নিজস্ব প্রতিবেদক♦♦
রাজধানীর বাড্ডা এলাকা হতে ‘পরকীয়া প্রেমে বাঁধা দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যায় দায়ে স্বামী সহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেন র্যাব-১১।
আদমজীনগর নারায়ণগঞ্জ র্যাব-১১ একটি সক্রিয় টিম (৪ জুন) রবিবার দিন ব্যাপী অভিযান পরিচালনা করে প্রজেক্ট মেরুল বাড্ডা এলাকা হতে হত্যা মামলার মূলহোতা ১। মোঃ কামরুল মৃধা @ কামরুজ্জামান (৪২), পিতা- মৃত বাদশা মৃধা, সাং-সোনাখালী এবং তার সহযোগী এজাহারনামীয় হত্যাকারী আসামী ২। বেবী আক্তার (৫২), স্বামী- মোঃ কালু মোল্লা, ৩। মোঃ কালু মোল্লা (৫৪), পিতা- মৃত রফিজ উদ্দিন মোল্লা, উভয় সাং- সাপলেজা, ৪। হনুফা বেগম (৪৫), স্বামী-আবু মিয়া, সাং- টিয়ারখালী, ৫। সজীব মোল্লা (২৩), পিতা- মোঃ কালু মোল্লা, সাং-সাপলেজা, সর্ব থানা- মঠবাড়িয়া, জেলা- পিরোজপুর’দেরকে গ্রেফতার করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাদী হেনোয়ারা বেগম এর মেয়ে ভিকটিম খাদিজা আক্তার @ তানিয়া এর সাথে আসামী কামরুল মৃধার ২০১০ সালে বিবাহ হয়। তাদের সংসারে ০৩ জন কন্যা সন্তান রয়েছে। কামরুল মৃধা খুলনায় বালু ও সিমেন্টের ব্যবসা করে। আসামী কামরুলের শ্যালক সৌদি আরব থাকার সুবাদে তার স্ত্রী মুন্নি আক্তারের সাথে কামরুল মৃধার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরকীয়ার একপর্যায়ে কামরুল তার শ্যালক এর বউ সহ আপত্তিকর অবস্থায় স্ত্রী খাদিজা আক্তারের কাছে হাতে-নাতে ধরা খায়। এতে খাদিজা আক্তার প্রতিবা দ জানালে আসামী কামরুল মৃধা ভিকটিমকে হত্যার হুমকিসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১০/০৫/২০২৩ খ্রিস্টাব্দ রাতে ভিকটিম খাদিজা স্বামী কামরুল ইসলাম সহ তার বসতবাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি শয়ন কক্ষে ঘুমাতে গেলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামী কামরুল তার পরকীয়া প্রেমিকা মুন্নি আক্তার এর প্ররোচনায় তার বোন বেবী আক্তার, ভগ্নিপতি কালু মোল্লা, সজীবসহ অন্যান্য সহযোগী আসামীদের সহায়তায় স্ত্রী খাদিজা আক্তারকে মারধর করে, গলা চেপে এবং বালিশ দ্বারা শ্বাসরুব্ধ করে হত্যা করে। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য কামরুল তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ভিকটিম বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে বলে সবাইকে জানায় এবং ভিকটিমকে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ভিকটিমের পিতা মোঃ ফিরোজ মিয়া হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পায় তার মেয়ে (ভিকটিম) খাদিজার লাশ হাসপাতালের বারান্দায় ফেলে রেখে হত্যাকারী কামরুলসহ অন্যান্য সহযোগী আসামীরা সকলে পালিয়ে গেছে।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-১৭, তারিখ ২০ মে ২০২৩। হত্যাকান্ডের পর হতে এজাহারনামীয় আসামীরা কৌশলে আত্মগোপন করে। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-১১’র একটি চৌকস গোয়েন্দা দল হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত পলাতক আসামীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য গোয়েন্দা অনুসন্ধান শুরু করে এবং হত্যাকান্ডের মূলহোতা মোঃ কামরুল মৃধা @ কামরুজ্জামান (৪২)সহ ০৫ জন এজাহারনামীয় আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা বর্ণিত হত্যাকান্ডের সাথে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।
এবিষয়ে র্যাব-১১’র এএসপি মোঃ রিজওয়ান সাঈদ জিকু দৈনিক সকালের কাগজের এক বার্তায় জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার সূত্রস্থ্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।