সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি মিজমিজি এলাকার সন্ত্রাস ও দুর্নীতিবাজ মফিজুল ইসলাম মজুর কর্মকান্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন। বিগত ৮/১০ বছরের ব্যবধানে জাল টাকার ব্যবসা-অবৈধ ভাবে ভুয়া দলিল বানিয়ে মানুষের জমি দখল ও অবৈধ তিতাস গ্যাস সংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকার অর্থ বনে গেছেন। এখন অবৈধ অর্থের প্রভাব খাটিয়ে তাঁর নিজ এলাকায় এাসের আধিপত্য বিস্তার করেছেন। এতে করে সমাজের সাধারণ নীরহ মানুষ তাঁর অসামাজিক কর্মকান্ডে মূখ ফুটে নারাজ হয়ে পড়েছেন।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, হিরাঝিল-মিজমিজি এলাকায় সাধারণ মানুষের জমি দখল করে একাধিক বহুতল ভবন নির্মাণ করে মার্কেট কিংবা ভাড়াটিয়া ব্যবসা চালু করেন তিনি। এ ধরনের একাধিক বহুতল ভবনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে ভাড়াটিয়া ব্যবসা পরিচালনা করেন। এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার বসত বাড়ি-ঘরের অবৈধ চুক্তিতে মোটা অংকের অর্থের বিনিময় গ্যাস সংযোগ দিয়ে থাকেন মজু নামের প্রতারক। এবং তাঁরই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভাড়াটিয়াদের তাঁর নিজেদের লালিত-পালিত পোষা সন্ত্রাস বাহিনী দিয়ে ফিটিং কিংবা অবৈধ অর্থ দাবি করেন। জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা-সোনারগাঁও আরো বিভিন্ন অঞ্চলে অবৈধ ভাবে জমি বায়না-ক্রয় করে। একই জমি ৩-৪ জনের কাছে বিক্রয় করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ব্যাপক ভাবে অভিযোগ গড়ে উঠেছে মজু নামের ভূমি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। ইতিপূর্বে তিনি জাল টাকার ব্যবসা বাণিজ্য করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ধরা খেয়ে সমাজে অপমান-অপদস্থ্য হয়ে থাকেন। এধরনের নানা প্রকার অপকর্মের দায়ে একাধিক মামলার আসামী বলে জানাগেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মজু ও মনির উভয় পিতা সাইজদ্দিন, সাং মিজমিজি পাইনাদি, থানা সিদ্ধিরগঞ্জ, জেলা নারায়ণগঞ্জকে। তাঁদের অবৈধ কর্মকান্ডের ব্যাপক অভিযোগ সূত্র পাওয়া গেলে, তারই পরিবারের সমাজিক শিক্ষিত-শিক্ষানুরাগী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মো: মজিবুর রহমান উক্ত বিষয় গুলো একাধিক বার সুদ্রাতে বললেও, তাঁর পরেও কোন প্রকার তাঁদের অনিয়ম থেকে থেমে থাকেননি। এধরনের বিষয় নিয়ে সূত্রপাত ধরে গত (৮ জানুয়ারি) শুক্রবার জুম্মার নামাজ আদায় কালে, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘সিদ্ধিরগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের’ মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়ে এক পর্যায়ে ধরাধরি-হাতিহাতি শুরু করেন মজু গংরা। এসময় মসজিদের মুসল্লিদের মধ্যে হৈ-চৈ শুরু হতে থাকলে, মসজিদের ইমাম মাইকিং করে উভয়ের মধ্যে সমঝোতর কথা প্রদান করেন তিনি।
এবিষয়ে মজু মিয়া বলেন, ‘সিদ্ধিরগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের’ সভাপতি মজিবুর রহমান ও আমি সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল আছি। আমাদের মধ্যে দন্দ সৃষ্টি হয় নামাজের মধ্যে কারেন্ট গেলে, জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকে না। এর জন্য চার সপ্তাহ ধরে মসজিদের মুসল্লিদের কাছ থেকে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা উঠিয়ে থাকি জেনারেটর কেনার জন্য। কিন্তু তিনি একদিনও এই মসজিদে নামাজের জন্য আসেনা এবং এক মাত্র একদিন নামাজে এসে ওই টাকার হিসাব চায় তিনি। এটি হিসাবে গড়-মিল হলে এক পর্যায় তাঁদের সন্তান-সন্ততি ও দল-বল নিয়ে আমাদেরকে হামলা চালান। এবং তিনি উল্লেখিত অনিয়ম-দুর্নীতি-সন্ত্রাসের কথা অস্বীকার করেন।
মজিবুর রহমান বলেন, মজু ও মনির চক্রটি আমাকে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মসজিদের মধ্যে হামলা চালান। এধরনের হামলার দায়ে আমি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি জিডি প্রদান করে থাকি। এটি আমার উপর এটি একটি অপরিকল্পিত হামলা। কারণ তাঁরা সমাজে অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে যুক্ত। এবং ভুমিদস্যু, চাঁদাবাজ, জমির দলিল নকল করে সাধারণ মানুষের জমি দখল ও জাল টাকার ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ায়। আমি বিভিন্ন সময়ে বাধা প্রয়োগ করলে, আমার ক্ষোভ ও অসন্তেষ্ট প্রকাশ করতেন। যাহার প্রেক্ষিতে এধরনের হামলা আমার উপর অপরিকল্পিত। কারণ তাঁরা অবৈধ ব্যবসা বাণিজ্য করে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি ও একজন সৎ নিষ্ঠবান ব্যক্তি। এলাকার রাস্তাঘাট-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সমাজসেবা মূলক কর্মকান্ডের সাথে ছোট বেলা থেকে জড়িত। আওয়ামীলীগের দু:সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে ব্যাপক ভাবে কাজ করে ছিলাম । এখন দল ক্ষমতায় থেকেও যদি ওই ধরনের মূখশধারী বিএনপি পন্থী সন্ত্রাসীদের কাছে লাঞ্ছিত হতে হয়, তাহলে দল করে লাভ কি?
তিনি আরো বলেন, আমার এধরনের হামলার কারণে, আমার এলাকার শতাধিক জনগণ আমার হয়ে থানায় গিয়ে আইনি ব্যবস্থার জন্য পুলিশকে জোড়ালো ভাবে বলেন। তারপরেও আমি সাধারণ জনগণকে একটু ধৈর্য্য ধরার কথা বলি। এবং এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান সন্ত্রাস মজুকে ফোন করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিকেও বিষয়টি কঠোর ভাবে আইনি পদক্ষেপের কথা জানান তিনি।