নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় পার্টির কো- চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেছেন, বীর বাঙ্গালী যখন মহান একাত্তরের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী ও মহান স্বাধীনতা অর্জনের সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছে, ঠিক সেই মুহুর্তে দেশের শিল্প সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিরোধী গোষ্ঠী আবারো পবিত্র ধর্মকে অপব্যবহার করে একাত্তরের মতো ফনা তুলে বাঙ্গালীর উন্নয়ন অগ্রগতির বাধাগ্রস্থ করার অপচেষ্টা করছেন। কিন্তু কোনো সাম্প্রদায়িক অপশক্তি হুঙ্কারে পথ হারাবে না ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ।
শনিবার দুপুরে নিজ নির্বাচনী এলাকা দোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মিতব্য ভাষ্কর্সের সামনে দ্রুত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন ও ভাষ্কর্স শিল্প বিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণজাগরণ গড়ে তোলার লক্ষ্যে মানব- শৃঙ্খল কর্মসূচীতে সভাপতির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
বাবলা বলেন, সমৃদ্ধও বিশ্বদরবারে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের যে উজ্জ্বল ভাবমূর্তি বিরজমান তা বিনষ্ট করার অপচেষ্ঠা চলছে। কিন্তু একাত্তরের পুরো বাঙ্গালী জাতি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকহানাদার বাহিনীর পাশাপাশি তাদের দোসরদের পরাজিত করে ছিল, ঠিক তেমনি এবারও বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতুত্বে ফনা তোলা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিরোধ করার জন্য দেশের সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন, ধর্মপ্রাণ ও প্রগতিশীল জনতা ঐক্যবদ্ব রয়েছে।
ঢাকা-৪ এর সাংসদ বাবলার উদ্যোগে আয়োজিত এই মানব শৃঙ্খল কর্মসুচিতে ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু এমপি, ৪৮ নং ওর্য়াড কাউন্সিলর আবুল কালাম, সংরক্ষিত কাউন্সিলর নাজমা খোকন, জাপা কেন্দ্রীয় নেতা সুজন দে, শেখ মাসুক রহমান, ইব্রাহীম মোল্লা, ডিকে সমীর, আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াসউদ্দিন গেসু, মাইনুদ্দিন চিশতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আওলাদ হোসেন, ফয়সাল চিশতী, ইন্দ্রজিত দাস, সুনিল টাইগারসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধনে কয়েক সহাস্রাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
মানব শৃঙ্খল কর্মসুচিতে বাবলা বলেন, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, তুরষ্ক, ইরাক, মালেশিয়া, পাকিস্তানসহ পৃথিবীর প্রায় সকল মুসলিম প্রধান দেশে স্ব স্ব দেশের ঐতিহ্য ও জাতির পিতার প্রতিকৃতি আকারে শতশত ভাষ্কর্স শিল্প স্থাপিত হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। কেউ যেন ভুলে না যায়, বাংলাদেশে ইসলামের ধারক বাহক হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর হমান, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু, ওআইসিতে বাংলাদেশকে অর্ন্তভুক্ত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করেছিলেন পল্লীবন্ধু এরশাদ। শুক্রবারে সরকারি ছুটি ঘোষনাও তিনি করেছিলে। ঢাকাকে যে মসজিদের নগরী বলা হয়, তার রুপকারও আমার প্রয়াত নেতা এরশাদ । আর আাজকের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যে ইসলাম ও মুসলমানের জন্য নিবেদিত প্রাণ তা সর্বজন স্বীকৃত ।
আবু হোসেন বাবলা আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিডের মতো মরণঘাতি বৈশ্বিক মহামারী সফল ভাবে মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে উন্নত-সমৃদ্বশালী ও আত্মনির্ভরশীল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলছে ঠিকত তখনই একাত্তরের পরাজিত গোষ্ঠী বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতাকে উস্কে দেওয়ার অপচেষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভাষ্কর্স শিল্পের বিরোধিতার নামে দেশের শান্তিময় স্থিতিশীল পরিস্থিতি বিনষ্ট করার অপচেষ্ঠা করছে।
সমাবেশে তুরষ্কের রাজধানী আঙ্কারায় বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষ্কর্স স্থাপনের ঘোষনা দেওয়ায় তুরষ্ক সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে জাতীয় পার্টির কো- চেয়ারম্যান ও ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সৈয়দ আবু হোসেনবাব আরো বলেন, যখন আমাদের দেশে একটি সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ গোষ্ঠী আমাদের পবিত্র ইসলামধর্মের অপব্যাখ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্সসহ বাংলাদেশের শিল্প, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের পরিচয় বহন করে এমন ভাষ্কর্স শিল্প ভাঙ্গার হুমতি দেয়, তখন তুরষ্কের মতো একটি মুসলিম দেশে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্স স্থাপনের ঘোষণা নিঃসন্দেহে উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর মুখে চপেটাঘাতের সামিল। সেইদিন বেশি দুরে নয়, যে দিন, গোটা দুনিয়ার স্বাধীনতাকামী মানুষর নেতা হিসেবে পুরো বিশ্বময় বাঙ্গালী জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপিত হবে।