আমিরুল ইসলাম কবিরঃ
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে স্ত্রী’র শাবলের আঘাতে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী স্বামী নুরুল ইসলামকে (৪৫) হত্যার চেষ্টায় গুরুতর আহত করার প্রতিবাদে এবং বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধীরাসহ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ।
সোমবার (২০ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌমাথা মোড়ে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
এতে সভাপতিত্ব করেন, গাইবান্ধা বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রফিক মিয়া।
বক্তব্য রাখেন,সংগঠনের সদস্য বাক প্রতিবন্ধী মোশারফ হোসেন,বাদল মিয়া,মিঠু মিয়া ও মিজানুর রহমান। ইশারায় তাদের দেয়া বক্তব্যে সহায়তা করেন,সংগঠনের সদস্য মাহফুজা আক্তার মনি।
আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন,গাইবান্ধা জেলা পরিষদ সদস্য মনিরুজ্জামান ফুল মিয়া, পলাশবাড়ী পৌরসভার প্যানেল মেয়র আসাদুজ্জামান শেখ ফরিদ,ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিয়ার রহমান,পল্লী অগ্রগতি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সুরুজ হক লিটন,পলাশবাড়ী প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রতন, প্রেসক্লাব পলাশবাড়ীর সভাপতি মনজুর কাদির মুকৃল,সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ,রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম,উপজেলা বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম তিতাশ,উপজেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান স্বপন ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ি ইউসুব আলী টিপু,আবু তোরাব তালুকদার, ছাত্রনেতা মমিনুল ইসলাম নিশান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন,গত ২৭ ফেব্রুয়ারী দিনগত রাত ১২টার দিকে পৌর শহরের কালুগাড়ী গ্রামে স্ত্রী’র শাবলের আঘাতে মাথার ঘিলু বেরিয়ে যায় প্রতিবন্ধী নুরুল ইসলামের। তিনি অদ্যবধি মুমূর্ষু অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে মৃত্যু পথ যাত্রী। তার মাথায় দেড় শতাধিক সেলাই করা হয়েছে। এছাড়াও তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতার নুরুলের স্ত্রী সাজেদা বেগম পুলিশের কাছে ঘটনার দায় স্বীকার করলেও আমাদের বিশ্বাশ একজন নারীর পক্ষে তার স্বামীকে এভাবে আঘাত করা সম্ভব নয়। এর পিছনে এক বা একাধিক ব্যক্তির প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
এর আগে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ১২টার দিকে পৌর শহরের কালুগাড়ী গ্রামে পরকীয়ার কারনে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে অভিযুক্ত ওই নারীকে নিজ বাড়ী থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতার সাজেদাকে প্রধান আসামী করে দায়েরকৃত মামলায় আরো ৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
নুরুল কালুগাড়ী গ্রামের রহিম উদ্দীনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ইলেকট্রিশিয়ান। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে।
পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান,দাম্পত্য কলোহের জের ধরে সাজেদা শাবল দিয়ে নুরুলকে আঘাত করেছে বলে স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। বিষয়টি তদন্তনাধীন রয়েছে।