শেখ সাখাওয়াত হোসেন,পাবনা:
মাছ ধরা বা মাছ শিকার করা বিলাঞ্চলের মানুষদের আজন্ম শখ। বিশেষ করে নদী এলাকায় বর্ষা মৌসুমের পরে নদীতে পানি অল্প থাকাকালে মৎস শিকারীরা দলবদ্ধ হয়ে পলো, ছোট জাল,নিয়ে একটি নিদিষ্ট দিনে মাছ শিকার করে থাকলেও বড়াল নদীতে কোন নির্দিষ্ট তারিখ বা ঘোষণা ছাড়াই স্থানীয় মৎস্য শিকারীরা মাঝ ধরতে নেমে পড়ে। তারই অংশ হিসেবে ১৩ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরের দিকে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার বড়াল নদীতে একদল মৎস্য শিকারী মাছ ধরতে নামেন। মৎস্য শিকারীরা পার্শ্ববর্তী চাটমোহর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন। এমনই এক শৌখিন মাছ শিকারিদের মিলন মেলা হয়েছে। এতে সবার কাছে মাছ ধরা পড়ুক বা নাই পড়ুক একসাথে বছরের কোন দিনে মাছ ধরতে আসার মজাই যেন অন্য রকম। সরোজমিনে বড়াল নদীতে ঘুরে দেখা যায়, মেন্দা খালপাট এলাকা থেকে শুরু হয়ে সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ঘাটে এসে মাছ ধরা শেষ করেন মৎস্য শিকারীরা। শৌখিন মাছ শিকারীরা বিভিন্ন যানবাহন মোটরসাইকেল, নছিমন, করিমন, আটো ভ্যান, ভটভটি যোগে এই নদীতে আসতে থাকে। তাদের হাতে পলো, খেয়াজাল, ঠেলাজাল, ধর্মখরাসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে নদীর পাড়ে এসে হাজির হয়ে একসাথে মাছ ধরতে পানিতে নামে। তারা মাছ ধরার সময় বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। কেউ মাছ পেলে সবাই মিলে তাকে আরও উৎসাহ দিতে থাকে। মৎস্য শিকারিদের কেউ কেউ পেয়েছে সোল, বোয়াল,গজার, টাকি আবার অনেকেই মাছ পায় নি। তবে প্রায় সকলের মুখেই ছিল মাছ ধরতে আসতে পারায় আনন্দের ছোয়া। ছেলে, জোয়ান,বৃদ্ধসহ সকল ধরণের কয়েকশো শৌখিন মৎস শিকারিদের আনা গোনায় বড়াল নদীর দুই পাড়ে জর হয়ে মাছ ধরতে দেখেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা। এ বাউৎ উৎসবে সবচেয়ে বড় বোয়াল মাছ পাওয়া শাহাদাত হোসেন সকালের কাগজ-কে জানান, আমি চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের দিঘুলিয়া গ্রাম থেকে এসেছি। আমি প্রতি বছর এখানে মাছ ধরতে আসি প্রতিবারের ন্যায় এবারো এসে আনুমানিক ৫ থেকে ৬ কেজি ওজনের একটি বড় বোয়াল পেয়েছি আমি খুবই আনন্দিত। এখানে বর্ষার পানিতে আসা বোয়াল, সোল, গজার, পুঁটি, সিংসহ দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ থাকে। এদিনে তাদের হাতে ধরা পড়েছে নানা ধরণের মাছ। মাছ ধরতে চাটমোহর উপজেলার পাচুরিয়া থেকে আসা নজরুল ইসলাম খাঁন জানান, আমি প্রতি বছর পলো নিয়ে আসি। কিন্তু এবার এসেছি ভরসা নামক জাল নিয়ে। যে জাল বাউৎদের মাছ ধরার ঠিক সামনে থেকে জাল পেতে মাছ ধরতে হয়। কিছু ছোট ছোট মাছও পেয়েছি। লোক মুখে মুখে খবর পেয়ে মাছ ধরতে এসেছি। পলো ও মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে কয়েকশত শৌখিন মাৎস শিকারিরা মাছ ধরতে এসেছিলেন।