মো. মহসিন রেজা,শরীয়তপুর।।
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নশাসন ইউনিয়নের ঘাগ্রিজোড়া গ্রামে খাল বন্ধ করে দেয়ায় পয়ঃনিষ্কাশন ব্যাবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। যার ফলে স্থানীয়দের ঘর-বাড়ি ডুবে আছে ও প্রায় ৪ হাজার একর জমির চাষাবাদ পড়েছে হুমকির মুখে। জেলার পূর্ব কোটা পাড়া নদীর উপর দিয়ে সেতু নির্মান করছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। সেতু নির্মান করতে গিয়ে নড়িয়া উপজেলার নশাসন ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড ঘাগ্রি জোড়া গ্রামের পয়ঃনিস্কাশনের বিকল্প ব্যাবস্থা না করেই খাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে এই ইউনিয়নের ঘাগ্রিজোড়া, পারাগাঁও এবং নশাসন গ্রামের প্রায় চার হাজার একর জমিতে বর্ষার পানি জমে থাকায় রবিশস্য চাষীরা চাষাবাদ নিয়ে পড়েছে বিপাকে। যদিও আগামী ২০ দিনের মধ্যেই রবিশস্য চাষাবাদের মৌসুম শুরু হবে। ঘাগ্রিজোড়া গ্রামের স্থানীয় কৃষক হাজী আইয়ূব আলী গাজী বলেন, পয়ঃনিস্কাশনের বিকল্প ব্যাবস্থা না করে এই খালটি বন্ধ করে দেওয়ার কারণে এই গ্রামের দুই হাজার কৃষক ৪/৫ হাজার একর জমির চাষাবাদ নিয়ে খুবই আতংকিত হয়ে পড়েছি, যদি তারাতাড়ি পানি নামানোর ব্যাবস্থা না করা হয় তাহলে আমরা কৃষকরা এবছর চাষাবাদ করতে পারবোনা। স্থানীয় আরেক কৃষক মামুন ফরাজী বলেন, পয়ঃনিস্কাশনের বিকল্প ব্যাবস্থা না করেই ঘাগ্রিজোড়ার খালটি বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা রবিশস্য চাষাবাদ নিয়ে খুবই বিপদের মধ্যে পড়েছি। এছাড়া আরো অনেক কৃষকই জানান, বর্ষার সময় এই খালটি দিয়ে সরাসরি কোটাপাড়া নদী থেকে পানি ঢুকতো এবং বেরিয়ে যেতো এতে আমরা অনেকেই বর্ষার সময় মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করি ও বর্ষার পড়ে পানি নেমে গেলে সরিশা, মশুর, গমসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করি। এখন এই পানি নামার বিকল্প ব্যাবস্থা না করে খালটি বন্ধ করে দেওয়ায় ঘাগ্রিজোড়া, নশাসন ও পারাগাঁও গ্রামের হাজার হাজার কৃষক খুবই আতংকের মধ্যে আছি এবছর আমরা চাষাবাদ করতে পারবো কিনা জানিনা। আমাদের দাবি এই তিনটি গ্রামের ফসলি জমি ও বাড়িঘরের পয়ঃনিস্কাশনের ব্যাবস্থা করে দেওয়া হোক। এ বিষয়ে নশাসন ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. সামচুদ্দিন সরদার বলেন, এই তিনটি গ্রামে প্রায় চার হাজার টকর ফসলি জমি ও বাড়ি-ঘর রয়েছে এখানে পানি আটকে আছে, কিছুদিনের মধ্যেই চাষাবাদ শুরু হওয়ার কথা। আমরা এবিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসক স্যারের সাথে কথা বলবো। এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান বলেন, কৃষি জমিতে পানি আটকে যাওয়ার বিষয়টি আমি এখনই জানলাম, আজই ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি দেখবো। এঘটনায় উপ-পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামার বাড়ি শরীয়তপুর) মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, আমি শরীয়তপুরে কিছুদিন আগেই যোগদান করছি, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা।কৃষকদের বিষয়টি এখনই জেনেছি এ বিষয়টি নিয়ে আমি জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় উপস্থাপন করে যতো দ্রুত সম্ভব ব্যাবস্থা গ্রহন করবো। খাল আটকে কাজ করার বিষয়ে জেলা সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী ভূঁইয়া রেদোয়ানুর রহমান বলেন, যদি খাল ভরাটের কারণে ফসলি জমির ক্ষতি হয় তাহলে আমরা পয়ঃনিষ্কাশনের বিকল্প ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।