নিজস্ব প্রতিবেদক:
অপহরণের পর চট্টগ্রামের সাংবাদিক গোলাম সরোয়ারকে অবর্ণনীয় নির্যাতন, অর্ধমৃত ও অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় ফেলে রাখা মুক্ত সাংবাদিকতা তথা স্বাধীন গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধে চলমান হুমকি, ভয়ভীতি ও নির্যাতনের নিষ্ঠুর ধারাবাহিকতা মাত্র বলে মন্তব্য করে অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।
মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ দাবী জানান।
তারা বলেন, ইতোপূর্বেও নিখোঁজ সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের অন্তর্ধান রহস্যের কোন সমাধান জাতি দেখতে পায় নাই, বরং উল্টো নিজ দেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের মত বানোয়াট মামলায় তাকে গ্রেফতার এবং অমানবিকভাবে হয়রানি করে কারাগারে রাখা হয়েছে যা নিন্দনীয় ও উদ্বেগজনক।
নেতৃদ্বয় বলেন, রাষ্ট্রের যে কোন একজন নাগরিক নিখোঁজ হলে সেখানে রাষ্ট্র তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বই হয়ে যায় দ্রæত তাকে উদ্ধার করা এবং অনুসন্ধানের মাধ্যমে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করা। কিন্তু, আমাদের রাষ্ট্রে তা হচ্ছে না কেন এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ফলে সমাজে ও রাষ্ট্রে এক ধরনের অস্থিরতা ও উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
তারা চট্টগ্রামের সাংবাদিক গোলাম সরোয়ারের নিখোঁজ হওয়া এবং নির্যাতনের পর আধামরা অবস্থায় তাকে ফেলে রাখাকে কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলে মন্তব্য করে আরো বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী উদ্ধারকালে তার আর্তনাদ ‘ভাই, আমাকে মাইরেন না, আমি আর নিউজ করব না’- শুধুই নির্যাতনে অপ্রকৃতস্থ অসহায় ব্যক্তির স্বগোক্তি নয় বরং সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের ওপর নির্যাতন এবং সাহসী সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধের ভয়াবহ বর্বরতারই প্রমাণ বহন করছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, প্রায় প্রতিনিয়ত সাংবাদিক নির্যাতন এবং গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে হামলা-মামলার ঘটনা ঘটলেও সরকার এই সকল বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনের ক্ষেত্রে উদাসিনতার পরিচয় দিচ্ছে। বরং একের পর এক ঘটনার কারণে ‘মুক্ত গণমাধ্যম ও স্বাধীন সাংবাদিকতা’ বিষয়ে সরকারের কথামালা আজ প্রশ্নবিদ্ধ।
তারা বলেন, সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা-মামলা ও নির্যাতন-নিপীড়ন এমনকি অপহরণ-গুমের মতো ঘটনা কেন সরকার, তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টরা গুরুত্বসহকারে দেখছেন না জনমনে আজ সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং সে কারণেই স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে যা মুক্ত গণমাধ্যম ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি। বরং এ ধরনের সাংবাদিক নির্যাতন প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের অবমাননা ও মুক্ত সাংবাদিকতার সাংবিধানিক অঙ্গীকারকে পদদলিত করারই নামান্তর।