শেরপুরের মুর্শিদপুর দরবার শরিফে হামলা-ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ১২ জন আহত হয়।
গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ভোরে শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার (দোজা) পীরের দরবার শরিফে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার জড়িত থাকার অভিযোগে ৮ জনকে আটক করে থানা পুলিশ ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই মুর্শিদপুর দরবার শরীফের কার্যক্রম বন্ধের হুমকি দিয়ে আসছিলেন সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের জামতলা এলাকার ফারাজিয়া আল আরাবিয়া ক্বওমী মাদ্রাসার সুপার মো:তরিকুল ইসলামও তার সহযোগীরা।
তাদের অভিযোগ,পীরের দরবারে ইসলাম পরিপন্থী কার্যকলাপ পরিচালিত হয়। তাই পীরের দরবার শরিফ বন্ধের দাবিতে মাদ্রাসা সুপারের নেতৃত্বে ইতিপুর্বে এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি-বিক্ষোভ সমাবেশ ও হয়েছিল ।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ভোর রাতে মাদ্রাসা সুপার মো.তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটিদল পরিকল্পিতভাবে মাজারে হামলা চালিয়ে মাজারে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। ককটেল পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে ও লোহার ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা,ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। তারা
দরবারে থাকা দুম্বা,খাসি, গরু ও ভেড়া লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় খাদেম ও অন্যান্য মুরিদরা বাধা দিলে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৩ জন আহত হন।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী,পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে উভয় পক্ষের ১৩ জন আহত হন । আহতরা হলেন আসিফ (২৫),শহিদুল ইসলাম (৩৫),আল মাসুদ (১৫), জিসান (২২) এনামুল হক (৩৫), হাফেজ (৩৯) ও জয়নাল (২৮)।
মুর্শিদপুর দরবার শরীফের আহতরা হচ্ছেন আব্দুল কুদ্দুছ (৪০),মোহন মিয়া (৪০), মন্টু মিয়া (৪২), আরিফ হোসেন (১৬), মনির হোসেন (২৪) ও সফর মিয়া (৪৫)। আহতদের শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার হাফেজ উদ্দিন (৩৯) নামে এক কাঠমিস্ত্রীর মৃত্যু হয়। ঘটনার সাথে জরিত থাকার অভিযোগে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে দরবার শরীফের খাদেম মাহমুদান মাসুম বাদি হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে আসামী করে শেরপুর সদর থানায় একটি
মামলা দায়ের করে।
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুবায়দুল আলম জানান, বর্তমানে মুর্শিদপুর দরবার এলাকায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
এ ঘটনায় এক পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।