আব্দুল হালিম নিশাণঃ
ঢাকার একটি পার্শ্ববর্তী শহর নারায়ণগঞ্জ। ঢাকা মূখী নারায়ণগঞ্জ লিংক-রোড ঢাকা-সিলেট-ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ডেমরা সড়ক মিলে গুরুত্বপূর্ণ চতুর্থ পয়েন্টে যুক্ত হয়েছে। সড়ক গুলো পারাপারে গন-মানুষের জানমালের কোন প্রকার নিরাপত্তা নেই, বরং সড়ক পারাপারে মানুষের জীনের ঝুঁকি পোহাতে হয়। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন নারায়ণগঞ্জ।
প্রতিদিনের তালিকায় বিভিন্ন শ্রেনী পেশাজীবীর মানুষ পরিবহণ যান চলাচলে অভ্যস্থ্য থাকেন। সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নিজ গন্তাব্য স্থানে পৌছার লক্ষে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট গুলো ঝুঁকির সাথে ব্যবহার করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে সড়ক পারাপারে মানুষ অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
অনুসন্ধান মতে, গত দশ বছরে প্রায় শতাধিক লোকজন মারা গেছে সাইনবোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ এই মেইন টার্নিং পয়েন্ট থেকে। শুধুমাত্র সড়ক পারাপারের জন্য। প্রতি ছয় মাসে এ সড়কটির চত্বরটি অতিক্রম করতে প্রায় ৫% মানুষ মৃত্যু বরণ করেন। এবং সর্বোচ্চ আহতের সংখ্যা প্রায় ৩০%বেঁড়ে গেছে।
আগের তুলনায় ঘটনার সূত্রপাত বাঁড়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে, মহাসড়কটি চতুর্থ লেনে উন্নিত হওয়ার কারণে। সে ক্ষেত্রে পরিবহণ আরোহীরা খোলা রাস্তা পেঁয়ে সর্বোচ্চ গতিঁেবগে যান-চলাচল করে থাকেন। বিশেষ করে উন্নত বিশ্বের মতো আমাদের দেশেও সড়ক আইন রয়েছে।
কিন্তু ট্রাফিক সড়ক আইনকে তোয়াক্কা না করে, স্ব-স্বাধীনতায় ব্যস্ত জীবন পার করেন অনেকে। যার কারণে আমাদের মানুষের আইনের ফাঁক-ফোকর অনেকটা মনে পরে না। বাংলাদেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে কিংবা ফ্লাইওভার সেতুতে সর্বোচ্চ গতিবেঁগ বিলবোর্ড আকাড়ে চিত্র ধারন করা রয়েছে। সে সকল চিত্রটি পরিবহণ চালকদের শতকড়া ৯০% চোঁখে স্পর্শ লাগে না। এবং প্রতি ১০% লাগলেও কোন প্রকার তারা আমলে নিচ্ছেনা। এতে করে বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে সড়কে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৩০% নেমে এসেছে। এবং গুরুত্বপূর্ণ আহতের সংখ্যা ৬০% দাঁড়িয়েছে।
সড়ক (¯েøাগানের মতে) একটি সড়ক দুর্ঘনা, পরিবারের জন্য, সাড়া জীবনের কান্না। কাজেই পরিবহণের ঝুঁকি কমাতে হলে “ ওভার ব্রীজের” বিকল্প কোন অংশ নয়।
এধরনের সাইনবোর্ড এলাকার গুরুত্বপূর্ণ গোল চত্বরটিতে ওভার ব্রীজ দেওয়া হলে, দিনে দিনে অনেক অংশে মানুষের ঝুঁকি কমে আসবে। বিষয়টি নিশ্চত করেছেন প্রতিনিয়ত ট্রাফিক পুলিশ ডিউটিরত কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্টদের মতে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ সাইনবোর্ড এলাকায় সড়ক পারাপারে মাসে ২/৩ জন লোক মৃত্যু বরন করেন। সে সাথে গুরুত্বর আহতের সংখ্যাও অনেক বেশি। এবং সড়ক শৃংখলা ও যানজট নিরসনের ক্ষেত্রে ট্রাফিক-পুলিশ হাইওয়ে-পুলিশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, দিন-রাত পরিশ্রম করে ডিউটি পালন করে যাচ্ছেন। এমন ডিউটি পালন কালে অনেক পুলিশ সদস্য মৃত্যু-গুরুত্বর আহতেরও ঘটনা চিত্র রয়েছে বলে সূত্রমতে জানাগেছে।
সরেজমিন পরিদর্শন কালে সাংবাদিকদের সড়ক পথচারীরা জানান, আমরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপারে অভ্যস্থ থাকি। এধরনের গুরুত্বপূর্ণ গোল চত্বরটিতে ওভার দেওয়া হলে, আমাদের ঝুঁকি আর কোন অংশেই থাকবেনা। এবিষয়ে সড়ক বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটু গুরুত্বের সাথে নজরধারী করলে। ওভার ব্রীজটি হওয়া সম্ভব। সে সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র হস্তক্ষেপ কামনা করেন সড়ক পারাপারের পথ-যাত্রীরা।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের টিআই শরিফুল ইসলাম জানান, ভাই আপনি গুরুপূর্ণ একটি সংবাদে হাত দিয়েছেন। এধরনের সংবাদ কোন সাংবাদিকের চোঁখে পড়ে না। এ সংবাদটি প্রচার করলে, জাতি আপনাকে অনেক দুরে ঠেঁলে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত সাইনবোর্ড এলাকায় ট্রাফিক পুলিশসহ সকলে ঝুঁকির সাথে ডিউটি পালন করে যাচ্ছি। সে সাথে এলাকার সাধারন পথচারীরা, সড়ক পারাপারে প্রতিটি পয়েন্টে ঝুঁকি পোহাতে হয়। এধরনের গুরুত্বপূর্ণ গোল চত্বরটিতে একান্ত “ওভার ব্রীজ” প্রয়োজন। এবং সাইনবোর্ডের ডেমরার পার্শ্ববর্তী মহাসড়কের কিছু অংশ “ইট সলিং” রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। যা সড়ক বিভাগের কোন নজরে আসে না। আপনারা বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরলে, সকল বিষয়ে পরিবর্তন আসবে বলে জানান তিনি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার (ওসি) মো: কামরুল ফারুক বলেন, সাইনবোর্ড একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, এটি একটি চতুর্থ পয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সড়ক পারাপারে মানুষের কোন অংশে জীবনের নিরাপত্তা নেই। মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে হলে “ ওভার ব্রীজের” করা অতি প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে না.গঞ্জ জেলার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাইনবোর্ড এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে “ওভার ব্রীজ” প্রয়োজন, তবে কিভাবে ওভার ব্রীজটি হবে। এর নকশা এবং ডিজাইন চলছে আমাদের মাধ্যমে। তবে এবছরে আমাদের করা সম্ভব না। আগামী ২০২১ সালের অর্থ বছরের ডিসেম্বার মাসে হওয়ার সম্ভবনা বেশি। তিনি বলেন, ওভার ব্রীজের প্রজেক্ট প্রিপারেশন এপ্রুভাল নেওয়া, ইষ্টিমেট প্লানিং এর অংশ বিশেষ এটা কাজ চলছে। তবে এপ্রুভালের জন্য এক বছর লেগে যাবে বলে তিনি জানান।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো: জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা সাইনবোর্ডের ওভার ব্রীজটি মাথায় রেখে, আমি বিশেষ করে, সড়ক বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমের সাথে অনেকবার মিটিং করেছি। কিন্তু তারা করবে করবে বলে অনেক সময় পার করে দিছে। তারা গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বিভাগের দায়িত্বে থেকেও, তাঁদের কোন অংশে দায়িত্ব নেই। সকলে সকলের জায়গা থেকে দায়িত্বের সাথে সমাজের লক্ষে ভালো কাজ করা প্রয়োজন। সাইনবোর্ডের ওভার ব্রীজটি দ্রæত করা এখন অতি প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।