বুধবার ২৫ ডিসেম্বর সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকারম খাঁ হলে নবাব সলিমুল্লাহ একাডেমীর উদ্যোগে উপমহাদেশের মুসলমানদের অবিসংবাদিত নেতা কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর ১৪৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
নবাব সলিমুল্লাহ একাডেমীর সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শুভর সঞ্চালনায় উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য রাখেন, পাকিস্তানের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী ও ইতিহাসবিদ, প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত ইকবাল ও জিন্নাহ গবেষক খুররম আলী শফিক। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি তৎকালীন উপমহাদেশে ব্রিটিশ অপশাসন ও হিন্দু শোষনে নির্যাতিত, নিষ্পেষিত ও নিপীড়িত মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমি ও স্বাধীনতা প্রদানে কায়েদে আজম জিন্নাহর সংগ্রাম, সংকল্প ও অবদান তুলে ধরে বর্তমান বাংলাদেশ ও ভারতের মুসলমানদের জন্যও কায়েদে আজম জিন্নাহর কর্ম ও কীর্তি কতোটা প্রাসঙ্গিক তা নিয়ে তথ্য ও যুক্তিনির্ভর আলোচনা করেন।
উক্ত সেমিনারে ভার্চ্যুয়ালি আরো বক্তব্য রাখেন, যুক্তরাজ্যের জিন্নাহ গবেষক মিস সালিনা কারিম, যুক্তরাজ্যের আইনজীবী ও প্রামান্যচিত্র নির্মাতা আয়েশা গাজী ও করাচির প্রামান্যচিত্র নির্মাতা ও তরুণ গবেষক রাজা মোহাম্মদ ফাহাদ।
সভায় বক্তারা বলেন, কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর জন্ম না হলে ভারতবর্ষের মুসলমানদের ঠিক স্পেনের মুসলমানদের ন্যায় ভাগ্য বরণ করতে হতো। কিন্তু কায়েদে আজম জিন্নাহ তার দূরদর্শিতা দিয়ে সে অবস্থা থেকে আমাদেরকে আজাদী দিয়েছেন, আলাদা ভূখন্ড দিয়েছেন। অর্থাৎ তার জন্ম না হলে ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট ভারতবর্ষ ভেঙ্গে মুসলমানদের পৃথক আবাসভূমি সৃষ্টি হতো না তথা পাকিস্তান হতো না, আর সেদিন পাকিস্তান না হলে পরবর্তীকালে বাংলাদেশও স্বাধীন হতো না। আজ আমাদেরকে কাশ্মিরের মুসলমানদের ন্যায় ভাগ্য বরণ করতে হতো। কেননা বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত রয়েছে যে, ‘সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের চিহ্নিত সীমানাই বর্তমান বাংলাদেশ।’ আর যেহেতু সাবেক পূর্ব পাকিস্তান সৃষ্টিই হয়েছিল কায়েদে আজম জিন্নাহর নেতৃতে, সেহেতু আমাদের জাতীয় জীবনে তিনি আজও যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। ১৯৭১ সালে শুধু আমরা সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছিলাম। কিন্তু আমাদের বর্তমান ভূখন্ড অর্জিত হয়েছিল ১৯৪৭ সালে কায়েদে আজমের নেতৃত্বে।
উক্ত আন্তর্জাতিক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ও প্যান ইসলামিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা জামাল ভূইয়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোঃ শামসুদ্দিন, মুভমেন্ট ফর প্যালেস্টাইনের আহ্বায়ক মোঃ হারুন-অর-রশিদ খান, বাংলাদেশ মুসল্লি কমিটির সভাপতি আমির আলী হাওলাদার, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ফারুক হাসান এবং বাংলাদেশে বসবাসরত উর্দুভাষী বিহারী কমিউনিটির নেতা মোঃ আফজাল ওয়ার্সী, মোঃ সালাউদ্দিন, মোঃ আব্দুল কুদ্দুস শাওন, মোঃ আজিম, আব্দুল ওয়াহেদ প্রমুখ মোহাজির নেতৃবৃন্দ।