নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মা ইলিশ সংরক্ষণে জেলে ও মৎস্যজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত করতে নৌপথে মৎস্য সংরক্ষণ অভিযানে অংশ নিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
গত বুধবার (১৪ অক্টোবর) নৌপুলিশের ব্যবস্থাপনায় নারায়ণগঞ্জের মেঘনা ব্রীজ ঘাট থেকে নৌপথে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ঘাট পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন মন্ত্রী। এসময় শত শত জেলে ও মৎস্যজীবীরা নদীতে নৌকা ও ট্রলারে করে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের গুরুত্বসম্বলিত শ্লোগান দিয়ে ও গান গেয়ে অভিযানের ব্যাতিক্রমধর্মী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন।
পরে মোহনপুরে স্থানীয় জেলে ও মৎস্যজীবী সম্প্রদায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন মন্ত্রী।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ, অতিরিক্ত সচিব শাহ মোঃ ইমদাদুল হক, শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, সুবোল বোস মনি ও মোঃ তৌফিকুল আরিফ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, নৌপুলিশের ডিআইজি মোঃ আতিকুল ইসলাম, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান, পুলিশ সুপার মোঃ মাহমুদুর রহমান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী, মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ কুদ্দুস, মৎস্যজীবীদের প্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও নৌপুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত থাকেন।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, “মৎস্য খাতে একটা বিপ্লবের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সকল মানুষের মাছের চাহিদা আমরা পূরণ করতে পেরেছি। ইলিশের উৎপাদন এবার অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে ব্যাপক আকারে হয়েছে। এক্ষেত্রে ইলিশ ধরার সাথে সংশ্লিষ্ট মৎস্যজীবী, জেলেসহ যারা মাছ বিপণন করেন সবার ভূমিকা রয়েছে। মা ইলিশ সংরক্ষণে শত শত জেলেরা অভিযানে যোগ দিয়ে মা ইলিশ রক্ষায় শ্লোগান দিচ্ছেন। অফুরন্ত সম্ভাবনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে এটাই হচ্ছে দৃষ্টান্ত। মা ইলিশ সংরক্ষণের সময় মৎস্যজীবীরা যাতে কষ্টে না থাকেন, সেজন্য এবার অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় বেশি ভিজিএফ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামী বছর আরো বেশি বরাদ্দ করা হবে।”
মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের উদ্দেশে মন্ত্রী আরো বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণে আমাদের সহায়তা করুন। ইলিশের উৎপাদন এমন জায়গায় নিয়ে যাবো যাতে প্রতিটি ঘরে, গ্রামে সবাই ইলিশ খাবার পরেও উপচে পড়বে। সেই ইলিশ আমরা রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে শেখ হাসিনার উন্নয়নের অগ্রযাত্রা আরো ত্বরান্বিত করবো। আশা করি আমাদের এ অভিযান সার্থক করতে যে যেখানে আছেন সহায়তা করবেন।”
মন্ত্রী আরো রোগ করেন, “আমরা এবার কঠোর। আমাদের এ অভিযানকে নষ্ট করার জন্য কেউ যদি গভীর রাতেও মা মাছ ধরতে আসে তাদের আটকানোর জন্য নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে। এমনকি আকাশপথে নজরদারির জন্য বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার থাকবে। আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবো কেউ মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ধুলিসাৎ করার জন্য ভূমিকা রাখছেন কীনা। যারা মা ইলিশ সংরক্ষণে সহায়তা করবেন না তাদের ঠিকানা হবে জেলখানা। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের সাথে সাথে সাজা দেয়া হবে। কাজেই কোন দুর্বৃত্তের প্ররোচনায় মৎস্যজীবী ভাইয়েরা মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে বিঘ্ন ঘটাবেন না বা নিয়মের বাইরে কোথাও আসবেন না।”পরে মন্ত্রী বেলুন উড়িয়ে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২০ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।