বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বে বর্তমানে সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার মোতাবেক “সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন” প্রণয়নের দাবীতে এক শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত করা হয়।
গতকাল ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুর ২ ঘটিকায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্ত্বর হতে আরম্ভ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, তেজগাঁও, পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা এবং স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের মাননীয় সভাপতি দীপংকর শিকদার দীপুর সভাপতিত্বে উক্ত শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা এবং স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি অনুপ কুমার দত্ত, গৌরাঙ্গ মন্ডল, ধ্রুবপদ পাল, সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দলীয় মুখপাত্র এবং বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি)-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. দুর্জয় দে সঞ্জয়, অ্যাড. বাসুদেব গুহ, অ্যাড.পিসি হালদার, নমিতা বিশ্বাস, এ্যাডভোকেট সুবোধ, এ্যাডভোকেট দেবাশীষ পান্ডে, মনোরঞ্জন মধু, নিহার হালদার, প্রবীণ হালদার, লিটন কৃষ্ণ, রূপম সরকার, বিশ্বজিৎ সরকার, উমেশ দাস, ডা. অনিন্দ দত্ত, জয়দেব বিশ্বাস, অবি অভিরাম সূত্রধর, এ্যাডভোকেট প্রাণকৃষ্ণ, সোহাগ উজ্জল কর্মকর প্রমুখ।
উক্ত পদযাত্রায় বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাথে একত্বতা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি)-এর কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক ডাঃ রাম প্রসাদ দেবনাথ এর নেতৃত্বে ডাঃ শ্যামল দেবনাথ, ডাঃ রাজিব দাস, অর্জুন দেবনাথ, সজিব দাস, তপু দাস, নিতাই শীল, পরিমল শীল, বাদল শীল, প্রহলাদ দাস, প্রবাস দাস প্রমুখ ও বাংলাদেশ সনাতন মহিলা পার্টির আহ্বায়ক ডাঃ শেফালি ঘোষ, বাংলাদেশ হিন্দু লীগের সভাপতি দীপক, সাগর কর্মকার, বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের বরুন চন্দ্র সরকার, শ্যামল নাগ, সন্তোষ চন্দ্র দাস, কল্লোল হাজরা, সমীর কুমার সূত্রধর, উত্তম কুমার দাস, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সন্তোষ কুমার মাহাত প্রমুখ।
হিন্দু কল্যাণ জোটের শ্যামল দাস, সহ দেশের সাধারণ জনগণ সমবেত হয়ে উক্ত পদযাত্রা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
সভাপতি দীপংকর শিকদার দীপু তাঁর এক বিবৃতিতে জানান “বাংলাদেশ নামক অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে একদল কুচক্রী মহলের ইন্দনে যেভাবে সংখ্যালঘুদের উপর যেভাবে নির্যাতন, নিপীড়ন বেড়েছে তা যে কোন অবস্থার জন্য হুমকীস্বরূপ।
দেশের সংখ্যালঘুদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়াছে, একজন সংখ্যালঘূ হিসেবে আর সইতে পারছি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কেউ যেন সংখ্যালঘু মনে নিজেদের ছোট না করেন, কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্যি যে, আমাদের উপর নির্যাতন নিপিড়ন পাকিস্থানেও হয় কিনা জানতে ইচ্ছে করে! প্রয়োজনে এ অত্যাচার, নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম-আন্দোলন চলবে।
আমরা অতিতেও রক্ত দিয়েছি, ভবিষ্যতেও স্বাধীনতা ও দেশ মাতাকে রক্ষার জন্য রক্তদিতে আমরা কুণ্ঠবোধ করবো না। প্রয়োজনে আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তাই বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক অনতিবিলম্বে “সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন” প্রণয়নের জোর দাবী জানাচ্ছি।
সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র বলেন, দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবীগুলো, নিপিড়নের চিত্রগুলো যেন কেবল পত্রিকার পাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ। বিচার ব্যবস্থা দুর্বলতার জন্য আজ স্বাধীন দেশে হিন্দুরা পরাধীন। হিন্দুরা অধিকারচ্যুত, অসহায়, সম্বলহীন। তাই রাজপথে এতো আন্দোলন করা হলেও হিন্দুদের দাবীগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কান পর্যন্ত পৌছায় না। সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিজ এলাকায় ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জে দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে যা অত্যান্ত লজ্জাজনক ও নিন্দনীয়। তাই আমাদের নির্যাতনমুক্ত সুন্দর সমাজ দান করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে করজোরে অনুরোধ করছি। একই সাথে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক অনতিবিলম্বে “সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন” প্রণয়নের জোর দাবী জানাচ্ছি।
মুখপাত্র সুমন কুমার রায় তাঁর বক্তব্য বলেন, “হিন্দুদের উপর একের পর এক হামলা, নির্যাতন, দলবেঁধে সাম্প্রদায়িক আক্রমণ, হিন্দু বাড়ীঘর ভাংচুর-লুটপাঠ, মঠ মন্দির ভাংচুর, দেশত্যাগে ভয়ভীতি প্রদর্শন’সহ মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার, চাকুরীচ্যুত প্রভৃতি যেন এক নিত্য ঘটনা। শুধুমাত্র এদেশের হিন্দু সংখ্যায় কম বলে এমন নির্যানতন সইতে হচ্ছে? এটা একটা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের জন্য হুমকীস্বরূপ। যতই অত্যাচার, নির্যাতন, নীপিড়ন করা হোক না কেন জন্মভূমি প্রিয় মাতাকে ছেড়ে আমরা দেশত্যাগ করবো না। আমরা লড়াই করবো, প্রয়োজন হলে অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষায় অসাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে। অনতিবিলম্বে প্রত্যেকটি ঘটনার আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিতসহ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার মোতাবেক সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের আহবান জানান।
শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত পদযাত্রায় বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার মোতাবেক “সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন” প্রণয়নের দাবী ও এতদবিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।