নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনা মোকাবেলা, অক্সিজেনের অভাবে সাতক্ষীরা ও বগুড়ায় রোগীর মৃত্যু, এক বছর আগে সব জেলায় আইসিইউ বসানোর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পালনে ব্যর্থতা ও দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক না থাকার ব্যর্থতার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বপদে থাকার সকল নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। বৃহস্পতিবার (৮জুলাই) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন। তারা বলেন, প্রতিদিনই করোনার সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে আইসিইউ’র চাহিদা। কিন্তু, দু:খজনক হলেও সত্য যে, দেশের ৩৫ জেলায় এখনও আইসিইউ নাই। এক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী সকল জেলায় আইসিইউ স্থাপনের নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত সকল জেলায় আইসিইউ স্থাপনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নেতৃদ্বয় বলেন, অক্সিজেনের অভাবে করোনা রোগীর মৃত্যু বাস্তবে অবহেলাজনিত হত্যাকান্ড। এ দায় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এড়াতে পারেন না। এই সকল ব্যর্থতার দায় নিয়েই ব্যর্থতার দায়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে সরকার তখন দেশের প্রত্যেক জেলা সদরের হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা ও হাইফ্লো নেজাল ক্যানুলা না থাকা মেনে নেওয়া যায় না। তারা আরো বলেন, এক বছর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যে অবস্থা ছিল এখনো পর্যন্ত সেই অবস্থায়ই আছে। কোনো ধরনের উন্নতির ছোয়া লাগেনি। যদি উন্নতি হতো তাহলে আজ এত মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়ত না। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ভারতের মতো ছড়ালে ও মৃত্যুর হার একই কারণে হলে বাংলাদেশ মহামারিতে ছারখার হয়ে যাবে এতে কোন সন্দেহ নাই। এটা মাথায় রাখতে হবে ভারতের চিকিৎসাব্যবস্থা আমাদের তুলনায় অনেক উন্নত হলেও তাদের সেখানে করোনা বিভীষিকা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। চলমান পরিস্থিতি দেখে জনমনে আশঙ্কা স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের ব্যর্থতার কারণে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি এক বছর আগে থেকে কাজ শুরু করত তাহলে এ দুর্যোগ মোকাবিলা সহজ হতো বলে মন্তব্য করে নেতৃদ্বয় বলেন, এখনো উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর সুবিধা পৌঁছায়নি। নেয়া হয়নি পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও অন্যান্য কর্মচারী। ফলে জেলা-উপজেলার হাসপাতালে কোভিডসহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসা পাচ্ছেন না রোগীরা। গত দেড় বছর ধরে যখন সারা দেশে করোনা মহামারি চলছে তখন করোনা রোগীর প্রধান প্রতিরক্ষা যেখানে অক্সিজেন, সময় পেয়েও সেটা নিশ্চিত করতে না পারাটা সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের চরম ব্যর্থতা। চরম ব্যর্থতার কারণে জাতীয় সংসদে নিজ দলের সহ সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য দলের সংসদ সদস্যদের কঠোর সমালোচনার পরও কি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বপদে বসে আছেন তা দেশবাসীর বোধগম্য নয়। করোনায় মৃত্যুহারে যে ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতি সরকার কোনওভাবেই তার দায় এড়াতে পারে না। এটা এক ধরনের নিরব হত্যাকান্ড। তারা বলেন, সরকারের দায়িত্বহীনতা, লকডাউন ঘোষনা করেই দায় এড়ানোর চেষ্টা, সমন্বয়হীনতা, গা-ছাড়া ভাব ও আত্মতুষ্টি পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেড় বছর পর এখন আর সরকারের কোনও অজুহাত দেখানোর সুযোগ নেই।