হযরত বেল্লাল,সুন্দরগঞ্জ থেকে♦♦
স্বামী পরিত্যাক্তা, অর্থ ও বিত্তশালী সুন্দরী নারীদের বিয়ে করে তাদের সর্বস্ব লুঠে নিয়ে স্ত্রীদের তালাক দেয়া নেশা বা পেশা মো. মাইদুল ইসলামের। এভাবে ১১ জন নারীকে বিয়ে করে তাদের নিকট থেকে সুকৌশুলে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে তালাক দিয়েছেন মাইদুল। তালাক দেয়া স্ত্রীদের নিকট থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকা দিয়ে মাইদুল ইসলাম দুর্গম চরাঞ্চলে গড়ে তুলেছেন স্বপ্নের বসতবাড়ি, কিনেছেন ৪ টি মোটরসাইকেল, ২টি ট্র্যাক্টরসহ আরও অনেক কিছু। সেই সাথে তিস্তার সোলার প্ল্যানেল বাগিয়ে নিয়েছেন কর্মচারীর চাকরি। তবে এলাকার অনেকের দাবি মাইদুলের তালাক দেয়া স্ত্রীর সংখ্যা পনের ছাড়িয়ে যাবে। মাইদুল ইসলাম গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা তারাপুর ইউনিয়নের চরখোর্দ্দা গ্রামের মো. ছলিম উদ্দিন মন্ডলের ছেলে। তালাক দেয়া ১১ জন স্ত্রীর মধ্যে ২ জন স্ত্রীর ৩ জন সন্তান রয়েছে। সন্তানরা তার মায়ের সাথে থাকেন।
সর্বশেষ তালাক দেয়া স্ত্রী মৌসুমী আক্তারের আদালতে দায়ের করা মামলা এবং থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী একই ইউনিয়নের নাচনী ঘগোয়া গ্রামের মৃত্যু মহসীন আলীর স্বামী পরিত্যক্তা কন্যা মৌসুমী আক্তারকে ২ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন মাইদুল। বিয়ের পরপরই মৌসুমীর নিকট থেকে সুকৌশুলে পূর্বের স্বামী নিকট থেকে দেনমোহর ও ভরণ পোষন বাবদ জমা থাকা ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর মৌসুমীর নিকট আরও ২ লাখ টাকা দাবি করে। যা মোবাইলের মেসেজে সংরক্ষিত রয়েছে। টাকা না দিলে তাকেও তালাক দেয়ার হুমকি দেয় এবং চলতি মাসেই চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তালাকের কাগজ পাঠিয়ে দেয়।
মৌসুমি আক্তারের বলেন, তথ্য গোপন করে মাইদুল তাকে বিয়ে করেছে। বিয়ের ১৫ মাসের মধ্যে সে ৫ মাসও ঘরসংসার করতে পারেনি, তার শ্বশুড়, শ্বশুড়ি, ননদ, ও স্বামীর শারীরিক এবং মানষিক অত্যাচারে করে। বিয়ের পরে এক মাসের মাথায় তার নিকট থেকে ট্র্যাক্টর কেনার কথা বলে ৫ লাখ টাকা নেয়। গত ২মাস থেকে মোবাইলের মেসেজের মাধ্যমে এবং মৌখিকভাবে ২ লাখ টাকার দাবি করে। টাকা না দিলে তালাক দেয়ার হুমকি দেয়। সে মোতাকে গত এক সপ্তাহ হল তালাকের কাগজ পাঠিয়েছে। এনিয়ে প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালত এবং পরে থানায় অভিযোগ দিলে কোন সুরাহা করতে পারেনি তারা। এঘটনার পর সে জানতে পারে ১১ জনের বেশি স্ত্রীকে সে এভাবে তালাক দিয়েছে। তার সংগ্রহে চারজনের কাবিনের কাগজ রয়েছে। পিতাহারা অসহায় মৌসুমী প্রশাসনসহ সমাজের নিকট ন্যায় বিচার চান।
একই দাবি তালাকপ্রাপ্তা মনোয়ারা বেগম, নুরবানু বেগম, আফলী বেগম, শাপলা বেগম ও হাফিজা বেগমসহ অন্যাদের। তালাকপ্রাপ্তা অনেকা মানবেতর জীবন যাপন করছে। একই কৌশুল অবলম্বন করে তাদের নিকট থেকেও অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে তালাক দেয় মাইদুল।
স্থানীয় মো. আব্দুর রহিম মিয়ার বলেন, মাইদুল আসলেই একজন দুষ্ট প্রকৃতির ছেলে। সে দীর্ঘদিন থেকে বিত্ত, বৈভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসহায় সুন্দরী নারীদের বিয়ে করে তাদের সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়ে তালাক দেন।
মাইদুল ইসলামের বলেন, যে সব নারীদের তালাক দেয়া হয়েছে, তারা তার বাবা, মা, ভাই ও বোনদেরকে মেনে নিতে পারেনি। প্রতিনিয়ত সংসারের অশান্তি সৃষ্টি করেছিল। সে কারণে তাদেরকে তালাক দেয়া হয়েছে। তার দাবি সে চারজন স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে। তবে তালাক দেয়া স্ত্রীদের নিকট থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলামের বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সে ১০ জন স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে। সে কাউকে তোয়াক্কা করে না। স্বামী পরিত্যাক্তা সুন্দরী নারীদের বিয়ে করে তাদের নিকট থেকে যৌতুক বাবদ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে তালাক দেন মাইদুল। সর্বশেষ মৌসুমী আক্তারের বিষয় নিয়ে একাধিক বার গ্রাম আদালতের মাধ্যমে নোটিশ করে হয়েছিল তাকে হাজির করা সম্ভাব হয়নি।
থানার ওসি মো. মাহবুব আলম জানান, মৌসুমীর নিকট থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে বহুবার থানায় ডাকা হয়েছে। কিন্তু সে পুলিশের ডাকে সারা দেয়নি। থানায় মামলা করার মত অভিযোগ না থাকায় এজাহার