রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বাকপ্রতিবন্ধির স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়ার পর ধর্ষণ চেষ্টা করলে ওই ছিনতাই কারীকে চিনে ফেলায় গলাটিপে হত্যা চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধুতাই নয়, অভিযোগ দায়েরের পর মামলা নিতে অসহযোগীতা করছে তদন্ত কারী কর্মকর্তা দারোগা। ঘটনাটি ঘটেছে (১৫ এপ্রিল) বৃহস্পতিবার উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের বীর হাটাবো এলাকায়।
বীর হাটাবোর এলাকার বাসিন্দা কামিজদ্দিন জানান, তার মেয়ে আফরোজা আক্তার (৩০) গত ১১ এপ্রিল সকালে হাটাবো থেকে কাঞ্চন ব্রিজ এলাকায় অটোরিক্সয় করে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আমদিয়া কাজির টেক এলাকার পৌঁছলে ওই অজ্ঞাত অটোচালকের সহযোগীতায় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা বীরহাটাবো নাগদাপাড়ার ইসলাম উদ্দিনের ছেলে মোগলসহ অজ্ঞাত আরো ৩ জন হামলা চালায়। এ সময় ছিনতাইকারীরা আফরোজাকে মুখ বেঁধে রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে যায়। পরে তার গলায় থাকা ১ভরি ২ রতি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার যার আনুমানিক মুল্য ৭৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এছাড়াও তাকে ধর্ষনের চেষ্টাকরে। এতে বাঁধা দিলে এলোপাতারি মারধর করে ছিনতাইকারীরা। এ সময় আফরোজা জোড়ে শব্দ করলে বীরহাটাবো গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেকের ছেলে হালিম ঘটনাস্থলে দৌড়েযায়। এতোক্ষণে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। তবে হালিম মিয়া শুধুমাত্র ইসলাম উদ্দিনের ছেলে মোগলকে চিনতে পারে। বাকিদের মুখে মাস্ক থাকায় চিনতে পারেনি। পরে আফরোজাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তার পরিবারকে জানায়।পরিবারের লোকজন তাকেচিকিৎসার জন্য রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে ভুক্তভোগীর ভাই মোশারফ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমার বোন আফরোজার স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়ার পর ধর্ষন চেষ্টা করা হলেও ভোলাবো তদন্ত কেন্দ্রের দারোগা সানোয়ার হোসেন রহস্যজনক কারণে এ ঘটনার অভিযোগপত্রে ধর্ষন চেষ্টা‘র কথা লিখতে দেয়নি। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে পূর্ব শক্রতা লিখা হয়েছে। আমার পিতা মুর্খ থাকায় তা বুঝতে পারেনি। ফলে ওই দারোগা আমার বোনের বিচার পেতে সহযোগীতার বদলে বাদীকে অনুৎসাহিত করছে। দারোগা আমার মুঠোফোনে বলেছেন, আফরোজা বাকপ্রতিবন্ধী। তাই আদালতে স্বাক্ষী দিতে পারবেনা, মামলা করে লাভ হবেনা। অযথা হয়রানী হবেন। তাছাড়া অভিযুক্তদের ধরিয়ে দিতে পারলে মামলা নেয়া হবে বলে শর্ত জুরে দেন। তবে অভিযুক্ত উপ-সহকারী পরিদর্শক (এসআই) সানোয়ার হোসেন বলেন, বাদী পক্ষকে বলে ছিলাম,অভিযুক্তদের অবস্থান জানাতে বা ধরিয়ে দিতে। বাদী পক্ষ গরীব, অসহায়। তারা থানা ও আদালতে দৌড়াতে পারবেনা ভেবে এ কথা বলেছি। তবে অসহযোগীতা করবনা। অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা করতেছি। এছাড়া অভিযুক্ত মোগল মিয়া পলাতক থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযুক্ত মোগল ও তার অধীনে একটি চক্র পূর্বাচলে ঘুরতে আসা লোকজনের কাছ থেকে সুযোগ বুঝে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। এমন ঘটনা আরো রয়েছে। এছাড়াও তারা এলাকায় মাদকসেবী হিসেবে চিহ্নিত।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার তদন্ত কর্মকর্তা এইচ এম জসিম উদ্দিন বলেন, কোন পুলিশ সদস্যের এমন বক্তব্য হতে পারেনা। ঘটনা তদন্ত করে প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে বিধিব্যবস্থা নেয়া হবে। আর প্রতিবন্ধি আফরোজার অভিযোগ পেয়েছি। জড়িতদের আইনের আঁওতায় আনা হবে।