মো. মহসিন রেজা, শরীয়তপুর।।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দী ইউনিয়নের বগাদী বালিকা দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন বাতিলের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ ১৯৮৭ সালে মরহুম মৌলভী এমদাদুল হক প্রতিষ্ঠা করেন বগাদী বালিকা দাখিল মাদ্রাসা, প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছর পরেও সেই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে বগাদী বালিকা দাখিল মাদ্রাসা। মাদ্রাসাটির ১০৩ শতাংস জমি থাকলেও সেখান থেকে আয়ের কোনো অংশই পায়না মাদ্রাসা। তারা আরও অভিযোগ করেন, ম্যানেজিং কমিটির লুটপাটেই মাদ্রাসার কোনো উন্নয়ন হয়নি। ২০২২ সালে নতুন ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার লক্ষে মাদ্রাসা সুপারিন্টেনডেন্টসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা ম্যানেজিং কমিটির গঠনকল্পে সম্পূর্ন আইন মেনে কাগজ পত্র তৈরী করে ১৮ এপ্রিল নির্বাচনের ঘোষনা দেন। ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে ঈর্ষান্বিত হয়ে, একটি স্বার্থনেশীমহল মাদ্রাসার অর্থ লুটেপুটে খাওয়ার জন্য নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গত ১২ এপ্রিল শরীয়তপুর সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ( চিকন্দীতে) মুলফত খাঁ বাদী হয়ে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও শিক্ষকদের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন না করতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়।
বাবুল খাঁ অভিযোগ করে বলেন, এই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটিতে ১০বছর ধরে ওয়াদুদ খান সভাপতি থাকার পরেও মাদ্রাসার কোনো উন্নয়ন হয়নি, তারা কমিটিতে আসে লুটপাট করে খাওয়ার জন্য, কয়েকবছর আগে ইলিয়াস নামের একজনকে দপ্তরি পদে নিয়োগ দিয়ে ৫ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহন করার অভিযোগ করেন তিনি। তাছাড়া এই মাদ্রাসার ১০৩ শতাংস জমির উৎপাদিত ফসল, পুকুরের মাছের কোনো হিসাব মাদ্রাসাকে না দেওয়ার অভিযোগ করেন।
বগাদী বালিকা দাখিল মাদ্রাসার জমিদাতা হাজী ফজলে করিম সরদারের পুত্রবধু উক্ত মাদ্রাসার সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষক সদস্য কিরন নাহার বার বার এই কমিটিতে থেকে ভাগ বসিয়েছেন মাদ্রাসার আয়ে। মাদ্রাসা কমিটির পকেট ভরলেও উন্নয়ন হয়নি মাদ্রাসাটির, সেই ভাঙ্গাচোরা টিনের ঘর, যা বর্তমান সরকারের আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এরকম ঘর পাওয়া বিরল।
স্থানীয়দের সহযোগিতায় বগাদী বালিকা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতার ছেলে আব্দুস সালাম মাদবরের সমন্বয়ে সরকারে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের স্বদিচ্চায় একটি চারতলা মাদ্রাসা ভবন পাশ করিয়ে আনেন কিন্তু মাদ্রাসাটির বর্তমানে থাকা কমিটির লোভ ও সমন্বয়হীনতার কারনে ভবনের কাজ শুরু করাতে পারেননি ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্বশীলরা।
স্থানীয় মোঃ রাজিব মাদবর অভিযোগ করে জানান, বগাদী বালিকা দাখিল মাদ্রাসার একশ গজের মধ্যে নামাজ আদায় করার জন্য দুইটি মসজিদ থাকার পরে মেয়েদের ওয়াশরুমের রাস্তা আটকে দিয়ে আরো একটি মসজিদ নির্মান করে ম্যানেজিং কমিটির সভাতি ওয়াদুদ খান স্বার্থনেশী কার্যক্রমের পরিচয় দেন।
বগাদী বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় দূর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে মুঠোফোনে কল করেও সভাপতি মোঃ ওয়াদুদ খানকে পাওয়া যায়নি।
বগাদী বালিকা দাখিল মাদ্রাসার নির্বাচন চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা রিটের বাদী মুলফত খানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বগাদী বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট আব্দুস সোবহান বলেন, এই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির ২০২২ সালের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আমি সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা, নীতিনৈতিকতার সাথে এগিয়ে নিয়েছিলাম। যাদের এই প্রক্রিয়া পছন্দ হয়নি তারা আদালতে গিয়েছেন, আমি আদালতকে সম্মান করি, আদালতকে জবাব দিবো।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শহীদ হোসেন বলেন, বগাদী দাখিল মাদ্রাসার নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ছিলো, অভিযোগকারী আদালতকে জানিয়েছেন আমরা কাউকে জানাইনি, আমাদের কাছে সকল কাগজ পত্র আছে। আদালত জানিয়েছেন আদালতের কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত রাখতে বলেছেন, আমরা তাই করেছি।