নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মজলুম জননেতা মরহুম শফিউল প্রধান এর স্বরণে যুব জাগপার কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক মীর আমির হোসেন আমু বলেন জাতীয় বীর আধিপত্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী রুপী প্রতিবাদী কন্ঠস্বর দিনাজপুর এর প্রথম পতাকা উত্তোলক ও জাগপা সভাপতি মজলুম জননেতা মরহুম শফিউল আলম প্রধান একজন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা এবং দেশপ্রমিক ছিলেন। মজলুম জন নেতা শফিউল আলম প্রধান এদেশের রাজনীতির জন্য যে চেতনা-দর্শন-দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা আগামী দিনের পথ চলার জন্য আমাদের অনুকরনীয়-অনুসরনীয় হয়ে থাকবে।
এদেশে অনেক দেশপ্রেমী নেতা জন্ম গ্রহণ করেছেন। তারা ক্ষমতায় গেছেন, দেশ সেবা করেছেন, ভাগ্য গড়েছেন।মজলুম জননেতা শফিউল আলম প্রধান ছিলেন ব্যাতিক্রম। তিনি আদর্শ বিষর্জন দিয়ে যে কোনো সময় মন্ত্রী হতে পারতেন। কিন্তু আদশের প্রতি দৃঢ় সংকল্প থাকায় ক্ষমতার মোহ কখনো তাকে আচ্ছন্ন করতে পারেনি। নিকট অতীত যেমন ক্ষমতার মোহ আচ্ছন্ন করতে পারেনি মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে।
অনেক নেতাকে দেখেছি মাঠের আন্দোলন করছে, আবার বিক্রি হয়ে মন্ত্রী হয়েছেন। জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করে জেলে গেছেন। কারাগার থেকে বেরিয়ে বঙ্গভবনে গিয়ে মন্ত্রী হয়ে গাড়ীতে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছেন এমন নজীর দেশে কমতি নেই। তিনি ২৭ বার কারাবরণ করেছেন কিন্তু মন্ত্রীত্বের লোভ মজলুম জননেতা শফিউল আলম প্রধানকে কখনো আচ্ছন্ন হতে দেখিনি। ‘পিন্ডীর শৃঙ্খল ভেঙ্গেছি, দিল্লীর গোলামীর জন্য নয়’ নেতার এই শ্লোগান এদেশের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মন্তরে উচ্চরিত হবে।
সাচ্চা জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী মজলুম জননেতা শফিউল আলম প্রধান দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শুধু রাজপথে থাকেননি সব সময় তিনি ব্যাক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়েছেন। ব্যাক্তি স্বার্থ, দলীয় স্বার্থে যখন অনেক জাঁদরেল নেতা প্রতিবেশী দেশের আগ্রাসী কর্মকান্ডে নীরব থেকেছেন, তখন দলের নেতা কর্মীদের নিয়ে মজলুম জননেতা শফিউল আলম প্রধান রাজপথে নেমেছেন প্রতিবাদ করেছেন। ৬৪জনের দুর্নীতির তালিকা প্রকাশ করেন।
ঐতিহাসিক বিরুবাড়ী দখল, তিন বিঘা করিডর, সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি, টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা, দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে ট্রানজিট দেয়ার বিরোধিতা, ভারতকে সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করতে দেয়ার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের নাম মজলুম জননেতা শফিউল আলম প্রধান। সব সময় অন্যায়-জুলুমের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন, ইসলামী মূল্যবোধ আক্বিদার পক্ষ্যে সোচ্চার ছিলেন।
সেই দিনাজপুরের কাজের মেয়ে ইয়াসমীন হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে প্রথম মজলুম জননেতা শফিউল আলম প্রধানের দলকে মানুষ রাজপথে মিছিল দেখেছে, আবার ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ফেলানীর লাশ কাঁটাতারে ঝুঁলে রাখার প্রতিবাদে তিনিই প্রথম রাজপথে নেমেছেন। আবার পিলখানায় দেশপ্রেমী সেনাবাহিনীর ৫৭ অফিসার হত্যার প্রতিবাদে রাজপথে একের পর এক মিছিল করেছেন। পিলখানা হত্যাকান্ডকে ‘দেশপ্রেমী সেনা হত্যা দিবস’ ঘোষণার দাবিতে সোচ্চার ছিলেন।তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ জিয়ার কবর নিয়ে যখন ২০১৬ সালে প্রথম আওয়ামীলীগ সরকারের মন্ত্রী এমপিরা আওয়াজ তুলেন চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে জিয়াউর রহমানের কবর সরবেই। একদিন না একদিন এটা সরানো হবে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবরস্থান এখান থেকে সরিয়ে লুই আই কানের নকশা বাস্তবায়ন করবেন। সেই দিনে মজলুম জননেতা রাজপথে প্রথম প্রতিবাদ করে বলেন শহিদ জিয়ার কবর ধরলে খবর আছে।
তিনি সারাটা জীবন জনগণ ও দেশকে নিয়ে ভেবেছেন মজলুম জননেতা শফিউল আলম প্রধান। তিনি না ফেরার দেশে যাওয়ার ৪ বছরের মধ্যে রাজনীতিতে নানা ঘটনার জন্ম নিয়েছে। তার ভরাট কন্ঠ ও সাহসী বক্তব্য সবাইকে মোহিত ও মুগ্ধ করতো। আজ তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো বা অন্যভাবে প্রতিবাদ হতে দেখতাম। তিনি প্রতিবাদের ভিন্ন ভাষা জানতেন। যেই ভাষার শব্দচয়ন আজকাল আমরা কারো কন্ঠে বা মুখে শুনতে পাই না।
তিনি বেঁচে থাকলে শহিদ জিয়া লাশ ও কবর এবং খেতাব বাতিল নিয়ে সরকার যে ধরনের মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি শহিদ জিয়ার ইতিহাস ও সঠিক তথ্য উপস্থাপন করে রাজপথে প্রতিবাদ করতেন।এবং বন্দী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ও দেশের গণতন্ত্র জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার জন্য রাজপথকেই বেঁছে নিতেন। তিনি বলতেন ধানাই-পানাই বুঝি না, সিদ্ধান্ত একটাই হয় মুক্তি না হয় রাজপথ। বর্তমান একথা বলার আজ আর কেউ নেই। যুব জাগপা প্রিয়নেতার আদর্শকে সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে। এবং রাজপথে থেকে যুব জগপা জনগণের পক্ষে থেকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার এবং ভাতের অধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। নেতা আপনি যেখানেই থাকুন, ভাল থাকুন। মহান আল্লাহ যেন আপনাকে জান্নাত দান করেন।