মানববন্ধনে স্বতন্ত্র প্রার্থী অধিকার রক্ষা পরিষদের আহবায়ক মোঃ মোস্তফা আল ইহযায বলেন, এক—এগারোর সেনা নিয়ন্ত্রিত অগণতান্ত্রিক সরকার ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ১% ভোটারের পূর্ব স্বাক্ষর করণ বিধানটি আরপিওতে অন্তর্ভুক্ত করে ছিলো। এর উদ্দেশ্য ছিল, জনগণকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা। ভোটাররা গোপন কক্ষে ভোট দেন। এতে প্রতিনিধি নির্বাচনে তাদের সুরক্ষার পাশাপাশি গোপনীয়তা বজায় থাকে। কিন্তু এক শতাংশ ভোটার যখন নির্বাচনের পূর্বেই স্বাক্ষর করেন এতে তাদের গোপনীয়তা প্রকাশ হয়ে পড়ে যা প্রতিটি ভোটারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ও অসাংবিধানিক। এই প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশের সংবিধান এবং মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এতে হাজার হাজার ভোটার কে ক্ষতির সম্মুখীন করা হচ্ছে।
আমরা মনে করছি, এখনো সময় আছে, নির্বাচন কমিশন যেসব ভুল ত্রুটি করেছে, সেসব ভুলত্রুটি খুব দ্রুত সংশোধন করে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচনী ব্যবস্থা তৈরী করে জনগণের আস্থার প্রতিফলন ঘটাবেন। আমরা নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ১% ভোটারের পূর্ব স্বাক্ষর করণ বিধান বাতিলের দাবি জানাচ্ছি এবং নির্বাচন কমিশনের ভুল ত্রুটি সংশোধন করে আগামী দ্বাদশ সংবাদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির অনুরোধ করছি।
এসময় তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। ২০১১ সালে এসে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার এর বিধান তুলে দিয়ে, সংসদ বহাল রেখে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অগ্রিম ১% ভোটারের স্বাক্ষর প্রদান ধারা ১২(২)(৩এ)(এ) বহাল করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী ব্যবস্থায় বাঁধা সৃষ্টি করে ও অগণতান্ত্রিক নতুন ধারা প্রতিষ্ঠা করে । যেখানে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা উঠিয়ে দিয়েছে , সেখানে এক—এগারোর সেনা নিয়ন্ত্রিত অগণতান্ত্রিক সরকারের করা বিধানের বৈধতা দিয়ে অগণতান্ত্রিক কালাকানুন চালু করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। তাই এই কালাকানুন কে অসাংবিধানিক ও অগ্রহণযোগ্য বলে আমরা মনে করছি।
সংগঠনের সদস্য সচিব, রফিক ইসলাম সম্রাট বলেন, ৫ জানুয়ারী ২০১৪ এবং ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ দুটি নির্বাচন হয়েছে, এসব নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ও অগণতান্ত্রিক বলে স্বীকৃত হয়। এসব নির্বাচনে ১% ভোটারের পূর্ব স্বাক্ষর করণ কালাকানুনের কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ায় সাধারণ ভোটারগণ ভোট কেন্দ্র বিমুখ হয়ে পড়েছে, যা ২০১৪—২০১৮ এ প্রদত্ত মোট ভোটের অনুপাত থেকে দৃশ্যমান। তাই অনতিবিলম্বে আমাদের দাবি মনে ১% ভোটারের পূর্ব স্বাক্ষর করণ বিধান বাতিল করে শর্তহীনভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি ব্যক্ত করেন।
এসময় সংগঠনের পক্ষ থেকে অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এক দফা দাবী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের নিকট উপস্থাপন করা হয়।
১। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে ১% ভোটারের পূর্ব স্বাক্ষর করণ ধারা ১২(২)(৩এ)(এ) বাতিল করতে হবে।
এসময় মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক হুমায়ুন কবির হিরু (সাবেক সাংসদ), মোহাম্মদ আলী আজম ,যুগ্ম আহবায়ক, স্বতন্ত্র প্রার্থী অধিকার রক্ষা পরিষদ, মেজর জেনারেল আমসাআ আমিন (অবঃ) , চেয়ারম্যান, নৈতিক সমাজ, সুলতান জিসান উদ্দিন প্রধান, আহ্বায়ক, বাংলাদেশ জনমত পার্টি, এডভোকেট ইকবাল কবির, প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ জনদরদী পার্টি, আবুল কাশেম মজুমদার ,চেয়ারম্যান বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, মোঃ হাসান সভাপতি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), আবু আহম্মেদ ভুইয়া, আহ্বায়ক, বাংলাদেশ বিদেশ প্রত্যাগত ও প্রবাসী কল্যাণ দল, মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ইত্যাদি সাগর, প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ইত্যাদি পার্ট প্রমুখ।