নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মাদার তেরেসা মানবতার দূত হিসেবে যিনি আমৃত্যু কাজ করে গেছেন মানবকল্যানে মন্তব্য করে বিচারপতি মো. ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী বলেন, সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে যারা অবহেলিত অনাথ, মাদার তেরেসা তাদেরই বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে উঠেছেন। শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) তোপখানার বাশিকপ সেমিনার হলে মহীয়সী নারী মাদার তেরাসার ১১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মায়ের আঁচল ফাউন্ডেশন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, মাদার তেরেসা আলবেনিয়ায় জন্মগ্রহন করেন। বংশগত ভাবে তিনি আলবেনীয় হলেও তিনি ছিলেন ভারতীয় ক্যাথেলিক সন্নাসী। সন্নাসীনী তেরেসার একমাত্র পেশা ছিলো মানবসেবা। ছোটবেলা থেকেই তিনি সবার জন্য কিছু করে যাবার স্বপ্ন দেখতেন। মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি ধর্মীয়ভাবে সন্নাসী হয়ে জীবন যাপন করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। তবে তিনি শুধু ক্যাথলিক বা খ্রিস্টান ধর্ম নিয়ে কাজ করেন নি। তার উদ্দেশ্য ছিলো মানবসেবা। এখানে তিনি কোন ধর্মকেই ভেদাভেদ করেননি। আর তাই আজও পুরো পৃথিবীর যে কোন ধর্মের মানুষই তার নাম শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করে। মায়ের আঁচল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আর কে রিপনের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব ও কলাম লেখক এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বক্তব্য রাখেন জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, লেখক ও শিক্ষক অধ্যক্ষ সালমা আহমেদ হীরা, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোছাম্মদ লায়লা বানু, অগ্রগামি মিডিয়া ফাউন্ডেশনের নির্বাহি পরিচালক এম গোলাম ফারুক মজনু, সংগঠনের আহ্বায়ক তামান্না আক্তার, সদস্য সচিব মাহিন হাসান সাগর, নির্বাহী সদস্য এম শফিউদ্দিন অপু প্রমুখ। প্রধান বক্তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, মাসার তেরেসা নামটি আসলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে নীল পাড়ের সাদা রঙ্গের এক বিশেষ পোষাক পরিহিত সংকীর্ন শরীরের এক বৃদ্ধাকে। কোঠরের ভেতরে থাকা ঘোলাটে চোখ তখনও বেশ উজ্জ্বল। মনে হয় যেন বয়স নয় ; বরং কাজ করে ক্লান্ত হয়ে তিনি নুয়ে পরেছেন। তিনি বলেন, ভারতের বেশীর ভাগ মানুষই সনাতন তথা হিন্দু ধর্মের অনুসারী। আর মাদার তেরেসা ছিলেন ক্যাথলিক খ্রিস্টান। কিন্তু ভালো কাজে ধর্ম বা অন্য কোন বিভেদ আসলে যে কোন অন্তরায় সৃষ্টি করেনা বা মানব ধর্মই যে আসল, সেটি খুব সুন্দরভাবে প্রমান করেন মাদার তেরেসা। তেরেসা এমন একটি চ্যারিটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন যেটি তৎকালীন সময়ে ভাবাই দুস্কর। মাদার তেরেসা নেই। কিন্তু পৃথিবীর ১২৩ টি দেশে হাজারো চ্যারিটিতে মাদার তেরেসা বেঁচে আছেন অনবদ্য ভাবে। তিনি আমাদের দেখিয়েছেন হাজারো প্রতিকুলতার মাঝে কিভাবে ভালো কাজের জন্য নিজেকে বিসর্জন দিতে হয়। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, মাদার তেরেসা সেই মহীয়সী নারী যিনি আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে সারা বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে আজো অমর হয়ে আছেন এবং থাকবেন। বিভিন্ন বয়সী ছেলে-মেয়ে, যারা বিভিন্ন দিক থেকে সমাজে অবহেলিত, মাদার তেরেসা তাদেরই বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। মানবতার প্রতীক মাদার তেরেসার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।