সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি:
হাজী মানিক মাস্টার সিদ্ধিরগঞ্জে নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। রাজনীতির পাশাপাশি একজন ব্যবসায়ি। রাজনীতি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত রয়েছেন। রাজনীতি করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। শুধু তাই নয়, একবার নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে এসেছেন। সন্ত্রাসীরা তাকে মৃত ভেবে ফেলে যায়। দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার পর আল্লাহর রহমতে ও মানুষের দোয়ায় সে বেঁচে যায়। কিন্তু রাজনীতি করতে গিয়ে নানা ভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন হাজী মানিক মাস্টার। তিনি বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সদস্য, সুমিলপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, নাসিক ৬নং ওয়ার্ড কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্য, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ঢাকা বিভাগীয় কমিটির ত্রাণ ও পূর্নবার্সন বিষয়ক সম্পাদক ও নূরে মদিনা মাদরাসার কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, রাজনীতির করতে গিয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে এসেছি। একমাত্র মহান আল্লাহ রহমত ও ৬নং ওয়ার্ডের মানুষের দোয়া ছিল আমার প্রতি। নানাভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, একজন সংবাদকর্মীর মাধ্যমে সমাজের অনেক ঘটনার তথ্য আমরা জানতে পাই। এ জন্য সাংবাদিকদের সমাজের আয়না ও জাতির বিবেক বলা হয়। সাংবাদিকরা সমাজটাকে আয়নার মতো করে আমাদের সামনে তুলে ধরেন। তারা দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি সমাজের নির্যাতিত-অবহেলিত মানুষের কথা বলেন। সাংবাদিকদের লেখনীর মাধ্যমেই আমরা অনেক অজানা তথ্য পাই। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল সাংবাদিকদের কাছে আমার নামের আগে ব্যঙ্গাত্মক শব্দ “পেট কাটা, “ফারা মানিক, এসব নাম ব্যবহারে ইন্ধন যোগাচ্ছে। আর সাংবাদিক ভাইয়েরাও এসব ব্যঙ্গাত্মক নাম ব্যবহার করে পত্রিকায় ছাপছেন। যা দেখে আমাকে ভীষনভাবে কষ্ট দেয়।
মানিক মাস্টার বলেন, আমি ছাত্রজীবনে ১৯৯১ সালে তোলারাম কলেজ থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান মতি ভাইয়ের হাত ধরে এমপি একেএম শামীম ওসমানের অনুসারী হয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িত হই। রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার কারণে বিভিন্ন সময় আমিসহ আমার পরিবারকে মামলা, হামলা ও নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়েছে। বিএনপি জামায়াত জোট সরকার ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে আমার পরিবারের ওপর নেমে আসে সীমাহীন নির্যাতন। যা মনে পড়লে দু’চোখে এখনও পানি চলে আসে। ২০০৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আমি সহ যুবলীগের নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে এসও শীতলক্ষা নদীর ঘাট এলাকায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী বাহিনী। তাঁদের হামলায় নিহত হন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের নেতা খোকন মল্লিক। আর আমাকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে পুরো শরীর জখম করে। আমি মরে গিয়েছি এটা ভেবে তারা চলে যায়। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা আমার হায়াত থাকার কারণে আমাকে বাঁচিয়ে দেন। হাসপাতালে দুই মাস বিভিন্ন জটিল অস্ত্রোপচার শেষে আমি সুস্থ্য হই। আমার পেটসহ শরীরের বিভিন্ন স্হানে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন করা হয়। যার দাগ ও শরীরে অসহ্য যন্ত্রনায় এখনও আমাকে ভুগতে হচ্ছে। আমার কাছে জীবন এখনও বেঁচে থেকে না থাকার মতো। ২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতা থেকে চলে যাবার পর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। সরকার ক্ষমতায় আসার পরে আমাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক ভাবে চললে একটি কুচক্রী মহল এটি ভালো চোখে দেখছে না। তারা সবসময় অপ-প্রচারে ব্যস্ত রয়েছে। এজন্য তারা বেছে নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও কিছু সাংবাদিক ভাইদের কাছে মিথ্যা অসত্য ও ব্যঙ্গাত্মক তথ্য দিয়ে তা পত্রিকায় ছাপিয়ে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা। অনেক সময় আমার নাম মানিক মাষ্টারের আগে ও পরে পেট কাটা মানিক ও ফারা মানিক এ ধরনের শব্দ ব্যবহার করা হয়। আমি মনে করি এসব শব্দ ব্যবহার একজন নীতিবান সাংবাদিকের কাজ নয়। সাংবাদিকদের এসব ব্যাপারে আরও সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন। বিভিন্ন সময় পত্র পত্রিকায় আমাকে অবৈধ তেল ব্যবসার সাথে জড়িত বলে লেখা হয়। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে আনীত এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমি কোন ধরনের তেল ব্যবসার সাথে জড়িত নই। আমি আদমজী ইপিজেডে একজন লাইসেন্সধারী ফুড সাপ্লাইয়ার এবং একমাত্র এই ব্যবসার সাথেই আমি জড়িত।
মানিক মাষ্টারের বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের প্রবীণ যুগ্ম সম্পাদক বাবু কালীপদ মল্লিক জানান, ‘মানিক ছাত্র বয়স থেকেই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। সে দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ। সে কখনই তেল ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল না। আমি যতদূর জানি সে আদমজী ইপিজেডে খাবারের ব্যবসা করে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক হোসেন আলী মেম্বার জানান, ‘বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের সন্ত্রাসীরা তাঁদের আমলে মানিক মাষ্টারকে দুনিয়া থেকে শেষ করতে গিয়েও সফল হয়নি তারা এখন অপ-প্রচার করে চলছে।’
নাসিক ৬নং ওয়ার্ড পুলিশিং কমিটির সভাপতি হাজী ইয়াকুব ও সাধারন সম্পাদক খাজা মাঈনুদ্দীন বলেন, মানিক মাষ্টার ও তাঁর পরিবার আওয়ামীলীগ করার কারণে বিএনপি আমলে অনেক হামলা নির্যাতন সহ্য করেছে। দলের জন্য তাঁর অনেক ত্যাগ রয়েছে। নাসিক ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা খোরশেদ আলম বলেন, সাংবাদিকরা জাতীর বিবেক। সংগঠনের একজন ত্যাগী আওয়ামী যুুবলীগের একজন নেতার নামের আগে পরে সাংবাদিকদের এসব ব্যঙ্গাত্মক শব্দ ব্যবহার পরিহার করা উচিত না।
আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের নেতা আব্দুল আজিজ বলেন, মানিক মাষ্টার আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে দীর্ঘকাল ধরে হামলা মামলা নির্যাতন সহ্য করে রাজনীতি করে আসছে। কিন্তুু নব্য আওয়ামীলীগারদের প্রতিহিংসার বর্শবর্তী হয়ে অপ-প্রচারের স্বীকার হচ্ছে।