নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
গত ৭ নভেম্বর বিকাল ৪টায় পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলা দশমিনা বাজার মানিক মিয়া চত্বরে বাংলাদেশের কৃষক আন্দোলনের প্রাণ পুরুষ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, প্রখ্যাত কৃষক নেতা কমরেড আবদুস সাত্তার খানের ২৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন ও বাংলাদেশ কিষাণী সভা আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় নয়া মিয়া সিকদারের সভাপতিত্বে ও আবদুস সাত্তার হাওলাদার এর পরিচালনা প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আলহাজ্ব এসএম শাহজাদা এমপি, ১১৩, পটুয়াখালী—৩ (দশমিনা—গলাচিপা), বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জনাব আবদুল আজিজ, উপজেলা চেয়ারম্যান, দশমিনা উপজেলা পরিষদ, সভাপতি জনাবা সামসুন্নাহার খান ডলি, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, দশমিনা উপজেলা পরিষদ, আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান, প্রাণ কৃঞ্চ নাথ,আবদুল মালেক গাজী, লোকমান গাজী, নারী নেত্রী মনোয়ারা বেগম, কমলা বেগম প্রমূখ।
সম্মানিত প্রাধান অতিথি জনাব এসএম শাহজাদা এমপি বক্তব্যের শুরুতে কমরেড আবদুস সাত্তার খান এর সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে স্মৃতিচারন করতে গিয়ে বলেন,আমি যখন ছোট এবং এস এস সি পরীক্ষা দিব তখন দেখেছি দশমিনাতে আমাদের বাসার সামনে ও আমার বাবার চাকুরির সুবাদে গলাচিপাত দেখেছি কৃষক— কিষাণী কত কষ্ট করে পানি অভাব ও ক্ষুধা সহ্য করেছে।আমার বাসায় থেকে যতটুকু পেরেছি পানি ও খাবার দিয়ে সহযোগিতা করেছি। তখন দেখেছি সাত্তার খানের রুপ ও মানুষের প্রতি তাঁর ভালোবাসা। তিনি স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আরো বলেন,আমি দশমিনা বাজারে জোমাদ্দার বাড়ীর ফার্মেসিতে বসা, তখন সাত্তার খান সাহেব এসে বসলেন, আমার নাম পরিচয় জিজ্ঞেস করলেন। আমি পরিচয় দিতেই তিনি আমার পিতৃকূল —মাতৃকূল চিনতে পারলেন।সে সময় কে যেন এক বোতল কোমল পানি দিলেন,তিনি তখন বললেন বিদেশে ফর্মূলা বিদেশি কোম্পানি আমাদের পানি বোতলজাত করে খাওয়াচ্ছে অথচ আমাদের দেশে ডাবের পানি সরকার বোতলজাত করে বাজারজাত করতে পারে। তার সেদিনের কথা আজও আমার কাছে স্মৃতি হয়ে আছে।তিনি আরো বলেন, ভূমিহীন মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন এবং বলেন,দশমিনা উপজেলার বিভিন্ন চরে এমনকি গলাচিপা উপজেলায় চরবাংলা,চরবিশ্বাস এলাকায় হাজার ভূমিহীন পরিবার সুন্দরভাবে জীবন—যাপন করছে। খাস জমিতে অবস্থানরত ভূমিহীন পরিবার এখনো বৈধ কাগজপত্র করতে পারেনি।আমরা ও আমাদের সরকার জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে তাদের বৈধ কাগজপত্র করে দেওয়া ঘোষণা দেন।প্রধান অতিথি আরো বলেন বর্তমান সরকারের আমলে দশমিনা উপজেলা কেউ আর ভূমিহীন থাকবে না।কিন্তু কৃষক— কিষাণী থাকবে।
বিশেষ অতিথি দশমিনা উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ স্মৃতিচারন করে বলেন গণমানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে সাত্তার চাচার সাথে জাতীয় পার্টির গুন্ডা বাহিনী কর্তৃক লাঞ্ছিত হয়েছি।সাত্তার চাচার ন্যায়ের পথে লড়াইয়ের যে শিক্ষা দিয়ে গেছেন তা আজ ও আমাদের চলার পথে কাজে লাগছে।
দশমিনা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, কমরেড আবদুস সাত্তার খান এর সুযোগ্য কন্যা ডাঃ সামসুন্নাহার খান ডলি বলেন,আমার বাবার আদর্শ নিয়ে আজো বেঁচে আছি বিধায় আপনারা পর পর তিনবার ভোট আমাকে নির্বাচিত করেছেন। কিন্তু আপনাদের আশা—আকাক্সক্ষা আজও পূরন করতে পারিনি। আমার চলার ভূল—ত্রুটি হলে আপনারা চোখে আঙ্গুল দিয়ে তা আপনারা ধরিয়ে দিবেন।যাতে আমি সাঠিক পথে চলতে পারি।
কৃষক নেতা জায়েদ ইকবাল খান কমরেড আবদুস সাত্তার খান এর সংগ্রামী জীবন উপস্থাপন করেন।
দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ লিটন স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমি যখন ছাত্র নেতা ছিলাম তখন আমার ফুপা কমরেড আবদুস সাত্তার খান এর বরিশাল থেকে পায়ে হেটে লং মার্চ করে ৬ দিন পর ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছি এবং ৭ দফা দাবিসহ স্মারকলিপি পেশ করা হয়।