প্রচণ্ড গরমের মধ্যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কাল প্রথম ওয়ানডে খেলে জিতেছে বাংলাদেশ। এই দাবদাহের মধ্যেই আগামীকাল তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলবে দুই দল। বেলা একটায় খেলা শুরু হওয়ায় ক্রিকেটারদের জন্য এই গরমের মধ্যে খেলা একটু বেশিই কঠিন।
তবে গরম আবহাওয়ার মধ্যে ওয়ানডে খেলার জন্য নিজেদের আগে থেকেই প্রস্তুত করেছেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন যেমন ম্যাচে শরীরের পানিশূন্যতা কাটাতে পানি, স্যালাইন, হাইড্রোয়েড পান করেছেন নিয়মিত।
এর মধ্যেই বোলিংয়ের সঙ্গে বাড়তি দায়িত্ব নিতে চাইছেন সাইফউদ্দিন। ব্যাটিং লাইনআপে আরেকটু আগে নামতে চাইছেন।আজ বিসিবির পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় সাইফউদ্দিন বলেছেন, ‘সিরিজের আগে একটা অনুশীলন ম্যাচ খেলেছি বিকেএসপিতে। ধারণা করেছি, এই গরমে কীভাবে নিজের প্রস্তুত রাখতে হয়। ওভারের মাঝে পানি খাওয়া, স্যালাইন ও হাইড্রোয়েড খাওয়া…এগুলোতে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছি। বাউন্ডারি সীমানায় পানি, স্যালাইন এসব রেখেছি। কিছুটা কষ্ট হয়েছে। তবু চেষ্টা করেছি নিজের শতভাগ দেওয়ার। কারণ, এটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ।’
প্রথম ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন। বয়সভিত্তিক দলে হাসারাঙ্গার বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল সাইফউদ্দিনের। চেনা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যক্তিগত লড়াই জিতে ভালোই লেগেছে এই তরুণ পেস অলরাউন্ডারের, ‘মন থেকে চাচ্ছিলাম। চেষ্টা করে যেতে চাচ্ছিলাম যতটা পারি। এটা বাংলাদেশের জয়ে খুব দরকার ছিল। সেই ভূমিকাটা রাখতে পেরেছি। এ জন্য নিজে খুব খুশি। হাসারাঙ্গার সঙ্গে যুবদলে বিশ্বকাপ খেলেছি। কিছুটা হলেও ওকে চিনি। অবশ্যই ভালো ব্যাটিং করেছে। উইকেট বুঝে ফিল্ডিং সাজিয়ে ওর উইকেট নিতে পেরে খুশি।’
বোলিংয়ে ৪৯ রান দিয়ে ২ উইকেটের সঙ্গে ‘ডেথ ওভার’–এ ১৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন সাইফউদ্দিন। এখন ওয়ানডে দলে ৮ অথবা ৯ নম্বরে ব্যাটিং করেন তিনি। তবে ব্যাটিং অর্ডারে নিজেকে আরও কয়েক ধাপ ওপরে তুলতে চান ২৪ বছর বয়সী পেস বোলিং অলরাউন্ডার, ‘দল যেভাবে চাইবে সেভাবেই প্রস্তুত। সেটা আটে হোক বা সাতে। ব্যক্তিগতভাবে আমাকে প্রশ্ন করা হলে আমি পাঁচ, ছয়ে ব্যাট করতে চাই। যদিও এটা সম্ভব না দলের সমন্বয়ের কারণে। অনেক অভিজ্ঞ বড় ভাইয়েরা আছেন। যদি ধারাবাহিকভাবে খেলতে পারি, ইনশা আল্লাহ সুযোগ আসবে।’
তবে দলের মূল তিন পেসারের দায়িত্বটাই সাইফউদ্দিনের কাছে বেশি উপভোগ্য। মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে জুটি বেঁধে উইকেট শিকার করতে পছন্দ করেন তিনি, ‘মোস্তাফিজ বিশ্বমানের বোলার। কিছুদিন আগে আইপিএল খেলে এসেছে। সাফল্য পেয়েছে। বোলিংয়ে জুটি গড়া কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। অপর পাশ থেকে যদি একজন বোলার আক্রমণাত্মক বোলিং করে তাহলে আমার জন্য কাজটা সহজ হয়ে যায়। মোস্তাফিজ অপর প্রান্ত থেকে ভালো লাইন–লেংথে বোলিং করেছে। এতে আমার কাজটা আরও সহজ হয়ে গিয়েছে।’
বাংলাদেশের সর্বশেষ দুটি ওয়ানডে সিরিজে মূল দলে প্রথম পছন্দ ছিলেন না সাইফউদ্দিন। তরুণ হাসান মাহমুদকেই টিম ম্যানেজমেন্টের বেশি পছন্দ ছিল। চোটের কারণে হাসান শ্রীলঙ্কা সিরিজে না থাকায় একাদশে সুযোগ পেয়েছেন সাইফউদ্দিন। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে তাঁকে এই সিরিজে ভালো করতেই হবে। তাই কঠোর পরিশ্রম করেছেন সাইফউদ্দিন, ‘রোজার মাসে অনেক কাজ করেছি। যদিও নিউজিল্যান্ড সিরিজ ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ চলছিল, যেখানে সুযোগ পাচ্ছিলাম না। নিজের ভেতরে জেদ কাজ করেছে। চেষ্টা ছিল এ সিরিজে প্রথম থেকে খেলব। এখন বাকি দুটি ম্যাচ ভালো হবে আশা করছি।’