আরিফুল ইসলাম জিমন,দিনাজপুর◊◊
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মানষিকভাবে বিপর্যস্ত চয়ন কন্ঠ (১৭) নামে এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার ঘোড়াঘাট ইউপির করনজি গ্রামের সজল কন্ঠের ছেলে।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) সকালে উপজেলার ৪নং ঘোড়াঘাট ইউপির করনজি দিঘিরপাড় গ্রামের নিজ ঘর থেকে তার মরদেহটি উদ্ধারকরা হয়। ধারণা করা হচ্ছে রাত ১২ টা থেকে ভোর ৬টার মধ্যে আত্মহত্যা করে চয়ন।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীরা জানান, চয়ন খুবই ভালো একটি ছেলে। সে কামদিয়া নুরুল হক ডিগ্রি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। চার ভাই বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়। গত দু’বছর পূর্বে এই বাড়িতেই চয়নের মা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। তার পর থেকেই বড্ডো একা হয়ে যায় চয়ন। সংসারের সব বোঝা মাথার উপর এসে বাসা বাধে। ছোট ছোট দুটি ভাই ও বাবাকে নিয়ে মানষিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরে। নিজের লেখাপড়া, কলেজে যাওয়া, আবার কলেজ থেকে এসে ছোট ভাই দুটি ও বাবার জন্য খাবার রান্না করে খাওয়াতে হতো চয়নকেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী তার বাবা মাসিক ১৮০০ টাকা বেতনে স্থানীয় একটি কলেজের নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কাজ করতো। সব মিলিয়ে প্রতিনিয়ত খেয়ে না খেয়ে অভাব অনটনে দিন কাটত তাদের।
নিহতের বড় চাচা রতন কন্ঠ বলেন, মানষিক হতাশাগ্রস্থ হয়েই আমার ভাতিজা আত্মহত্যা করেছে। তার মা মারা যাওয়ার পর এই অল্প বয়সে পুরো সংসারের দায়িত্ব তার কাঁধে পড়ে যায়। সংসারে অভাব অনটন, ভাইদের নিয়ে চিন্তা, ভবিষৎ নিয়ে হতাশশাই আত্মহত্যার প্রধান কারণ। অন্য কোন কারণ নেই।
এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট-হাকিমপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম ও ঘোড়াঘাট থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ নেই। সকলেই বলছে সে আত্মহত্যা করেছে। নিহতের বাবা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছে। সুরতহাল রিপোর্টেও হত্যার কোন আলামত মেলেনি। তাই সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে মরদেহ পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে।