যদি প্রশ্ন ওঠে তা কারো জন্য কাম্য নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৯৯০ সালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যখন হামলা হয়েছিল তখন তিনি বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন।
মমতা রানী দাসের মাথায় হাত রেখে তিনি বলেছিলেন, আমি আপনাদের পাশে আছি। অথচ সেই মমতা রানী দাস এখন মৃত্যুসজ্জায় তার পরিবারের সদস্যরা পথপ্রান্তরে ঘুরছে। তারা কেউ মন্দিরের টাকা চায় না, কিন্তু মন্দিরে কেউ দুর্নীতি করুক এটি কোভাবেই বরদাস্ত করা যাবে না। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ঢাকেশ্বরী মন্দির দখলমুক্ত করার আহ্বান জানান।
আজ (৩০ সেপ্টেম্বর) শনিবার সকাল ১১টায় তোপখানা রোডস্থ শিশু কল্যাণ পরিষদে সেমিনার হলে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেবায়েতবিহীন মন্দির পরিচালনার প্রতিবাদ ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে প্রশাসক নিয়োগের দাবিতে প্রতিবাদী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসার সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয় ঐক্য জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ সনাতন পার্টির চেয়ারম্যান সুশান্ত চন্দ্র বর্মন (শান্ত)।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি কেএসপি’র চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান মিজু, গ্রীন পার্টির চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ, দুর্নীতি দমনে তথ্য প্রকাশকারী সংস্থার উপদেষ্টা প্রীতিসারমান বাংলাদেশ ন্যাপের ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, জাতীয় জনতা ফোরামের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিকী তালুকদার, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্য পল্টন দাস, লিটন কৃষ্ণদাস, পার্বতী রানী দাস, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ বেল্লাল হোসেন রাজুসহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে গীতা পাঠ করেন আদিত্য সরকার অভ্র।
সভাপতি মঞ্জুর হোসেন ঈসা তাঁর বক্তব্যে বলেন, শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির সৃষ্টিলগ্ন থেকে বিশেষ করে ১৯৭১ সনে মুক্তিযুদ্ধের সময় যে সেবায়েত এই মন্দির আগলে রেখেছিল আজকে তারা অধিকার বঞ্চিত। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সি এস রেকর্ড হইতে বর্তমান রেকর্ড পর্যন্ত জমি সংক্রান্ত একমাত্র সেবায়েত সত্বেও এই সেবায়েত কেন মন্দিরে অধিকার বঞ্চিত। ১৯৯০সনে ঢাকেশ্বরী মন্দির সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে তৎকালীন জননেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন কালীন সেবায়েত প্রধান মমতা রানী দাস কে জড়িয়ে ধরে আশ্বাস দিয়েছিলেন ক্ষমতায আসলে মন্দির ও সেবাযেতের উন্নয়ন ও সুব্যবস্থা করা হবে কিন্তু দুর্নীতিবাজ সুবিধা বাদীদের দৌরাত্তে আজও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস বাস্তবায়িত হয়নি। বাংলাদেশের সকল মন্দির পরিচালনা ব্যবস্থা সেবায়েত প্রথা প্রচলন থাকলেও ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সেবাযেত কেন বিতাড়িত। মহামান্য উচ্চ আদালতের দুর্নীতি সংক্রান্ত রুল আদেশ চলমান থাকা অবস্থায় সরকারী প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা খরচে মন্দির উন্নয়নের নামে মন্দির অভ্যন্তরে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করে মন্দিরকে বাণিজ্য কেন্দ্র বানানোর প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও সেবায়েতের মতামত ও সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে না। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে ধর্মীয় ব্যানারের অন্তরালে ঘটমান অনিয়ম বন্ধে চলমান সকল কার্যক্রমে সরকারি হস্তক্ষেপ এবং অধিকার বঞ্চিত সেবায়েতের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আপনি/আপনাদের ভূমিকা ও সহযোগিতা কামনা করছি।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান আমার সংগঠন অসহায় সুবিধা ও অধিকার বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কাজ করে। তারই ধারাবাহিকতায় শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের সেবাযেতের প্রতি অবিচার ও অসম্মান এবং অব্যবস্থাপনা দেখে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। উক্ত বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ ও হস্তক্ষেপ পেতে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।
Tags: হিন্দু