নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবশেষে বাবা-মার কাছে ফিরে এসেছে রায়হান কবির। ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দিত তার বাবা-মা। রায়হান মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরার পর ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা।
শুক্রবার (২১ আগস্ট) দিনগত রাতে দেড়টায় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরেন রায়হান। সেখান থেকে ভোরে নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার শাহী মসজিদ এলাকার বাড়িতে ফেরেন রায়হান। বাড়িতে ফিরে এলে সেখানে এক আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এসময় রায়হানের মা-বাবা দুজনেই অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।
ছেলেকে ফিরে পেয়ে বাবা শাহ আলম বলেন, ছেলে এখন আমার কাছে। কোনো সমস্যা নেই এখন আর, সে সুস্থ ও ভালো আছে। আমার ছেলেকে ফিরে পেতে আপনারা সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছেন। তাই আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। তাকে ফিরে পেয়েছি এতেই খুশি, তার পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
মা রাশিদা বেগম বলেন, আমার ছেলে আমার কাছে ফিরে এসেছে, এটি মিডিয়া ও দেশের মানুষের জন্য সম্ভব হয়েছে। আমি আপনাদের কাছে ঋণী। ছেলেকে ফিরে পেয়ে আমি জীবন ফিরে পেয়েছি। এতদিন খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। প্রতি মুহুর্তে অজানা শঙ্কা আমাদের তাড়া করতো, সেই শঙ্কাকে দূর করে আমি আমার ছেলেকে ফিরে পেয়েছি।
মালয়েশিয়ান সংবাদমাধ্যম বার্নামার খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ৯টায় তাকে কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাত ১১ টা নাগাদ তাকে ঢাকাগামী মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়।
গত ২৪ জুলাই তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে রায়হান কবিরের ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করেছে মালয়েশিয়া। মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম মালয়েশিয়া ইনসাইট ১২ জুলাই এক প্রতিবেদনে জানায়, পুলিশ মহাপরিদর্শক আব্দুল হামিদ বাবর বলেছেন, বাংলাদেশি নাগরিক রায়হান কবিরের ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করা হয়েছে।
সম্প্রতি আল জাজিরা টিভির একটি প্রতিবেদনে সাক্ষাৎকার দেন রায়হান কবির। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় মালয়েশিয়া সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে সেখানের অভিবাসীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর অনেক খোঁজাখুঁজি করে ২৫ জুলাই রায়হান কবিরকে গ্রেফতার করা হয়।
রায়হান কবির ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে রায়হান। পরে মালয়েশিয়া গিয়ে পার্টটাইম চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনা করছিল সে। সেখানে বিএ পাস করার পর গত ঈদুল ফিতরের আগে একটি কোম্পানিতে স্থায়ী চাকরি হয় তার। কিন্তু কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরায় সাক্ষাৎকার দেওয়ার পর বিপত্তিতে পড়েন রায়হান কবির।