নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
শেরে বাংলা ছিলেন আমাদের বাঙালি জাতিসত্তা ও জাতীয়তাবাদের অগ্রনায়ক মন্তব্য করে বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমান বলেন, তিনি এদেশের কৃষক-শ্রমিক গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে রাজনীতি করে গেছেন। যে কারণে তিনি ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে কৃষক-প্রজার মুক্তি আনয়ন করেন। শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউর মিলনায়তনে উপমহােশের আজাদী আন্দোলনের মহান নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ১৪৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদ “শেরে বাংলার কর্মময় জীবন”-শীর্ষক আলোচনা সভা, গুনিজন সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সাবেক তথ্য সচিব সৈয়দ মার্গুব মোরশেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন পুলিশের সাবেক আইজি এ কে এম শহিদুল হক, প্রধান আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. কামালউদ্দিন আহম্মেদ, মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব ও কলাম লেখক এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, আলোচনায় অংশগ্রহন করবেন অর্থমন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব পীরজাদা শহীদুল হারুন, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সাধারন সম্পাদক লায়ন মজিবুর রহমান হাওলাদার, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সদস্য ড. মাওলানা এ কে এম মাহবুবুর রহমান, দেশবরেণ্য শিল্পী লালন কণ্যা ফরিদা পারভীন, মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু আদুল্লাহেল কাফী। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন শেরে বাংলা গবেষণা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মহাসচিব আর কে রিপন। পুলিশের সাবেক আইজি এ কে এম শহিদুল হক বলেন, দেশ ও জাতি এক কঠিন সময় পার করছে। সরকারী ব্যর্থমন্ত্রীদের ব্যর্থতা ও নিয়ন্ত্রনহীন দুর্নীতি প্রধানমন্ত্রীর সকল অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলছে। শুধু দৃশ্যবান উন্নয়ন দিয়ে জনগনের মনে স্থান করে নেয়া সম্ভব নয়। টেক সই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন নির্মূল। প্রধান বক্তার বক্তব্যে প্রফেসর ড. কামালউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, উপমহাদেশের রাজনীতিতে নতুনত্ব সৃষ্টি করেছেন শেরে বাংলা। তিনি বাঙালিদের জন্য শিক্ষার জাগরণ ঘটিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্টা করেছেন। এখন সেই বাংলাদেশকে বিশ্বমানের উন্নত দেশ প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে হবে। মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, রাজনীতি যখন পথ হারাচ্ছে, রাজনীতির নিয়ন্ত্রন যখন অসাধু কালো টাকার মালিক, সন্ত্রাসী, নীতিহীন ব্যবসায়ী আর সুকিধাবাদিদের নিয়ন্ত্রনে চলে যাচ্ছে তখন শেরে বাংলার মতো নেতাদের প্রয়োজনীয়তা জাতি মর্মে মর্মে উবলব্ধি করছে। তিনি বলেন, ত্যাগী-সৎ-দক্ষ রাজনীতিক নেতা-কর্মীরা যখন রাজনীতি থেকে কোনঠাসা হয়ে নিরব হয়ে যায় তখনই দেশ-জাতির অস্তিত্ব সংকটে পরে। এখন সমগ্র দেশ-জাতি ভয়াবহ কঠিন সময় অতিক্রম করছে। চারদিকে দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী আর কালো টাকার মালিকদের জয়জয়কার। এসময় শেরে বাংলা, মওলানা ভাসানী, সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবন্ধু, অলি আহাদ, ভাষা মতিনকে স্মরণ করতে হবে, ধারন করতে হবে। স্বাগত বক্তব্যে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, সকলের জন্য সমন্বিত চিন্তা করার জায়গা শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ধারণ, লালন, চর্চা ও বিশ্বাস করতেন। তিনি যেটা বিশ্বাস করতেন সেটা কার্যকর করতেন। নৈতিকতা, সততা ও মূল্যবোধকে ধারণের মাধ্যমে শেরেবাংলার আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে হবে। শুভেচ্ছা বক্তব্যে আর কে রিপন বলেন, এদেশের শিক্ষা বিস্তারে সবচাইতে বেশী অবদান রাখেন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক। যে কারণে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ এদেশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তার আদর্শ বর্তমান প্রজন্মের সামনে আমাদের তুলে ধরা উচিত। সভাপতির বক্তব্যে সাবেক তথ্য সচিব সৈয়দ মার্গুব মোরশেদ বলেন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে ঋণসালিশি বোর্ড কৃষককুলকে মুক্ত করে দিয়েছিল। তিনি কৃষকের বেদনা বুঝতেন, কৃষকের চাওয়া-পাওয়া ও সমস্যা বুঝতেন। এ ভূখণ্ডের মানুষের তিনি মৌলিক পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। সে পরিবর্তন আনার লড়াইয়ে তখন রাজনীতি তত সহজ ছিল না। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অবদানের জন্য বিশিষ্ট …জনকে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়।