মো. মহসিন রেজা, শরীয়তপুর।।
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের শরীয়তপুর -নড়িয়া রোডে কালভার্ট নির্মানের প্রয়োজনে বিকল্প রাস্তায় নাট বল্টু ছাড়াই নাম মাত্র বেইলি ব্রিজ তৈরী করায় ট্রাকসহ ভেঙ্গে পড়ে ঘটনাস্থলেই নয়ন বেপারী (৩৫) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয় ও ৪ আহত হয়। নিহত নয়ন বেপারী শরীয়তপুর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড স্বর্নঘোষ গ্রামের মনির বেপারীর ছেলে। আহতরা হলেন, মজিবর সরদার, আবু তাহের, সাবেদ আলী ও দেলোয়ার হোসেন। ঘটনার পরপরই ট্রাক ড্রাইভার ও হেলপারকে পাওয়া যাচ্ছেনা। ১০ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে নড়িয়া-শরীয়তপুর সড়কের সদর উপজেলার বালাবাড়ি নামকস্থানে সড়ক বিভাগের নির্মানাধীন কার্লভার্টে এই দূর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক সংবাদ পেয়ে শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ এসে আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এর আগেও এই নির্মাণাধীন সেতুটিতে দূর্ঘটনার খবর স্থানীয় গণমাধ্যমসহ জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও সড়ক বিভাগ থেকে নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। ৪ মিটারের এই কালভাটর্টি নির্মান ব্যায় ধরা হয়েছে ২২ লক্ষ টাকা, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আছেন এমএম বিল্ডার্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং লিঃ। কিন্তু কাজটি করছে স্থানীয় সাব ঠিকাদার শরীয়তপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুর রব মুন্সীর ছেলে পাভেল মুন্সি। স্থানীয় ও প্রত্যেক্ষদর্শীদের অভিযোগ ঠিকাদার ও সড়ক বিভাগ শরীয়তপুর-নড়িয়া রোডে কালভার্ট নির্মান করতে গিয়ে পাশ দিয়ে রাস্তা না করে কালভার্টের উপর দিয়েই নাট বল্টু ছাড়াই নামমাত্র বেইলি সেতু বানিয়ে নিচ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই শ্রমিক দিয়ে কাজ করতে থাকে , মঙ্গলবার সেই সেতু দিয়ে একটি ট্রাক যাওয়ার সময় ট্রাকটি বেইলি ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ে যায় নিচে। এতে নিচে কাজ করতে থাকা শ্রমিকদের উপরে ব্রিজসহ ট্রাক পড়ে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া এর আগেও এখানে ছোটো খাটো দূর্ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য দায়ী ঠিকাদার ও অফিসের লোক এদের গাফিলতিতেই মানুষটি মারা গেছে। নড়িয়া উপজেলার এই সড়কে চান্দনি নামকস্থানে আরও একটি কালভার্ট নির্মাণ কাজ চলছে কিছুদিন আগে মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় সেখানে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। সেখানেও বিকল্প সড়ক না করে কালভার্ট নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও রাস্তায় কোনো ব্যারিকেড না থাকায় ঝুকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়েই চলছে গাড়ি। নিহতের স্বজনরা বলেন, নিহত নয়ন সরদারের স্ত্রী গর্ভবতী, তার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে,পরিবারের তিনিই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি ছিলেন পরিবারটির এখন কি হবে? এ বিষয়ে শরীয়তপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ভূঁইয়া রেদোয়ানূর রহমান বলেন, এটা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এই কাজের রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। যে স্থানে দূর্ঘটনা ঘটেছে সেখানে একটি কালভার্ট নির্মানের কাজ চলছে, এই নির্মাণ কাজে কোন ক্রুটি পরিলক্ষিত হয় নাই, বেইলি ব্রিজের একটা ধারণ ক্ষমতা আছে যেখানে সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ছিলো ১০ টন। সকালে যখন ট্রাকটি বেইলি সেতুর উপর উঠেছে। তখন সেতুটি তার ধারণ ক্ষমতা রাখতে পারেনি তাই ভেঙ্গে পড়েছে। রাস্তার পাশে ছোট একটি খাল থাকাতে আমরা আপতকালিন সময়ের জন্য এই বেইলি সেতু দিয়েছিলাম। বর্তমানে বিকল্প সড়ক করতে খালের মুখে বস্তা ফেলা হয়েছে। এই দূর্ঘটনাটি ট্রাকটি ওভারলোড হওয়াতে হয়েছে। এই ঘটনায় বেইলি সেতু ভেংগে পড়ে নিচে থাকা আমাদের ঠিকাদারের একজন শ্রমিক মারা গেছে ও কয়েকজন আহত হয়েছে। এছাড়া তিনি আরো জানান নিহত শ্রমিককে ক্ষতি পূরণ দেয়া হবে।