নিজস্ব প্রতিবেদক:
কবি সুফিয়া কামালকে আধুনিক বাংলাদেশের নারী প্রগতি আন্দোলনের অন্যতম একজন কবি, একজন লেখিকা, ধর্মান্ধতা ও অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অকুতোভয় যোদ্ধা হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন বিশিষ্ট কবি, নারী নেত্রী ও নারী মুক্তিযোদ্ধা কবি নাহিদ রোকসানা।
সোমবার (৩০ নভেম্বর) নয়াপল্টনে নারীমুক্তি আন্দোলনের অগ্রদূত কবি সুফিয়া কামালের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কবি সুফিয়া কামাল ছিলেন জাতির বিবেক। তিনি নারী জাগরণ ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলন ও ৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবিতে তিনি ছিলেন সোচ্চার। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীরা কখনো সুফিয়া কামালকে ভুলবে না।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, কবি সুফিয়া কামাল সমাজ ও দেশের জন্য ভাবতেন৷ যে কোনো আন্দোলনে তিনি ছিলেন সক্রিয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন সক্রিয়। মুক্তিযুদ্ধে তিনি হানাদারদের ভয়ে ভীত ছিলেন না। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছেন। তাঁর জীবন ছিল সংগ্রামের। সমাজ সংস্কারে কাজ করেছেন তিনি। তাঁর বিদ্রোহী চেতনা, আত্মবিশ্বাস ছিল অসাধারণ।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের পক্ষে স্বাক্ষর দান প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন যিনি, তিনিই হলেন কবি সুফিয়া কামাল। যার মানসিক সাহস ও স্বদেশপ্রেমের সর্বোচ্চ পরিচয় পাওয়া যায় মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলিতে। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দুদিন আগে তিনি প্রেসিডেন্ট হাউসে ইয়াহিয়া খানের সাথে বৈঠকে যে যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য রেখেছিলেন। তাঁর মানসিক দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছিলেন তা স্বয়ং ইয়াহিয়া খানকে পর্যন্ত বিস্মিত করেছিল।
সভাপতির বক্তব্যে এম. এ জলিল বলেন, সাহিত্য ক্ষেত্রে রবীন্দ্র-নজরুলের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে উজ্জীবিত হয়ে, তাঁদের প্রশংসায় ধন্য হয়ে, নারী মুক্তি আন্দোলনে বেগম রোকেয়ার সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতার গৌরব নিয়ে এবং দেশবাসীর মুক্তি সংগ্রামের প্রতিটি পদক্ষেপে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে যিনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে উঠেছেন, তিনিই আমাদের কবি সুফিয়া কামাল। যে জীবনের একাধারে ছিল কাব্যসাধনা, নন্দনচর্চা এবং অপর প্রান্তে ছিল সমাজ সংস্কারও প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে অবিরাম সংগ্রাম। এই সংগ্রাম সতত প্রবহমান ছিল তার জন্ম থেকে মৃত্যুর শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত।
জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ সভাপতি এম এ জলিলের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, জয়বাংলা মঞ্চের সভাপতি মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী, গণ অধিকার পার্টি সভাপতি মো. হোসেন মোল্লা, গণতান্ত্রিক ঐক্যের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, ন্যাপ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, বরিশাল বিভাগ সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আ স ম মোস্তফা কামাল, আকরাম হোসেন প্রমুখ।